নতুন বাইক কেনার পরে যে কয়েকটি সমস্যা দেখা দিবেই
November 20, 2022

Views
Shares
নতুন বাইক কেনা অনেকের কাছে একটি স্বপ্ন পূরণের মতো ব্যাপার। বাইক এখন একটি প্রয়োজনীয় যোগাযোগের মাধ্যম। নতুন বাইক কিনে প্রায় সবাই এর যত্ন নেন। বিশেষ করে বাইকের বাহ্যিক দিকের যত্ন নেন। অনেক বাইকার নতুন বাইকে কমফোর্ট ফিল করেন না। অনেকেই নতুন বাইকের সাথে ‘ইউজ-টু’ হবার আগেই বাইকের ভালো মন্দ, বাইকের সমস্যা যাচাই করে ফেলেন!
তাই নতুন বাইক কেনার পর প্রথমে এর ম্যানুয়াল বুক পুরোটা ভালোভাবে পড়ে ফেলুন। এখানে আপনি বাইকের সব নির্দেশনা সম্পর্কে ধারণা পাবেন। কখন কি করতে হবে, কতোটুকু করতে হবে, কি করা যাবে না, এরকম দরকারি তথ্য পাবেন। বিশেষ করে নতুন বাইকের ব্রেক ইন পিরিয়ড এর মাইলেজ, পিরিয়ডিক মেইন্টেনেন্স কি করতে হবে, ইঞ্জিন অয়েল গ্রেড কেমন হবে, টায়ার প্রেশার কত রাখতে হবে, এরকম দরকারি তথ্য পাবেন। এসব তথ্য শুধু মাত্র আপনার নতুন বাইকের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
নতুন মোটরসাইকেল কেনার পর কিছু কিছু সমস্যা দেখা যায়। আপনার মনে হতে পারে নতুন বাইক কিনলাম, এতো তাড়াতাড়ি সমস্যা হবে কেন। এসব সমস্যা নিয়ে খুব বেশি চিন্তিত হবার কিছু নেই। নতুন বাইকের সাথে পুরোপুরি এডজাস্ট হলেই দেখবেন সব আপনার মন মতোই হচ্ছে। নতুন বাইকের ব্রেক ইন পিরিয়ড পার করুন, বাইকের সাথে ইউজ-টু হোন, দেখবেন এসব সমস্যা আর সমস্যা মনে হবে না।
আরো পড়ুন
নতুন বাইক কেনার পর সমস্যা হলে আমরা সবাই কম বেশি দুশ্চিন্তায় পরি। আমরা অনেকেই জানি না যে, নতুন বাইকে কিছু কিছু বাইকের সমস্যা এমনিতেই তৈরি হয়, যা সময়ের সাথে সাথে ঠিক হয়ে যায়। নতুন একটা বাইক থেকে ভালো পারফরম্যান্স পাওয়ার জন্য অন্ততঃ একটা নির্দিষ্ট মাইলেজ চালান, কিছু দিন সময় দিন। এতে আপনিও বাইকের সাথে এডজাস্ট হয়ে যাবেন, বাইকের ইঞ্জিনও এডজাস্ট হয়ে যাবে। বাইকের ম্যানুয়াল বুক পড়ে, এর ব্রেক ইন পয়েন্ট সম্পর্কে ধারণা নিন, এবং অন্যান্য এডভাইস গুলো মেনে চলুন।
যেমন, নতুন বাইক চালালে স্বাভাবিক ভাবেই ইঞ্জিন গরম হবে, জ্বালানি আপনার প্রত্যাশার চেয়ে বেশি খরচ হতে পারে, গিয়ার বা ব্রেকে অস্বস্তি হতে পারে, বাইক স্টার্টে সমস্যায় পড়তে পারেন, ইত্যাদি। এগুলো দুশ্চিন্তা করার মতো সমস্যা নয়, এসব বাইকের সমস্যা দ্রুত ঠিক হয়ে যায়। তবে যদি মনে করেন ইঞ্জিন অস্বাভাবিক গরম হচ্ছে, জ্বালানি বেশি খরচ হচ্ছে তাহলে সার্ভিসিং সেন্টারে নিয়ে যাবেন।
আরো পড়ুন
নতুন বাইক কেনার পর দেখা দিতে পারে যে কয়েকটি সমস্যা
প্রত্যাশার চেয়ে বেশি জ্বালানি খরচ –
প্রায় সব নতুন বাইক চালানোর শুরুর দিকে কিছুটা বেশি জ্বালানি খরচ হয়। এটি অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়। নতুন বাইকের ব্রেক ইন পিরিয়ড অর্থাৎ বাইক ভেদে ১৫০০ কিমি থেকে ২০০০ কিমি পথ পার হবার পর সাধারণত জ্বালানি ব্যায় স্বাভাবিক হয়ে যায়। যাই হোক, নতুন বাইকে তেমন বেশি জ্বালানি পোড়ে না, তবে খেয়াল রাখবেন খুব বেশি জ্বালানি পুড়ছে কিনা, হলে সার্ভিসিং সেন্টারের সাহায্য নিন।
ইঞ্জিন ওভারহিটিং হওয়া –
নতুন যে কোনো যন্ত্রাংশ প্রথম প্রথম ব্যবহারে বেশ গরম হয়, তেমনি নতুন বাইকের ইঞ্জিনও প্রথম প্রথম বেশ গরম হয়। এতে চিন্তিত হবার কিছু নেই। এর কারণ হলো, বাইক নতুন অবস্থায় কিছুটা কম আরপিএম এ চালানো হয়, তাই ইঞ্জিন কিছুটা গরম হয়ে যায়। এর এটা স্বাভাবিক। তবে ওভারহিটিং মনে হলে সার্ভিং সেন্টারে দেখবেন।
প্রত্যাশার চেয়ে কম মাইলেজ –
কিছু কিছু নতুন বাইকে প্রথম দিকে প্রত্যাশার চেয়ে কিছুটা কম মাইলেজ পেতে পারেন। এতে চিন্তার কিছু নেই, ৩০০-৫০০ কিমি পথ অতিক্রম করার পর, ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করার পর দেখবেন প্রত্যাশা মতো মাইলেজ পাচ্ছেন। অন্ততঃ ব্রেক ইন পয়েন্ট পার হবার পর মাইলেজ অবশ্যই ভালো পাবেন। তা না হলে সার্ভিসিং সেন্টারে দেখান, কোন সমস্যার জন্য এরকম হচ্ছে, বের করুন।
সহজে বাইক স্টার্ট নেয় না –
নতুন বাইক সহজে স্টার্ট না নেবার বেশ কিছু কারণ থাকতে পারে। সাধারণত কিছু কিছু ব্যাপারে ঠিক মতো খেয়াল না করলে এরকম সমস্যার সৃষ্টি হয়। যেমন, ইঞ্জিন কিল সুইচ পজিশন ঠিক না থাকা, নিউট্রাল লাইট অন করা কিনা, জ্বালানি সুইচ অন করা কিনা, প্লাগ ক্যাপ ঠিকমতো লাগানো আছে কি না, ইত্যাদি।
ইঞ্জিন হল্টিং
নতুন বাইক চালানোর পর, একটি সার্টেন পিরিয়ড যদি না চালানো হয়, তাহলে ইঞ্জিন সহজে চালু হতে চায় না। এই অবস্থাকে বলে ইঞ্জিন হল্টিং। বেশ কিছু কারণে এমন হয়। তবে প্রধান কারণ হলো, ইঞ্জিনে যথেষ্ট পরিমান জ্বালানি পায় না, বাইক স্টার্ট করার সময়। এ ক্ষেত্রে চোক করে স্টার্ট করবেন। এর পরেও যদি বাইক স্টার্ট না হয়, তাহলে বাইকের ফুয়েল লাইন চেক করুন। এরপর স্পার্ক প্লাগ এর অবস্থা কেমন চেক করুন।
ক্লাচ সেটিংসে সমস্যা –
বেশিরভাগ নতুন বাইকের ক্ষেত্রে দেখা যায় ক্লাচ হার্ড থাকে। এটিও স্বাভাবিক। আপনার কম্ফোর্টেবল অনুযায়ী ক্লাচ সেটিংস এডজাস্ট করে নেবেন। ক্লাচ সেটিংস অটোমেটেড থাকলে, রেগুলার কিছু দিন বাইক চালালে ক্লাচ অনেকটাই সফট হয়ে আপনার কন্ট্রোলে চলে আসবে।
গিয়ার প্রব্লেম
নতুন বাইকে গিয়ার শিফটিং করতে কিছুটা প্রব্লেম হতে পারে। আপনাকে কিছু দিন প্রাকটিস করে এই সমস্যা সমাধান করতে হবে। এই সমস্যা মূলত সহজে গিয়ার চেঞ্জ করা যায় না, গিয়ার শক্ত হয়ে থাকে ইত্যাদি। ক্লাচ এডজাস্ট করে আপনি প্রথম দিকে প্রাকটিস করবেন, কিছু দিন পর দেখবেন গিয়ার শিফটিং সহজ হয়ে গেছে।
বাইক রানিং অবস্থায় স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়া –
নতুন বাইকে এরকম সমস্যা সাধারণত হয় না। নতুন বাইকে নিম্ন মানের জ্বালানি ব্যবহার, জ্বালানিতে ময়লা থাকলে বাইক রানিং অবস্থায় হঠাৎ স্টার্ট বন্ধ হয়ে যেতে পারে। কারণ ইঞ্জিন ঠিক মতো জ্বালানি পায় না। তাছাড়াও, কার্বুরেটর ঠিক ভাবে করা কিনা দেখুন, এয়ারফিল্টার পরিস্কার কিনা দেখুন, এবং সঠিকভাবে আইডল আরপিএম সেট করা আছে কিনা দেখুন।
ব্যাটারি প্রব্লেম –
নতুন বাইকের ব্যাটারি ভালোই থাকে। নতুন বাইক কেনার পর, না চালিয়ে ফেলে রাখলে ব্যাটারি ফুল চার্জ হওয়ার সুযোগ পায় না, তাই বাইক মিনিমাম কিছু কিমি চালাবেন।
আরো পড়ুন
তথ্য সুত্র bikesguide.bikroy.com