ইঞ্জিন চালানোর জন্য যেমন তেলের প্রয়োজন হয়, তেমনি ইঞ্জিনের ভেতরের ছোট ছোট পার্টসকে সচল রাখতে ব্যবহার করা হয় ইঞ্জিন ওয়েল। তবে এই ইঞ্জিন ওয়েল আমাদের দেশে মবিল নামেই বেশি পরিচিত। কেউ কেউ আবার এটিকে ইঞ্জিন লুব্রিকেন্টসও বলে থাকে। মূলত মবিল একটি ব্র্যান্ডের নাম। এই ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন ওয়েল দেশে বহুল প্রচলিত হওয়ার কারণেই ইঞ্জিন ওয়েল মবিল নামে কিছুটা পরিচিত।
জয়েন করুন ৬০ হাজারের বেশি বাইকারের গ্রুপ কিউরিয়াস বাইকার
####ইঞ্জিন ওয়েল কী
ইঞ্জিন ওয়েল মূলত এক ধরনের তরল লুব্রিকেন্ট, যা ইঞ্জিনের ভেতরের বিভিন্ন ছোট ছোট পার্টসকে চলতে সহায়তা করে। ইঞ্জিন যখন চলে, তখন এর ভেতরে থাকা বিভিন্ন যন্ত্রাংশের মধ্যে অতিমাত্রায় ঘর্ষণ হয়। ঘর্ষণের ফলে ইঞ্জিনের পার্টসগুলো ক্ষয় হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এই ক্ষয় রোধের জন্যই ব্যবহার করা হয় ইঞ্জিন ওয়েল। পাশাপাশি ইঞ্জিনকে বিভিন্ন অক্সিডেশন এবং ক্ষতিকর পার্টিকেল বা রাসায়নিক কণার হাত থেকে রক্ষা করে। বাইকের ইঞ্জিনকে ঠান্ডা রাখে। ইঞ্জিনের কর্মক্ষমতাও অনেকটা নির্ভর করে ইঞ্জিন ওয়েলের ওপর। সে জন্য একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর ইঞ্জিন ওয়েল পরিবর্তন করতে হয়।
আরো পড়তে পারেন
####(১) Motul (মটুল)
মটুল ব্র্যান্ডের লুব্রিকেন্ট অয়েল, হাই-পারফর্মিং মোটরসাইকেল ইঞ্জিন অয়েল উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। অফরোড এবং ট্র্যাক, উভয় রোডের জন্য এই ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন অয়েল খুবই কার্যকর। এই ব্র্যান্ডের অয়েল উচ্চ তাপমাত্রা এবং চাপ সহ্য করার জন্য বিশেষ ভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়েছে, যা চমৎকার লুব্রিকেশন এবং ইঞ্জিন সুরক্ষা প্রদান করে। ইঞ্জিন পাওয়ার এবং ক্যাপাসিটি স্বাভাবিক রাখার জন্য এই ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন অয়েল অতুলনীয়।
এই ব্র্যান্ডের সদরদপ্তর ফ্রান্সে অবস্থিত। এটি প্রায় সকল প্রকার যানবাহনের ইঞ্জিন অয়েল সহ অন্যান্য লুব্রিকেন্ট প্রস্তুত করে থাকে। এই ব্র্যান্ডের পণ্যের গুণগত মান ভালো হওয়ায় বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে এটির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
ভালো দিক – মটুল মূলত স্পোর্টস এবং হাই-কনফিগারেশন বাইকের জন্য রিকমেন্ড করা হয় মন্দ দিক – কমিউটার সেগমেন্টের মোটরসাইকেলের জন্য এটি পারফেক্ট নাও হতে পারে
####২) Yamalube ( ইয়ামালুব )
ইয়ামাহা গবেষণা করে এবং দীর্ঘ সময়ের জন্য ইঞ্জিন অয়েল ফর্মুলা তৈরি করেছে, যাতে এই ইঞ্জিন অয়েল যেকোনো ধরনের রাইডিং পরিস্থিতিতে ভালো পারফর্ম করতে পারে এবং একজন রাইডারের জন্য সেরা রাইডিং অভিজ্ঞতা প্রদান করতে পারে।
এর নাম ইয়ামালুব বলে এটা ভাবার কারন নেই যে এটা শুধু আপনি ইয়ামাহা বাইকেই ব্যাবহার করবেন, আপনি যে কোনো বাইকে এই ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
ভালো দিক – এ সি যআই ছাড়া কেউ নিয়ে আসে না বিধায় এটার নকল হবার সম্ভাবনা নেই।
মন্দ দিক – সব গুলা মডেলের জন্য এটা পাওয়া যায় না
আরো পড়তে পারেন
####৩) MOBIL (মবিল)
মবিল ব্র্যান্ড সিন্থেটিক ইঞ্জিন অয়েলের জন্য বিখ্যাত। এটি সারা বিশ্বে সুপরিচিত ও জনপ্রিয় লুব্রিকেন্ট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। এই ব্র্যান্ডের অয়েল, প্রচলিত তেলের তুলনায় উন্নত সুরক্ষা এবং কার্যকারিতা প্রদান করে। এই ব্র্যান্ড স্পেসিফিক বাইক মডেলের জন্য স্পেসিফিক ফর্মুলেটেড লুব্রিকেন্ট উৎপাদন করে থাকে, তাই ইঞ্জিনের পরিচ্ছন্নতা এবং লং লাস্টিং পারফরম্যান্স বজায় থাকে। এটি একটি আমেরিকান ইঞ্জিন অয়েল কোম্পানি। এটি বাংলাদেশে এতটাই জনপ্রিয় যে, অনেক সাধারন মানুষ ইঞ্জিন অয়েলকে মবিল বলে সম্মধন করেন।
ভালো দিক – এভেইলেবল এবং সাশ্রয়ী মূল্যে কোয়ালিটি প্রোডাক্ট মন্দ দিক – গ্রিন হাউস গ্যাস ইমিশন কিছুটা বেশি
####(৪) Shell (শেল)
শেল ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন অয়েল উন্নত ফর্মুলেশনের জন্য পরিচিত, যা ঘর্ষণ কমাতে এবং ইঞ্জিনের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এই ব্র্যান্ড বিভিন্ন পরিসরের ইঞ্জিন অয়েল সরবরাহ করে থাকে, যা রাইডার এবং বাইকের চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন করা। এই ব্র্যান্ড পণ্যের গুণগত মানের কারনে বিশ্বব্যাপি পরিচিত। এটি বেশ সাশ্রয়ী দামে প্রায় সকল ধরনের যানবাহনের জন্য ইঞ্জিন অয়েল ও লুব্রিকেন্ট প্রস্তুত করে থাকে। বাংলাদেশে, Ranks Petroleum Ltd হল শেল ইঞ্জিন অয়েলের পরিবেশক।
ভালো দিক – সাশ্রয়ী মূল্য এবং অনেক অপশন মন্দ দিক – কার্বন ইমিশন কিছুটা বেশি
####(৫) Liqui Moly (লিকুই মলি)
লিকুই মলি একটি জার্মান বেসড লুব্রিকেন্ট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। স্ট্যান্ডার্ড কোয়ালিটি, এবং রিলায়েবিলিটির কারণে বাংলাদেশে এই ব্র্যান্ডের ইঞ্জিন অয়েলের চাহিদা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই ব্র্যান্ডের অয়েলগুলো অফ-রোড এবং রেসিং টাইপ বাইকের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য স্পেশাল ভাবে ইঞ্জিনিয়ারিং করা হয়েছে।
ভালো দিক – ইঞ্জিন প্রটেকশন এবং পারফরম্যান্স মন্দ দিক – সব ধরণের বাইক ইঞ্জিনের জন্য পারফেক্ট নয়
কিভাবে ইঞ্জিন অয়েলের গ্রেড নির্বাচন করবো? কিভাবে ব্র্যান্ড নির্বাচন করবো? মিনারেল নাকি সেমি-সিনথেটিক নাকি ফুল্লি-সিনথেটিক ব্যবহার করবো? কত কিলোমিটার পর পর ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করবো? এবং সেই সাথে বেটার পারফরেন্স পাওয়ার জন্য বাড়তি আর কি কি করা যেতে পারে? এইসব বিষয়ে জানতে ভিসিট করতে পারেন এই লিংকে