ACI, YAMAHA 6 year in Bangladesh

নভেম্বর 10, 2022

ACI, YAMAHA 6 year in Bangladesh
মোটর বাইক নিয়ে কথা বলতে গেলেই জাপানিজ ব্রান্ডের মোটরসাইকেলের কথা সবার আগে মনে পড়ে। আর জাপানিজ মোটরসাইকেল ব্রান্ডগুলোর মধ্যে ইয়ামাহা মোটর পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর মাঝে একটি।

মোটর বাইক নিয়ে কথা বলতে গেলেই জাপানিজ ব্রান্ডের মোটরসাইকেলের কথা সবার আগে মনে পড়ে। আর জাপানিজ মোটরসাইকেল ব্রান্ডগুলোর মধ্যে ইয়ামাহা মোটর পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় মোটরসাইকেল প্রস্তুতকারী কোম্পানিগুলোর মাঝে একটি।

জাপানের Yoota, Shuzuoka শহরে ইয়ামাহা মোটর কোম্পানি প্রথম যাত্রা শুরু করে।

মোটরসাইকেল উৎপাদন ছাড়াও ইয়ামাহা মোটর কোম্পানি গলফকার, মেরিন ইঞ্জিন, অটোমোবাইল ইঞ্জিন এবং মিউজিক্যাল ইনস্ট্রুুুমেন্ট প্রস্ততকারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়।

এসিআই মোটরস বাংলাদেশে ইয়ামাহা মোটরসাইকেলের একমাত্র অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর ও টেকনিক্যাল কোলাবোরেটেড পার্টনার হিসেবে ২০১৬ সাল থেকে নতুনভাবে তার যাত্রা শুরু করে।

যদিও স্বনামধন্য এসিআই লিমিটেডের একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে এসিআই মোটরস বাংলাদেশে তার যাত্রা শুরু করে ২০০৭ সালে তবে ইয়ামাহা মোটর এর সাথে তারা যুক্ত হয় ২০১৬ সালে।

শুরু থেকেই এসিআই মোটরস আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর পণ্যের বিপণনের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে।

২০১৬ সালে গ্লোবাল ইয়ামাহা মোটর এসিআই মোটরস এর হাত ধরে বাংলাদেশের বাজারে নতুনভাবে যাত্রা শুরু করে।

লেটেস্ট টেকনোলজি এবং ফিচারসম্বলিত মোটরবাইক বিক্রি করা ও আফটার সেলস সার্ভিস দিয়ে বাংলাদেশের বাইকারদের কাছে খুব দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তারা৷

সম্প্রতি ইয়ামাহা এসিআই মোটরস এর সাথে সফলতার ৬ বছর পার করেছে এবং এককথায় এই জার্নিটা ছিলো ভীষণ এক্সাইটিং।

অফিসিয়াল কার্যক্রম ২০১৬ তে শুরু হলেও এসিআই মোটরস ২০১৭ সালে প্রথম দেশের বাজারে নিয়ে আসে FI টেকনোলজির মোটরসাইকেল।

ফুয়েল ইঞ্জেশন প্রযুক্তি হচ্ছে সেন্সর নির্ভর প্রযুক্তি এবং এই প্রযুক্তির বাইকগুলোতে ৮টি সেন্সর ও বেশকিছু একচুয়েটর রয়েছে। ফুয়েল ইঞ্জেশন ইঞ্জিন হাওয়ায় এটি জ্বালানি খরচ কম এবং কার্বন মনো-অক্সাইড নিঃসরণ এর পরিমাণ অনেক কম, যেটা পরিবেশবান্ধব।

যেই মডেলগুলো নিয়ে তারা দেশের বাজার কাপিয়েছে সেই মডেলগুলো ছিল, ট্যুরিং সেগমেন্টের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় Fazer V2 এবং FZS V2, স্পোর্টস সেগমেন্টে সবচেয়ে জনপ্রিয় R15 V2 এবং কমিউটার ও লাইফস্টাইল সেগমেন্টে Saluto

ইয়ামাহার বেশিরভাগ বাইক যেহেতু ফুয়েল ইঞ্জেশন প্রযুক্তির, সেহেতু এর সার্ভিসে ডায়াগনস্টিক টুলস (YDT) ব্যবহার করতে হয়। ডায়াগস্টিক টুলস (YDT) হচ্ছে এমন একটি টুলস যা দিয়ে কম্পিউটারের সাহায্যে বাইকের যেকোনো সমস্যা নির্ণয় করা যায়।

২০১৮ সাল ছিলো এসিআই মোটরস এর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বছর। ব্যবসা সম্প্রসারণের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে তারা অসামান্য ভুমিকা রেখেছে ২০১৮ সালে। শুধু তাই নয়, দেশব্যাপি প্রচুর অথোরাইজড সেলস ও সার্ভিস পয়েন্ট তারা স্থাপন করেছে যাতে করে সারাদেশের মানুষ ইয়ামাহা মোটরসাইকেল খুব সহজে এভেইল করতে পারে। ক্রেতাদেরকে দেয়া হয়েছে নানান সুযোগ সুবিধা।

২০১৮ সালে এসিআই মোটরস এবং ইয়ামাহা মোটর কোম্পানির মধ্যে টেকনিক্যাল কোলাবোরেশন সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির মাধ্যমে এসিআই মোটরস পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশে ইয়ামাহার বিভিন্ন মডেলের মোটরসাইকেল সংযোজন ও উৎপাদন করার অনুমতি পায়।

যার ধারাবাহিকতায় ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে গাজীপুরে একটি আন্তর্জাতিক মানের কারখানা প্রতিষ্ঠা করে। কারখানাটি সম্পূর্ণভাবে জাপানিজ তত্ত্বাবধায়নে জাপানিজ প্রযুক্তি দিয়ে মোটরসাইকেল সংযোজন করা হচ্ছে।

২০১৮ সালে সামাজিক কর্মকাণ্ডের অংশ হিসেবে তারা গড়ে তুলেছে ইয়ামাহা রাইডিং একাডেমি । যেখানে জাপানের প্রশিক্ষক দ্বারা প্রশিক্ষিত ট্রেইনাররা আগ্রহীদের বিনামূল্যে বাইক রাইডিং প্রশিক্ষণ দেয়। এই রকম অসাধারণ উদ্যোগে বাংলাদেশের হাজার হাজার বাইকার মোটরসাইকেল চালানোর সঠিক দিক নির্দেশনা পেয়েছে।

২০১৯ সালে বাইকারদের জন্য ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব গঠন করে এসিয়াই মোটরস। এই ক্লাবটি বাংলাদেশের অন্যতম বাইকিং ক্লাব। সারা দেশে বাইকিং এক্টিভিটির পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করে থাকে ইয়ামাহা রাইডারস ক্লাব বা YRC.

তাদের উল্লেখযোগ্য কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে, বিজয়দিবসে পতাকা সমাহিত করা, ডেঙ্গু সচেতনতা কার্যক্রম, শীতার্তদের মাঝে তাঁবু ও কম্বল বিতরণ, করোনাকালে ২০০০ পরিবারের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, চিটাগং এর সীতাকুন্ডে অগ্নিকান্ডে ত্রান ও অষুধ বিতরন, সিলেটে বন্যার্তদের মাঝে ত্রান বিতরন ইত্যাদি।

২০১৯ সালে এসিআই মোটরস নিয়ে আসে অত্যাধুনিক (Antilock Braking System) প্রযুক্তির FZS V3 ও R15 V3 বাইক যা বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে আধুনিক ব্রেকিং প্রযুক্তি। এই ব্রেকিং প্রযুক্তি দুর্ঘটনার সম্ভাবনা অনেকাংশে হ্রাস পায়। অন্য যেকোনো ব্রেকিং প্রযুক্তির থেকে এটি ৩০ শতাংশ বেশি কার্যকরী। এই ধরনের প্রযুক্তি আগে শুধু গাড়িতে ব্যবহার হতো।

২০১৯ এর শেষে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় ‘কক্সবাজার রাইডিং ফিয়েস্তা’। এর আয়োজনে ছিল ইয়ামাহা রাইডার্স ক্লাব (YRC)। দেশের সব জেলা থেকে ৮০০ জনের বেশি বাইকার যোগ দেন দুই দিনের এই রাইডিং ফিয়েস্তায়।

২০২১-২২ সালেও এরকম প্রচুর এক্সাইটিং ইভেন্ট এবং সামাজিক কাজ ধারাবাহিক ভাবে করেছে এসিয়াই মোটরস যা প্রশংসার দাবীদার।

সর্বপরি ইয়ামাহা মোটরসাইকেল এবং এসিয়াই মোটরসের এই সাফল্যমণ্ডিত যাত্রা যেন অব্যাহত থাকে এই প্রত্যাশা ও শুভকামনা করেন বাংলাদেশের লাখো বাইকার।

[কিউরিয়াস বাইকার ডট কম]