তেওতা, বালিয়াটি, জমিদার-বাড়ি( Baliati Zamindar Bari ) – মানিকগঞ্জ

আগস্ট 03, 2020

তেওতা, বালিয়াটি, জমিদার-বাড়ি( Baliati Zamindar Bari ) – মানিকগঞ্জ

প্রায় ৩০০ বছরের অধিক পুরনো আপনার ঢাকা। যান্ত্রিক জীবন আপনার। আপনার সাপ্তাহিক ছুটিটাও একটি প্ল্যানের অভাবে অগোছালো ভাবে কাটে যায়। সময়ের অভাবে যারা আপনজনদের সাথে সুন্দর সময় কাটানো থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাদের জন্যই CuriousBiker এই আয়োজন। চলুন জেনে নেয়া যাক ঢাকার আশেপাশে ভ্রমণ স্থান সম্পর্কে। ঢাকার কাছে বেড়ানোর জায়গা গুলো থেকে দিনে গিয়ে দিনেই ফিরে আসা যায়।

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে মানিকগঞ্জ থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি গ্রামে। সাতটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা নিয়ে বালিয়াটি জমিদার বাড়ি গৌরবের সাক্ষী হয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। দৃষ্টিনন্দন এই জমিদার বাড়ির বিভিন্ন ভবন একেক জন উত্তরাধিকারীদের মাধ্যমে পৃথক পৃথক সময়ে নির্মিত হয়েছে। বালিয়াটি জমিদার বাড়িটি বর্তমানে বাংলাদেশ প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের মাধ্যমে সংরক্ষণ ও পরিচালনা করা হচ্ছে। আর জমিদার বাড়ির কেন্দ্রীয় ব্লকে রংমহল খ্যাত ভবনে যাদুঘর গড়ে তোলা হয়েছে। বালিয়াটি প্যালেস নামেও পরিচিত এই জমিদার বাড়ি।

ঊনবিংশ শতকে নির্মিত ঐতিহ্যবাহী প্রাসাদের চত্বরটি প্রায় ১৬ হাজার ৫৫৪ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে অবস্থিত। জমিদার বাড়ির প্রবেশ ফটকের দুই পাশে স্থাপিত রয়েছে দুটি সিংহের মূর্তি। সমস্ত জমিদার চত্বর উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এবং জমিদার বাড়ির মূল ফটক দিয়ে প্রবেশ করলেই সুপ্রশস্ত সবুজের ঢাকা আঙ্গিনা চোখে পড়ে। আঙ্গিনায় গড়ে তোলা হয়েছে সুন্দর ফুলের বাগান। আঙ্গিনার পরেই পাশাপাশি চারটি বহুতল ভবন রয়েছে। এই ভবনগুলোর পেছনেই আছে চারটি পুকুর ও জমিদার অন্দরমহল। প্রাসাদের কক্ষ সংখ্যা ২০০ টি এবং প্রতিটি কক্ষেই সুনিপুণ কারুকাজ লক্ষ্য করা যায়। চুন-সুরকি, লোহার পাত আর কাদামাটিতে নির্মিত ভবনগুলোর প্রতিটি দেয়াল প্রায় ২০ ইঞ্চি পুরু। অনন্য নির্মাণ কৌশল আর কারুকার্য পূর্ণ বালিয়াটি জমিদার বাড়ী তৎকালীন জমিদারদের অভিজাত্যকেই ফুটিয়ে তোলে।

বালিয়াটি জমিদার বাড়ি পরিদর্শনের সময়

গ্রীষ্মকালে (এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর) বালিয়াটি জমিদার বাড়ি সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এবং শীতকালে (অক্টোবর থেকে মার্চ) বালিয়াটি জমিদার বাড়ি সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। শুক্রবার বাদে বছরের অন্যান্য দিন দুপুর ১টা থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত সাময়িক বিরতিতে জমিদার বাড়ি বন্ধ থাকে। প্রতি শুক্রবার দুপুর ১২ টা ৩০ মিনিট থেকে ২ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত নামাযের জন্য জমিদার বাড়ি সাময়িক বন্ধ থাকে।

প্রতি রবিবার পূর্ণ দিবস ও সোমবার অর্ধ দিবস ছাড়াও সকল সরকারি ছুটির দিন বালিয়াটি জমিদার বাড়ি দর্শনার্থীদের জন্য বন্ধ থাকে।

বালিয়াটি জমিদার বাড়িতে প্রবেশে জনপ্রতি ২০ টাকা প্রবেশ মূল্য প্রদান করতে হয়। বিদেশী নাগরিকদের জন্য প্রবেশ মূল্য ২০০ টাকা।

কিভাবে যাবেন

ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে সরাসরি সোজা রাস্তায় সাটুরিয়া হয়ে মানিকগঞ্জ । সাটুরিয়া পার হয়ে সাটুরিয়ার জিরো পয়েন্টে থেকে জমিদার বাড়ির দূরত্ব ১ কিলোমিটার।

ঢাকার উত্তরা থেকে যেতে চাইলে আব্দুল্লাপুর হয়ে নবীনগর এর পর স্মৃতিসৌধের সামনে থেকে সোজা সাটুরিয়ার। সাটুরিয়া থেকে উপরে উল্লেখিত উপায়ে যেতে পারবেন। এছাড়া দেশের অন্য কোন জায়গা থেকে আসতে চাইলে প্রথমে মানিকগঞ্জ এসে স্থানীয় যে কাউকেই জিজ্ঞেস করলেই দেখিয়ে দিবে রাস্তা।

যেহেতু বাইকে যাবেন তাই বাইকের সবচেয়ে ভালো রুটের ঠিকানা দেওয়া হল।

আশেপাশের দর্শনীয় স্থান

মানিকগঞ্জ জেলার আরও যেসব দর্শনীয় স্থান দেখতে পারেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো : তেওতা রাজবাড়ি, আরিচা ঘাট, শাহ রুস্তমের মাজার, ঈমামপাড়া জামে মসজিদ, নবরত্ন মন্দির, ধানকরা জমিদার বাড়ি, ইব্রাহিম শাহের মাজার ইত্যাদি।

তথ্য সূত্রঃ vromonguide.com