রাইডিং জ্যাকেট কেনার আগে না জানলেই ধরা

মে 11, 2023

রাইডিং জ্যাকেট কেনার আগে না জানলেই ধরা
রাইডিং জ্যাকেট কেনার আগে অবশ্যই রাইডিং জ্যাকেট সম্পর্কে আপনাকে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে, নয়তো ভুলভাল জ্যাকেট কিনে আপনার টাকা অপচয় হবার চান্স অনেক বেশি থাকবে। তাছাড়া আপনার প্রয়োজন, চাহিদা আর ওয়েদারের সাথে মিল রেখে যদি রাইডিং জ্যাকেট না কেনেন তাহলে সেই রাইডিং জ্যাকেট ব্যাবহার করা আপনার জন্য কস্টকর অথবা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে৷

যারা মোটরবাইক চালান তাদের জন্য মোটরসাইকেল রাইডিং জ্যাকেট একটি মাস্ট হ্যাভ সেফটি গিয়ার যা দুর্ঘটনা বা পড়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে রাইডারকে ক্ষতির হাত থেকে প্রোটেকশন দেয়। মোটরসাইকেল রাইডিং জ্যাকেট মুলত এমন ভাবেই ডিজাইন করা হয় যাতে দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে আরোহীর শরীরের উপরের অংশে আঘাতের ঝুঁকি যতটা সম্ভব কমানো যায়।

জয়েন করুন ফেইসবুক গ্রুপে

তবে মোটরসাইকেল রাইডিং জ্যাকেট কেনার আগে অবশ্যই রাইডিং জ্যাকেট সম্পর্কে আপনাকে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে, নয়তো ভুলভাল জ্যাকেট কিনে আপনার টাকা অপচয় হবার চান্স অনেক বেশি থাকবে। তাছাড়া আপনার প্রয়োজন, চাহিদা আর ওয়েদারের সাথে মিল রেখে যদি রাইডিং জ্যাকেট না কেনেন তাহলে সেই রাইডিং জ্যাকেট ব্যাবহার করা আপনার জন্য কস্টকর অথবা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে৷

তাই আজকের আলোচনায় আপনাদেরকে জানানোর চেস্টা করবো একটা রাইডিং জ্যাকেট কেনার ক্ষেত্রে ইনভেস্ট করার আগে কি কি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে আর কোন কোন ফিচার দেখে রাইডিং জ্যাকেট পছন্দ করা উচিত।

প্রথমেই খেয়াল করতে হবে,

১। ফ্রিকশন প্রোটেকশন

ভাল মোটরসাইকেল রাইডিং জ্যাকেট অবশ্যই এন্টি-ফ্রিকশন ম্যাটেরিয়াল দিয়ে তৈরি হতে হবে। যেমন চামড়া বা হাই ডেনসিটি সিন্থেটিক ফেব্রিক। দুর্ঘটনার ক্ষেত্রে স্লাইডিং ইম্প্যাক্ট কম করানোর ক্ষেত্রে এই বিষয়টা প্রচুর হেল্প করে।

২। ইমপ্যাক্ট প্রোটেকশন

মোটরসাইকেল রাইডিং জ্যাকেটগুলিতে আর্মার বা ভালো মানের প্যাডিং অবশ্যই থাকতে হবে। শরীরের খুব সেনসেটিভ পার্ট যেমন কাঁধ, কনুই এবং মেরুদন্ডকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য স্পেসিফিক এই জায়গাগুলোতে প্রোটেক্টিভ লেয়ার থাকলে সেটাকে ভালো রাইডিং জ্যাকেট হিসেবে কন্সিডার করা যায়। ভালো ব্রান্ডের জ্যাকেটে আর্মার ইন্সটল করার জন্য পকেট করা থাকে যাতে ইচ্ছা করলেই হাই-প্রোটেক্টিভ আর্মার কিনে আপনি জ্যাকেটে ইন্সটল করে জ্যাকেটের সেফটি লেভেল ওয়ান থেকে লেভেল টু তে আপগ্রেড করতে পারেন৷ লেভেল ওয়ান হচ্ছে প্রাইমারি বা এন্ট্রি লেভেলের প্রোটেক্টিভ আর্মার এবং লেভেল টু আর্মার গুলো হলো এডভান্সড লেভেলের আর্মার যা অনেক বেশি মজবুত হয়। যার ফলে এক্সিডেন্টের ক্ষেত্রে রাইডার অনেক বেশি সুরক্ষিত থাকে।

আরো পড়তে পারেন

আরেকটা ইম্পর্ট্যান্ট বিষয় হচ্ছে সার্টিফিকেশন।

ভালো ব্রান্ডের হেলমেটে যেমন সার্টিফিকেশন থাকে তেমনি ভালো ব্রান্ডের রাইডিং জ্যাকেটগুলোও সার্টিফাইড হয়ে থাকে। সার্টিফিকেশন এর ক্ষেত্রে মিনিমাম CE সার্টিফাইড হলে সেটাকে রাইডিং জ্যাকেট এর ক্ষেত্রে স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয়৷ এছাড়া ভালো মানের রাইডিং জ্যাকেটে আপনি DOT, EN,SNELL সার্টিফিকেশনও পাবেন।

CE মুলত ইউরোপীয়ান সেফটি স্ট্যান্ডার্ড, প্রেশার ইম্প্যাক্ট, টিয়ারিং সহ বিভিন্ন ধরনের টেস্টে পাশ করলে সেই জ্যাকেট টি এই সার্টিফিকেশন পেয়ে থাকে।

DOT হচ্ছে ডিপার্টমেন্ট অফ ট্রান্সপোর্টেশন কর্তৃক নির্ধারণ করা সেফটি স্ট্যান্ডার্ড। DOT হচ্ছে এটি আমেরিকান একটি সংস্থা।

ANSI সার্টিফিকেশন ও বিভিন্ন রাইডিং জ্যাকেটে দেখতে পাবেন। এই সার্টিফিকেশনও আমেরিকান একটি জাতীয় সংস্থা দিয়ে থাকে।

EN হলো ইউরোপীয়ান নর্ম, এটাও CE সার্টিফিকেশন এর সমতুল্য সেফটি স্ট্যান্ডার্ড।

সেফটি স্ট্যান্ডার্ড এর ক্ষেত্রে সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য স্ট্যান্ডার্ড হলো SNELL, এটি একটি নন প্রফিট অর্গানাইজেশন আর এদের সেফটি টেস্ট অনেক বেশি গ্রহণযোগ্য।

৩। ভিজিবিলিটি

রাইডিং জ্যাকেটের একটি গুরুত্বপূর্ণ সেফটি ফিচার হচ্ছে এর ভিজিবিলিটি। জ্যাকেটের ডিজাইনে উজ্জ্বল রঙ বা রিফ্লেকটিভ স্ট্রিপ থাকলে সেটা অন্য চালকদের কাছে বেশি ভিজিবল হয় এবং এতে দুর্ঘটনার রিস্ক অনেক কমে।

৪। ভেনটিলেশন বা এয়ার সার্কুলেশন

রাইডিং জ্যাকেটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ফিচার হচ্ছে এর ভেন্টিলেশন সিস্টেম। রাইডারকে গরম আবহাওয়ায় ঠান্ডা এবং ঠান্ডা আবহাওয়ায় গরম রাখার জন্য এয়ার সার্কুলেশন ভেন্ট এবং ইনার/লাইনার আছে কিনা দেখে নিতে হবে। যেকোনো আবহাওয়ায় কম্ফোর্টেবল রাইডের জন্য অল ওয়েদার জ্যাকেট বেছে নিতে পারেন৷ ম্যাশ ফেব্রিকের জ্যাকেটে ভালো এয়ার ফ্লো হয় সেই সাথে শীতকালে বাতাস আটকানোর জন্য ভিতরে ইনার লাগানোর ব্যাবস্থা থাকে৷।

৫। ফিটিং এবং কমফোর্ট

রাইডিং জ্যাকেট সঠিকভাবে ফিট হচ্ছে কিনা দেখে নেয়া উচিত। কারন টাইট জ্যাকেট আপনার অস্বস্তির কারন হতে পারে আর লুজ জ্যাকেট কখনো প্রপার সেফটি দেবে না। তাই জ্যাকেট কেনার আগে ট্রায়াল করে সেটা কতটা আরামদায়ক তা অবশ্যই বুঝে নিতে হবে। ভাল ফিট করা জ্যাকেট শুধুমাত্র রাইডারের সেফটিই এনশিওর করবে এমন নয় বরং পাশাপাশি আপনার রাইডিং কনফিডেন্স অনেক বাড়িয়ে দেবে৷

বাংলাদেশে যে রাইডিং জ্যাকেটগুলো পাওয়া যায় তার মধ্যে কোয়ালিটি ভেদে ৪ হাজার থেকে শুরু করে ৩০ হাজার টাকা রেঞ্জের মধ্যে বিভিন্ন ব্রান্ডের রাইডিং জ্যাকেট আছে। বাজেট রেঞ্জে কোন জ্যাকেট কি কি ফিচার অফার করছে তা নিয়ে অন্যদিন বিস্তারিত জানাবো।

ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন সার্টিফাইড হেলমেট পরে রাইড করুন।