Pulsar VS FZS fi v2.0 জীবনমুখী অংক

ফেব্রুয়ারি 04, 2022

Pulsar VS FZS fi v2.0 জীবনমুখী অংক

বাজেট বাইক কেনার আগে সাধারনত আমরা কিছু হিসাব করে থাকি এবং হিসাব টা অবশ্যই করা উচিত।

সাধারণত আমরা যারা বাজেট বাইক কিনি তাদের বেশিরভাগই নিজের কষ্টার্জিত উপার্জনে বাইক কিনে থাকি যাতায়াতের খরচ এবং ঝক্কি ঝামেলা এড়াতে।

অথবা পারিবারিক সাপোর্ট বা লোন নিয়েও অনেকে বাইক কিনে থাকি তাই প্রাথমিক ভাবে বেশ কিছু বিষয়ের উপর ফোকাস থাকে যেমন

১. বাইকের কোয়ালিটি কেমন এবং দীর্ঘদিন সাচ্ছন্দে ব্যাবহার করা যাবে কিনা?

২. বাইকের মাইলেজ কেমন?

৩. বাইকের লুক সুন্দর কিনা?

৪. সার্ভিস এবং স্পেয়ার এভেইলেবল কিনা?

৫. মেইনটেনেন্স খরচ কেমন?

৬. ব্রেকিং এবং ব্যালেন্স ভালো কিনা?

৭. দীর্ঘযাত্রায় আরামদায়ক কিনা?

৮. আধুনিক ফিচার এভেলেবল কিনা?

৯. দাম অনুযায়ী ফিচার জাস্টিফাইড কিনা? এবং

১০. ব্রান্ড ভ্যালু কেমন এবং জরুরি প্রয়োজনে বাইক সেল করলে ভালো দাম পাওয়া সহজ কিনা?

এখন আসুন উদাহরণ স্বরুপ বাজাজ পালসার ১৫০ এবং ইয়ামাহা FZS fi v2 এই দুটো বাইকের মধ্যে কিছু তুলনা করি যেহেতু দুটো বাইকের দাম কাছাকাছি।

১. দুটো বাইকের কোয়ালিটিই প্রমানিত কারন দুটো বাইকই অনেক বছর ধরে বাজারে বেশ জনপ্রিয়। এখানে দুজনেই সমান পয়েন্ট পাবে। ১-১

২. মাইলেজের দিক থেকে FZS অনেক এগিয়ে থাকবে যেহেতু এটা fi ইঞ্জিনের বাইক এবং প্রতি লিটারে পালসারের চেয়ে কমপক্ষে ১০ কিমি বেশি মাইলেজ পাওয়া যাবে Fzs fi v2 থেকে। ২০ হাজার কিমি চলতে পালসার খরচ করবে ৫৭০ লিটার জ্বালানি যা প্রায় ৫১ হাজার টাকার সমান।

অন্যদিকে ২০ হাজার কিমি চলতে FZS fi v2 তে তেল লাগবে ৪৪৪ লিটার জ্বালানি যার মুল্য ৩৯ হাজার টাকার মত। অর্থাৎ ২০ হাজার কিমি চললে FZS ইউজারের ১২ হাজার টাকা সাশ্রয় হবে। Fzs v2 এখানে ১পয়েন্টে এগিয়ে থাকলো।

৩. লুক এবং ডিজাইন একেক জনের পার্সোনাল প্রেফারেন্স

তবে আধুনিক এবং স্টাইলিশ ডিজাইনের জন্য FZS fi v2 এখানেও বাড়তি ১ পয়েন্ট ডিজার্ভ করে।

৪. সার্ভিস এবং স্পেয়ারের দিক থেকে দুটো বাইকই টাফ কম্পিটিটর তাই এখানে দজনেই সমান পয়েন্ট পাবে, ১-১।

৫. মেইন্টেনেন্স খরচের এর দিক পালসারের তুলনায় FZS v2 তে ১৪% কম খরচ তাই পালসার এখানে ১ পয়েন্ট কম পাবে।

৬. ব্রেকিং এবং ব্যালেন্সের এর জন্য FZS সেরা তা দীর্ঘবছর যাবত প্রমানিত, অন্যদিকে যেহেতু Pulsar150 তে সিংগেল চ্যানেল এবিএস আছে তাই এখানে দুজনেই সমান পয়েন্ট পাবে।

৭. লং রাইডে FZS v2 নিঃসন্দেহে অনেক বেশি আরামদায়ক তাই পালসার এখানে ১ পয়েন্ট কম পাচ্ছে

৮. আধুনিক ডিজাইনের সাথে সাথে fi টেকনোলজি এবং ব্লু কোর ইঞ্জিন দিচ্ছে fzs fi v2, অন্যদিকে পালসারে সেই পুরানো DTSI ইঞ্জিন, তাই এখানেও পালসার ১ পয়েন্টে পিছিয়ে থাকবে।

৯. পালসারের দাম অনুযায়ী এতে এফ আই ইঞ্জিন অবশ্যই থাকা উচিত ছিল। তাই এখানেও fzs fi v2 ১ পয়েন্টে এগিয়ে থাকবে৷

১০. রিসেলার বাজার ঘুরে দেখা গেছে ৫০ হাজার কিমি চলা একটা পালসারের চেয়ে ৫০ হাজার কিমি চলা একটা Fzs fi v2 বাইকের মুল্য কমপক্ষে ২০-২৫ হাজার টাকা বেশি। সুতরাং ব্রান্ড ভ্যালুর দিক থেকেও fzs fi v2 বাড়তি ১ পয়েন্ট ডিজার্ভ করে।

তাছাড়া বাজাজ অবশ্যই জনপ্রিয় ইন্ডিয়ান ব্রান্ড কিন্ত প্রায় একই দামে যদি বিশ্বখ্যাত জাপানিজ ব্রান্ডের হাইয়ার স্পেসিফিকেশনের প্রোডাক্ট এভেইলেবল থাকে তবে সেটা নিতেই ক্রেতারা বেশি আগ্রহী হয় কারন ব্রান্ড ভ্যালু এবং সোশ্যাল স্ট্যাটাসটাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।

এবার সিদ্ধান্ত নিন কোন বাইক টা আপনার বেছে নেয়া উচিত এবং কোনটা কিনলে আপনি বেশি লাভবান হবেন।

আর কোন কোন বাইকের ম্যাথমেটিক্যাল এবং বাস্তবসম্মত কম্পারিজন আপনারা দেখতে চান অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।

বাইক এবং বাইকিং এর খুটিনাটি নিয়ে কিউরিয়াস বাইকার আছে আপনার পাশে।

লেখাঃ ইকবাল আব্দুল্লাহ রাজ

এডমিন #কিউরিয়াস বাইকার