অফিসিয়াল বনাম আনঅফিসিয়াল বাইক ইম্পোর্টার

জানুয়ারি 12, 2022

অফিসিয়াল বনাম আনঅফিসিয়াল বাইক ইম্পোর্টার

বাংলাদেশে গ্রাহকদের সাথে বাইক পরিবেশন নিয়ে সম্পর্ক মুলত দুটি পক্ষের। অফিসিয়াল বনাম আনঅফিসিয়াল বাইক পরিবেশক।

এখন প্রশ্ন হল অফিসিয়াল বনাম আনঅফিসিয়াল বাইক পরিবেশক বলতে কি বোঝায়?

সাধারনত এই ধরনের ইম্পোর্টারদের নিরদিস্থ কোন ব্রান্ডে সীমাবদ্ধ থাকতে দেখা যায় না। গ্রাহক চাহিদা আছে এমন বাইক গুলো তারা বিভিন্ন উপায়ে তাদের শোরুমে সংগ্রহ করেন ও তাদের ইচ্ছে মত দাম নির্ধারণ করে গ্রাহক টানতে থাকেন।

বেশিরভাগ আনঅফিসিয়াল বাইকের শোরুম গুলোতে বাইকের অন্য যে সেবা গুলো দেবার কথা তা থাকে না। যেমন সার্ভিস, বাইকের অরিজিনাল পার্টস, ইঞ্জিন ওয়ারেন্টি ইত্যাদি।

অফিসিয়াল বাইক পরিবেশক

মোটরসাইকেল চাইলেই কিন্তু ইম্পোর্ট করা যায় কিন্তু একটি অফিসিয়াল ইম্পোর্টারের কিছু দায়িত্ব থাকে যেটা তাকে এনসিউর করতে হয় বাজারে ছাড়ার আগে যেন একজন ক্রেতা অর্থাৎ বাইকারদের যেন মোটরসাইকেলটি কেনার পরে কোনো সমস্যা না হয়, স্মুথ রাইডিং এক্সপেরিয়েন্স যেন সে পায়।

অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর মোটরসাইকেল আনার পরে প্রথমে সেটার এন্ডুরেন্স টেস্ট করে। এই এন্ডুরেন্স টেস্ট এর মধ্যে রয়েছে Functional Abnormality test যেখানে দেখা হয় মোটরসাইকেলটি থেকে কোনো unusual sound আসে কিনা, চেসিস বা মেটাল আইটেমে কোনো ডিফেক্ট আসে কি না, কারণ এক এক দেশের রোড কন্ডিশন এবং এনভারমেন্ট এক এক রকম। এই এন্ডুরেন্স টেস্ট থেকে পাওয়া ফলাফল কিন্তু পরবর্তীতে যাচাই করা হয়, এবং কোনো counter measure নেয়ার থাকলে কিন্তু সেটাও নেয়া হয় থাকে।

অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটরের কিন্তু শুধু এন্ডুরেন্স টেস্ট করলেই হয় না, এর পাশাপাশি কাস্টমারদের আফটার সেলস সার্ভিস এর জন্য স্পেয়ার পার্টস এর availability ensure করা থেকে শুরু করে সকল technician দেড় প্রপার ট্রেনিং এর ব্যবস্থাও কিন্তু একটি অফিসিয়াল ডিস্ট্রিবিউটর করে থাকে। যার কারণে অফিসিয়াল মোটরসাইকেল গুলোর longevity বেশি থাকে।

অফিসিয়াল বনাম আনঅফিসিয়াল বাইক

তাহলে এখানে প্রশ্ন হল অফিসিয়াল ও আনঅফিসিয়াল এই দুই বাইকের মাঝে কোণ পার্থক্য থাকে কিনা। উত্তর হল কোন কোন ক্ষেত্রে থাকে।

যেমন, যে বাইক প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো রয়েছে তারা মূলত নির্দিষ্ট এরিয়া ভিত্তিক কাস্টমারদের চাহিদার ওপর ভিত্তি করে সেই এরিয়াতে ফ্যাক্টরি স্থাপন করে এবং সে ফ্যাক্টরি থেকে কাছাকাছি বিভিন্ন দেশে ধারাবাহিক রপ্তানি করে থাকে।

বাংলাদেশে এরকম গ্লোবাল যে কোম্পানিগুলোর রয়েছে তার মধ্যে অধিকাংশ কোম্পানি ইন্ডিয়া থেকে বাইক আমদানি করে থাকে।

আনঅফিসিয়াল বাইক পরিবেশক শোরুম গুলো অফিশিয়াল বাইক যে দেশ থেকে আসে তারা সেই দেশটাকে এভোয়েট করে অন্য যেই দেশে এই ধরনের বাইক রয়েছে সে দেশকে টার্গেট করে

ফলে দেখা যায় দুটো দেশে দুটো ফ্যাক্টরিতে প্রস্তুতকৃত সেইম বাইক, পারফরম্যান্স ভিন্ন ভিন্ন হয়। ।

আনঅফিসিয়াল শোরুম থেকে বাইক নিলে সুবিধা এবং অসুবিধা গুলো কি?

সুবিধাগুলো হচ্ছে, আপনি সবার আগে বাইক হাতে পাবেন। যেহেতু ভিন্ন দুটি দেশ তাই বাইকের কালারের কিছু পার্থক্য থাকবে। কোন কোন ক্ষেত্রে দাম কিছুটা কমে পাবেন। যদিও শুরুতে বেশ উচ্চ মূল্য থাকে।

কিন্তু অসুবিধার লিস্ট কিন্তু অনেক বিশাল,

যেহেতু শুধুমাত্র তারা বাইক পরিবেশন করে সুতরাং বাইক সম্পর্কিত অন্য সকল বিষয়গুলো রয়েছে সার্ভিস, পাটস, আপডেটেড যন্ত্রপাতি, টেকনোলজি এই জিনিসগুলো দিকে তারা একটু নজর কম দেয়।

বাইক গুলো সাধারণত বড় কোন ইম্পোর্টার একসাথে ইমপোর্ট করেন এবং তিনি ছোট ছোট করে ভাগ করে বিভিন্ন শোরুমে সে গুলো সরবরাহ করেন ফলে দেখা যায় এগুলোর ইঞ্জিনের কোন ওয়ারেন্টি থাকে না।

যেহেতু এটা ভিন্ন রিজিয়ন থেকে আসে সুতরাং এই বাইকগুলোর পার্টস খুব সহসাই বাংলাদেশ এভেলেবেল হয়না।

তুলনামূলক কিছুটা কমে আপনি বাইকটা সংগ্রহ করতে পারলেও বাইকের পার্টস এর মূল্য কিন্তু আকাশচুম্বী।

সম্প্রতিক সময়ে বাইকের নতুন কিছু আপডেট ফিচার সমৃদ্ধ হচ্ছে যার মধ্যে মোবাইল কানেক্টিভিটি অন্যতম আনঅফিসিয়াল বাইক কিনলে আপনি এই সুবিধা পাবেন না কারণ অফিসের ডিস্ট্রিবিউটররা সরাসরি বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স সংগ্রহ করে যেটা আনঅফিশিয়াল ডিস্ট্রিবিউটরদের পক্ষে সম্ভব না।

সাম্প্রতিক সময়ে বিআরটিএ বেশ ভালোই কড়াকড়ি সুতরাং আনঅফিসিয়াল বাইক গুলো সাধারণত এখন আর নিবন্ধন অতটা সহজ নয়।

সার্ভিস পার্টস, আধুনিক যন্ত্রপাতি

বাইক যত আধুনিক হচ্ছে, বাইকের ফিচার যত সমৃদ্ধ হচ্ছে, ঠিক তেমনি বাইকটাকে সঠিক ভাবে সার্ভিস করার জন্য দরকার হচ্ছে দক্ষ হাতের সার্ভিস এক্সপাট।

একটা সময় মেকানিকের হাত, হাতুড়ি আর ডালিই ছিল প্রধান সার্ভিস টুল। সময়ের প্রয়োজনে সেই জায়গা গুলো দখল করেছে আধুনিক সব যন্ত্র।

আবার বাইকের কিছু পাটস আচ্ছে জা আপনাকে একটা নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর পরিবর্তন করতে হবে।

অরিজিনাল সব পার্টস, দক্ষ হাতের সার্ভিস এক্সপাট আর আধুনিক সব সার্ভিস টুলের এক চমৎকার প্যাকেজ ইয়ামাহার অথরাইজ ডীলার পয়েন্ট গুলো আপনাকে সরবরাহ করে।

এখন এইখানে প্রশ্ন হল বাইরেও তো অনেক আধুনিক যন্ত্র ও ভালো সার্ভিস এক্সপাট আছে।

অথরাইজ সার্ভিস পয়েন্টের সার্ভিস এক্সপাট হয় পুব থেকে ট্রেইনিক প্রাপ্ত হয়ে। আর বাইরের এক্সপাট দক্ষতা অর্জন করে আপনার নষ্ট বাইকের সার্ভিসের মাধ্যমে এক্সপেরিমেট করে।

এখন আপনি সিধান্ত নিন, আপনার ভালোবাসার বাইকটিকে এমন কারো হাতে তুলে দিবেন যে আপনার বাইকে এক্সপেরিমেন্ট করে সার্ভিস করবে, নাকি আগে থেকেই আপনার বাইক সম্পর্কে জানে এমন কারো হাতে তুলে দিবেন?

একটা জিনিস মাথায় রাখবেন একটা অদক্ষ হাত, একটা সমস্যা সমাধান করবে তার পদ্ধতিতে আর নতুন আরো ২/৪ সমস্যা তৈরি করবে।

অফিসিয়াল বনাম আনঅফিসিয়াল বাইক নিয়ে বিভিন্ন সময় আমাদের পেইজে বাইকারগন জানতে চান। তাদের করা প্রশ্ন গুলোকে একসাথে উত্তর আকারে দেবার জন্যই আমাদের আজকের আরটিকেলের আত্মপ্রকাশ। এখন পছন্দ, অর্থ আর সিধান্ত আপনার।