এয়ার কুলড অয়েল কুলড নাকি লিকুইড কুলড ইঞ্জিন?

আগস্ট 23, 2022

এয়ার কুলড অয়েল কুলড নাকি লিকুইড কুলড ইঞ্জিন?
মোটরসাইকেল/স্কুটার তথা নানা ফোর-হুইলারের ইঞ্জিন ঠান্ডা রাখার জন্য অর্থাৎ কুলিং সিস্টেম হিসেবে বিভিন্ন ধরনের পন্থা অবলম্বন করে নির্মাতা সংস্থাগুলি। তবে এগুলির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধানত তিনটি মাধ্যম – এয়ার-কুল্ড, অয়েল-কুল্ড ও লিকুইড-কুল্ড টেকনোলজি।

গাড়ি দু’চাকা হোক বা চার চাকা, ইঞ্জিনের মধ্যে এমন কিছু অংশ থাকে যা তার চাকার থেকেও অত্যাধিক দ্রুতগতিতে চলতে থাকে। একটি অভ্যন্তরীণ দহন বা ইন্টারনাল কম্বাশন ইঞ্জিন (ICE) চালু থাকার সময় ভেতরে কয়েক সহস্র বার নিয়ন্ত্রিত হারে বিস্ফোরণ ঘটে। এই পদ্ধতিতে জ্বালানি তেল পুড়িয়ে চলার শক্তি অর্জন করে সেই ইঞ্জিন। ফলস্বরূপ ইঞ্জিন ও তার সম্পূর্ণ অংশ প্রচন্ড হারে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অতএব তার তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় রাখতে হলে অবশ্যই একে ঠান্ডা রাখা প্রয়োজন।

মোটরসাইকেল/স্কুটার তথা নানা ফোর-হুইলারের ইঞ্জিন ঠান্ডা রাখার জন্য অর্থাৎ কুলিং সিস্টেম হিসেবে বিভিন্ন ধরনের পন্থা অবলম্বন করে নির্মাতা সংস্থাগুলি। তবে এগুলির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রধানত তিনটি মাধ্যম – এয়ার-কুল্ড, অয়েল-কুল্ড ও লিকুইড-কুল্ড টেকনোলজি। চলুন এবার এক নজরে দেখে নেওয়া যাক তাদের মধ্যে তফাত কোথায় ও এগুলির মধ্যে কোনটির কার্যকরী ক্ষমতা সবচেয়ে বেশি।

এয়ারকুল্ড ইঞ্জিন:

নামের থেকেই বোঝা যাচ্ছে এই ধরনের প্রক্রিয়ায় ইঞ্জিনটি প্রাকৃতিক বাতাসের সাহায্যে ঠান্ডা করা হয়। একটি গতিশীল গাড়ি কিংবা বাইককে সামনে থেকে তীব্র হওয়ার ধাক্কা সামলাতে হয়। আর এই হাওয়াকেই ইঞ্জিনের চারপাশে থাকা ছোট ছোট ফিনের মধ্যে দিয়ে চালিয়ে তাকে ঠান্ডা করাই হল এয়ারকুল্ড ইঞ্জিনের প্রধান কাজ। এই তিন ধরনের প্রক্রিয়ার মধ্যে সবচেয়ে সহজতর ও সাশ্রয়ী পদ্ধতি হলো এটি। এই পদ্ধতিতে ইঞ্জিনের সঙ্গে অতিরিক্ত কোনো ঠান্ডা করার চেম্বার যুক্ত থাকে না।

আরো পড়ুন

আমাদের দেশের বেশিরভাগ মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিটিকেই অনুসরণ করা হয়। এমনকি অতীতেও Porsche এর মত নামী সংস্থাও তাদের গাড়িতে এই প্রক্রিয়ার ব্যবহার করেছিল। ঝঞ্ঝাটবিহীন সহজ সেটআপের জন্য এই পদ্ধতিতে অতিরিক্ট রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয় না।

অয়েল কুল্ড ইঞ্জিন:

অয়েলকুল্ড ইঞ্জিনের গায়েও থাকা ছোট ছোট ফিন থাকায় তার মধ্যে দিয়েও বাতাস চলাচল করে। বলা ভালো অয়েল ও এয়ার দুটি পদ্ধতিকেই একসঙ্গে প্রয়োগ করা হয় এই জাতীয় ইঞ্জিনগুলিতে। তবে এক্ষেত্রে অতিরিক্ত একটি ছোট অয়েল কুলার ইঞ্জিনের কাছেই লাগানো থাকে। এবার ইঞ্জিনের মধ্যে থাকা গরম ইঞ্জিন অয়েল ছোট পাইপের মাধ্যমে এই কুলারের রেডিয়েটরের মধ্যে প্রবেশ করে ও বাইরের বাতাস লেগে তা ঠান্ডা হয়। তারপর পুনরায় পাম্পের মাধ্যমে সেটি ইঞ্জিনে ফিরে যায়। আর ঠিক এভাবেই তা ইঞ্জিনের তাপমাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। অয়েল কুল্ড ইঞ্জিন আসলে এয়ার কুল্ড এর থেকে অনেক বেশি কার্যকরী। কারণ এতে থাকা কুলার অয়েল খুব সহজেই ইঞ্জিনের প্রকোষ্ঠে প্রবেশ করে ইঞ্জিনকে ঠান্ডা রাখে।

লিকুইড কুল্ড ইঞ্জিন:

এই জাতীয় ইঞ্জিনের ব্যবহার সমগ্র পৃথিবী জুড়েই গাড়ি, ট্রাক, মোটরসাইকেল সহ সমস্ত ধরনের মোটরগাড়িতেই করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে এক ধরনের লিকুইড কুলান্ট যা ইঞ্জিনের বাইরে থাকা রেডিয়েটরের সাহায্যে ঠান্ডা হয়ে পুনরায় ইঞ্জিনের চারপাশে থাকা অংশে প্রবেশ করে ও ইঞ্জিন থেকে সমস্ত উষ্ণতাকে শুষে নেয়।

আরো পড়ুন

লিকুইড কুল্ড ইঞ্জিনের মধ্যে রয়েছে একটি রেডিওটার, একটি ফ্যান (যদিও সবক্ষেত্রে নয়) ও একটি কুলান্টের আধার, যা প্রতিমুহূর্তে পাম্পের সাহায্যে ইঞ্জিনের চারপাশে আবর্তিত হয়। এই তিনটি প্রক্রিয়ার মধ্যে সবচেয়ে উন্নত ও অপেক্ষাকৃত দামি ব্যবস্থা হল এটি। এর ফলে ইঞ্জিনের তাপমাত্রা প্রতি মুহূর্তে যথেষ্ট ভাবে নিয়ন্ত্রিত হয় বলেই তা সব সময় সেরা পারফরম্যান্স দিতে পারে।