এয়ার ফিল্টারে অয়েল আসে কেন?

আগস্ট 27, 2019

এয়ার ফিল্টারে অয়েল আসে কেন?

অনেক সময় আমরা লক্ষ করি বাইকের এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার বা পরিবর্তনের সময় এয়ার ফিল্টার তেলতেলে হয়ে আছে। মনে হচ্ছে কোন ভাবে এয়ার ফিল্টারে ওয়েল আসছে।

আশ্চর্যের বিষয় এয়ার ফিল্টার এর সাথে ইঞ্জিন বা ফুয়েল ট্যাঙ্ক এর সাথে সরাসরি কোন সম্পর্ক নেই। যদিও এয়ার ফিল্টার এর কাজ হচ্ছে এয়ার পরিষ্কার করে ইঞ্জিনে প্রবেশ করানো। তবে এই লাইন দিয়ে অয়েল এয়ার ফিল্টারে আসার কোন সম্ভাবনা নেই।

কিন্তু খেয়াল করে দেখবেন এয়ার ফিল্টার একদম তেলতেলে হয়ে আছে। মনে হচ্ছে কোন ভাবে এই খানে তেল প্রবেশ করছে। প্রশ্ন হচ্ছে কিভাবে এই এয়ার ফিল্টারে অয়েল আসলো? কোথা থেকে আসলো? ফুয়েল ট্যাঙ্ক থেকে নাকি ইঞ্জিন থেকে?

উত্তরটা হচ্ছে বাইকের ফুয়েল ট্যাঙ্ক এর সাথে এয়ার ফিল্টার এর দূরতম কোন সংযোগ নেই যেখান দিয়ে ফুয়েল আসবে। ফুয়েল আসলে আসবে সরাসরি ইঞ্জিন থেকে। কিন্তু কিভাবে?

কারন টা খুবি সিম্পল। কয়েকটি কারনে ফুয়েল আসতে পারে, তার মধ্যে প্রধান ৩টি কারন নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচলা করবো…

# ইঞ্জিন ওয়েল বেশি দিলেঃ ইঞ্জিন ওয়েলের কাজ হচ্ছে ইঞ্জিনকে পিচ্ছিল রাখা, ইঞ্জিন কে ঠাণ্ডা রাখা। একটা ভুল ধারনা অনেক বাইকার ভাইদের মধ্যে দেখা যায় যে, যদি ইঞ্জিন ওয়েল সামান্য বেশি দেওয়া যায় তবে নাকি ইঞ্জিনের কাজ আরো সহজ হয়। আবার অনেকে মনে করেন ইঞ্জিন ওয়েল বেশি দিলে বাইক বেশি কিঃ মিঃ পর্যন্ত চালানো যায়।

আসোলে একটা নির্দিষ্ট কিঃ মিঃ পর্যন্ত ইঞ্জিন ওয়েলের পিচ্ছিলতা বা কার্যকারিতা থাকে। এর পরে এটা আর কাজে লাগে না। যখন এর কার্যকারিতা নষ্ট হয় একবারে পুরো অয়েল টি হয়, আস্তে আস্তে বা ভাগ ভাগ করে না। তাই বেশি ইঞ্জিন অয়েলের কোন কাজ নেই। উপরন্তু এই অয়েল গিয়ে প্রবেশ করে এয়ার ফিল্টারে।

এয়ার ফিল্টারের কাজ হচ্ছে বিশুদ্ধ এয়ার ইঞ্জিনে প্রবেশ করানো। এই এয়ার ও ফুয়েল একসাথে বার্ন হয়ে শক্তি উৎপাদন করে। অনেক সময় যে পরিমান এয়ার ইঞ্জিনে প্রবেশ করে সেই পরিমাণ বার্ন না হওয়ার কারনে কিছু এয়ার ইঞ্জিনে থেকে যায়। এই বিষাক্ত এয়ার বের করে দেবার জন্য আরেকটি লাইন দিয়ে আবার এয়ার ফিল্টারে আসে। এয়ার ফিল্টার এই এয়ার গুলা পুনোরায় বিশুদ্ধ করে আবার ইঞ্জিনে সাপ্লায় করে।

যদি আপনি নির্দিষ্ট মাত্রার চেয়ে বেশি ইঞ্জিন অয়েল দেন তবে ইঞ্জিন চলার সময় অতিরিক্ত তেল এই লাইন দিয়ে এয়ার ফিল্টারে চলে আসবে।

প্রতিটা বাইকের সাথেই অনার্স ম্যানুয়াল দেওয়া থাকে। এখানে পরিষ্কার করে লেখা থাকে কোন বাইকে কি পরিমাণ ইঞ্জিন ওয়েল দিতে হবে। এর বেশি বা কম বাইকের জন্য ক্ষতিকর।

যদি এয়ার ফিল্টারে ফুয়েল আসে তবে ইঞ্জিন বিশুদ্ধ ও পর্যাপ্ত এয়ার পাবে না, আস্তে আস্তে আপনার ইঞ্জিন দুর্বল হয়ে যাবে, বাইকের মাইলেজ কমে যাবে, টপ স্পীড কমে যাবে, উচ্চ RPM এ বাইক বন্ধ হয়ে যাবে।

# উচ্চ RPM এ বাইক চালালেঃ আপনি যদি নিয়মিত উচ্চ RPM এ বাইক চালান আর টপ স্পীডের নেশায় মেতে থাকেন তবে আপনার বাইকে সঠিক মাত্রায় ইঞ্জিন অয়েল দিলেও এয়ার ফিল্টারে ইঞ্জিন অয়েল আসবে।

টপ স্পীড এর প্রথম শর্ত হচ্ছে প্রতি গিয়ারে RPM এর শেষ পর্যন্ত গিয়ে পরের গিয়ারে প্রবেশ করা। মানে সরবচ্ছ RPM । RPM যত বেশি হবে ইঞ্জিন তত জোরে ঘুরতে থাকবে। আর ইঞ্জিন জোরে ঘোড়ার কারনে ইঞ্জিন অয়েল বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পরবে। তখন দূষিত এয়ার ক্লিনিং লাইন দিয়ে ইঞ্জিন ওয়েল এয়ার ফিল্টারে চলে আসবে।

# সার্ভিসিং এর সময়ঃ
আমরা অনেকেই নিয়মিত এয়ার ফিল্টারে ক্লিনিং করি, আর এটা ভালো প্র্যাকটিসও বটে। সার্ভিস এর সময় বা বাইক ওয়াসের সময় এয়ার ফিল্টারে পানি লেগে যায়।

আর এই ভেজা অবস্থায় আপনি যদি বাইক চালান তবে এয়ার ফিল্টারে ধুলা লেগে একটা চেটচেটে ভাব এনে দেয়।

আসলে এয়ার ফিল্টার বাইকের সাথে এমন ভাবেই সেট করা থাকে যে সাধারণ ওয়াশের সময় কোন ভাবেই পানি প্রবেশ করার কথা না। কিন্তু কোন কারনে এয়ার ফিল্টারের ঢাকনা খোলা থাকে বা আপনি পানি দিয়ে পরিষ্কার করেন তবে এই অবস্থা হতে পারে।

বাইক সবারি ভালোবাসার বস্তু। সবাই চায় তার বাইক ভালো থাকুক। তাই অনেকে ভালো মনে করে বা লোকমুখে শুনে এমন সব কাজ করে বসেন যা ভালোর চেয়ে খারাপিই ডেকে আনে।

বাইকের বিষয়ে যে কোন সিধান্ত নেবার আগে অনার্স ম্যানুয়াল দেখে নিন। এর বাইরে কখোনোই যাবেন না।