কম সিসি বাইকে লং ট্যুর টিপস
আগস্ট 12, 2019
Views
Shares
আমার দেশে একটা কথা প্রচলিত আছে, হাইওয়ে রাইড বা লং ট্যুর মানেই সর্বোচ্চ সি সি এর বাইক। কম সি সি এর বাইক দিয়ে লং ড্রাইভ দেওয়া যায় না। আসোলে এটা শুধুমাত্র একটা প্রবাদ, বাস্তবে এর কোন মিল নেই।
সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বাইকার কম সি সি এর বাইক নিয়ে লং ট্যুর করছেন। তাদের অভিমত হচ্ছে ইচ্ছে, অদম্য মনবল আর একটু সচেতনাতার সাথে রাইড করতে পারলে বাইকের সি সি কোন ফ্যাক্ট না।
আপনি যদি কম সি সি এর বাইক রাইডার হন, আর আপনার যদি সুপ্ত বাসনা থাকে এই বাইকে লং ট্যুর করার তবে আজকের আলোচনা আপনার জন্য খুব গুরুত্তপূর্ণ।
আজ আমরা আলোচলা করবো কম সি সি এর বাইক নিয়ে কিভাবে নিরাপদে লং ট্যুর করা যায়…
# সার্ভিসিং
বাইক নিয়ে হাইওয়েতে রাইড দেওয়ার আগে নিশ্চিত হতে হবে আপনার মোটর সাইকেল বা মোটর বাইক রাইড দেওয়ার জন্য পারফেক্ট কি না। নিশ্চিত হয়েই তবে রাইডে বের হতে হবে। বাইকের ফুয়েল যথেষ্ট পরিমাণে আছে কি না চেক করে নিতে পারে। একই সাথে বাইকের চেইন পরিষ্কার না থাকলে পরিষ্কার করে নিতে হবে। চাকা আর প্রেশার ঠিক আছে কি না এটাও দেখতে হবে। এছাড়া হাইওয়েতে বাইক রাইড দেওয়ার জন্য লুকিং গ্লাস, ইলেকট্রিক্যাল সিস্টেমসের মধ্যে যা পড়ে যেমন হেড লাইট, টেইল লাইট, ইনডিকেটর এগুলো দেখে নিতে হবে। হাইওয়েতে গেলে এমনিতেই বাইকাররা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি গতিতে বাইক চালান। তাই বাইক পারফেক্ট আছে কি না এ ব্যাপারটা জেনে নেওয়া জরুরী।
# ট্যুর প্ল্যান
আপনি যেখানে জেতে চাচ্ছেন আর যেখান থেক যাত্রা শুরু করবেন আর পুরো পথের একটা ছক এঁকে নিন। ধরেন আপনি ঢাকা থেকে সিলেট যাবেন। যেহেতু আপনার বাইকের সি সি কম অন্যদিকে আপনি সবার সাথে পাল্লা দিয়ে বাইক চালাতে পারবেন না তাই সবচেয়ে নিরাপদ ও সহজ পথের একটা ছক এঁকে নিন। ঢাকা থেকে সিলেট পর্যন্ত গুরুত্ব পূর্ণ মোড় গুলো ও বিপদ জনক জায়গা গুলোর একটা তালিকা করে নিন। ফলে পুরো রাস্তা আপনার মাথায় থাকবে ও আপনি সেই জায়গা গুলোতে আরো সতর্ক হতে পারবেন।
# রাইডিং গিয়ার্স
বাইক চালানোর সময় যথাযথ রাইডিং গিয়ার পরিধান করতে হয়। আপনি কোন বাইক চালাচ্ছেন এটা কোন বিষয় নয়। বর্তমান সময়ে যে কোন বাইক হাইওয়েতে কমপক্ষে ৬০ কিলো মিটার গতিতে চলে। কিন্তু এই গতিতে যদি হাইওয়েতে আপনার একটি এক্সিডেন্ট হয় তবে আপনার বড় ধরনের ইনজুরি হবে এটা নিশ্চিত। অনেকেই যাত্রা বেলায় অবহেলা করে যাত্রার জন্য নির্দিষ্ট ড্রেস পড়তে চান না বা পড়েন না। কিন্তু এই অবহেলাই কিন্তু দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরো বাড়িয়ে দেয়। হাইওয়েতে যাত্রা বেলায় জুতা, হেলমেট, গ্লাভস, রাইডিং জ্যাকেট এবং এলবো ও নি গার্ড এগুলো পড়া বাধ্যতামূলক।
# বিরতি
পুরো ট্যুর টা একবারে সমাপ্ত না করে বিরতি দিয়ে দিয়ে চালাবেন। প্রতি ৩০-৩৫ কি মি পর পর ১২-১৫ মিনিট বিরতি দিয়ে চালাবেন। খুব গরমের সময় হলে এই হিসাব আরো কম করতে পারেন। এতে বাইকের ইঞ্জিন থান্ডা হবার সময় পেল আর আপনিও বিশ্রাম নিতে পারলেন।
# গতি নিয়ন্ত্রন
আপনার বাইকের সি সি যেহেতু কম তাই আপনাকে উচ্চ গতি পরিহার করতে হবে। লম্বা সময় ধরে ৭০/৮০ তে চালানো যাবে না।
# ওভারটেকিং
পারতপক্ষে বাইক নিয়ে বড় গাড়ি, বাস, লড়ি কে ওভার টেক করবেন না। ওভার টেক করতে হলে আপনার কে ৭০/৮০ বা তারো বেশি তুলতে হতে পারে। যা আপনার হালকা বাইকের জন্য ঝুঁকি পূর্ণ। মনে রাখবেন বাইকের গতি যত বেশি হবে বাইক তত হালকা হতে থাকবে।
# রাইড শেষে
রাইড শেষে আপনার প্রথম যে কাজ টা করতে হবে তা হল, বাইকটিকে ছায়া যুক্ত স্থানে ডাবল স্ট্যান্ড করে রেখে দেওয়া। যখন ইঞ্জিন ঠাণ্ডা হবে তখন বাইকটিকে ওয়াশ করে নিতে পারেন।
পরিশ্রমের পরে মানুষের যেমন লম্বা একটা বিশ্রামের প্রয়োজন তেমনি বাইকের বেলায়েও তাই। খেয়াল করে দেখবেন লম্বা ট্যুর দেবার পরে বাইকের ইঞ্জিনের শব্দ চেইঞ্জ হয়ে যায়, কিন্তু ইঞ্জিন পুরো ঠাণ্ডা হতে দিন একটা ভালো ওয়াশ দিন দেখবেন ঠিক হয়ে গেছে।
মরাখবেন, বাইকের স্থায়িত্ত বাড়ে যত্নে, নির্মাণ শৈলীর কারনে নয়।