চালু অবস্থায় বার বার স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?

আগস্ট 22, 2019

চালু অবস্থায় বার বার স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাচ্ছে?

প্রায়শই দেখি ফেইজবুকের বিভিন্ন গ্রুপে বাইকারা নানান সমস্যা নিয়ে পোস্ট করেন। এর মধ্যে অন্যতম কমন যে সমস্যা টি তা হল চালু অবস্থায় বাইকের ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়া।

আপনার বাইক একদম নতুন অথবা পুরাতন যাই হোক না কেন, দুই অবস্থায় এই সমস্যা টি হতে পারে।

এই তো ঠিক গতকাল পর্যন্ত আপনার বাইক ঠিক ছিল, আজ যখনি বাইক নিয়ে বের হয়েছেন একটু দুরোত্ত অতিক্রম করার পরে যখন বাইকের ক্লাস ধরছেন অমনি বাইক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

কেন হচ্ছে? কি কি কারনে হচ্ছে? এর সমাধান কি? এই সব ভেবে আপনার মাথা খারাপ হবার মত অবস্থা? কারন ও সমাধান বলে দিচ্ছি…

# সঠিক RPM না থাকলে :
বার বার চলন্ত অবস্থায় বাইকের স্টার্ট বন্ধ হয়ে জাবার অন্যতম প্রধান কারন হচ্ছে RPM সঠিক না থাকা। অনেক সময় খারাপ রাস্থায় চালালে বা পিলিওন নিয়ে চালালে আইডল RPM এদিক সেদিক হয়ে যায়।

সাধারণর বাইকের RPM থাকে ১৩০০ থেকে ১৫০০। এর কম হলে চালু অবস্থায় বাইকের ক্লাচ ধরলে স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাবে আবার এর বেশি হলে বাইকের ফুয়েল বেশি খরচ হবে। সঠিক RPM বাইকের জন্য খুব গুরুত্ব পূর্ণ। কারন সঠিক RPM না থাকলে বাইকের ইঞ্জিন সাউন্ড বেশি হবে, মাইলেজ কমে যাবে, ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হবে।

#স্পার্ক প্লাগ ময়লা হলেঃ
বাইকের স্পার্ক প্লাগ ময়লা হলেও এই সমস্যাটি হতে পারে। এই জন্য বাইকের স্পার্ক প্লাগ নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।

জখনই এই সমস্যাটি হচ্ছে তখন স্পার্ক প্লাগ টি খুলে চেক করে দেখে নিবেন। যদি দেখেন স্পার্ক প্লাগ টি পুরো কালো হয়ে গেছে, অঙ্গুল দিয়ে দেখবেন হাতে কালি পরছে কিনা যদি পড়ে তখন বুঝবেন এটি অতিরিক্ত ময়লা হয়েছে।

#এয়ার ফিল্টার অতিরিক্ত ময়লা হলেঃ
যারা সিটি রাইড করে, অনেক বেশি ধুলো বালি তে বাইক চালান তাদের বেশির ভাগেরি স্টার্ট বন্ধ হয়ে যাবার প্রধান কারন এয়ার ফিল্টার অধিক ময়লা হয়ে যাওয়া।

এর সমাধান হচ্ছে প্রতি ৫০০-৮০০ কি মি পর পর এয়ার ফিল্টার পরিষ্কার করে নেওয়া। যদিও এয়ার ফিল্টার পুনরায় ব্যাবহার যোগ্য না বলে কোম্পানি রিকমান্ড করে।

আর স্বাভাবিক ভাবেই একটা এয়ার ফিল্টার ৩০০০ থেকে ৩৫০০ কি মি চালানোর পড়ে এর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। তাই কোনভাবেই এর বেশি চালানো যাবে না। আপনি বাজে রাস্তার রাইডার হলে এটা আরো তাড়াতাড়ি পরিবর্তন করা ভালো।

#এয়ার ও ফুয়েলের মিশ্রণ সঠিক না হলেঃ
সাধারণত আমরা সকলেই এই বিষয়ে অবগত আছি যে বাইকের ইঞ্জিনে এয়ার ও ফুয়েল বার্ন হয়ে শক্তি উৎপাদন করে।

বাইকের এয়ার ও ফুয়েলের মিশ্রণ যদি সঠিক মাত্রায় না হয়, তবে ইঞ্জিন চলার মত পর্যাপ্ত পাওয়ার উৎপাদন করতে পারবে না। আর ইঞ্জিনে পাওয়ার উৎপাদন না হলে ইঞ্জিন বন্দ হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।

# কার্বুরেটর ক্লিনিংঃ
কার্বুরেটর বাইকের গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। বাইক কিংবা মোটর সাইকেলের ভালো পারফরমেন্স পেতে হলে কার্বুরেট টিউনিং সঠিক ভাবে করতে হবে। অনেকের মতে কার্বুরেট থেকে তেল কমিয়ে রাখলেই ভালো মাইলেজ পাওয়া সম্ভব। কিন্তু এটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কার্বুরেটর বাতাস ও জ্বালানিকে সমন্বয় করে ইঞ্জিনে সরবরাহ করে থাকে। কাজেই এই সমন্বয়টা যদি ভালো না হয় তবে ভালো পারফরমেন্স পাওয়া সম্ভব না। সমন্বয়টা সঠিক হলে তবেই ভালো পারফরমেন্স পাওয়া সম্ভব বাইক বা মোটর সাইকেল থেকে।

আসলে যারা অনেক দিন ধরে বাইক চালান তার এই সমস্যাটির সম্মুখীন হননি এমন লোক খুজে পাওয়া মুশকিল। হয়ত এর কারন গুলো জানা অনেকের। কিন্তু সচেতনতার অভাবে সমাধান করা হচ্ছে না।

হা সমস্যাটি খুব সামান্য ও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর সমাধান আপনি নিজেই করতে পারছেন, কিন্তু মনে রাখবেন ছোট ছোট সমস্যা বড় বিপদ ডেকে আনে। সুতরাং সচেতনতাই প্রথম।