জয়েন করুন 76 হাজারের বেশি বাইকারের গ্রুপ কিউরিয়াস বাইকার
বাংলাদেশের রাস্তাঘাট ও আবহাওয়া বিবেচনায় বাইকের সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো চেইন সেট। অনেকেই এই অংশটিকে যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করেন না, ফলে দেখা দেয় "চেইন লুজ" বা "চেইন স্লিপ"-এর মতো সমস্যাগুলো। আজ আমরা জানবো, কীভাবে এই সমস্যা বুঝবেন এবং সহজেই সমাধান করবেন।
⚠️ চেইন লুজ/স্লিপ – কীভাবে বুঝবেন?
১. চেইন ঝুলে গেছে চোখে দেখলেই বোঝা যায়।
বাইকের রিয়ার চেইনের মাঝামাঝি অংশে হাত দিয়ে দেখলে যদি তা অতিরিক্ত নিচে-উপরে নড়ে, বুঝবেন চেইন লুজ হয়ে গেছে।
২. অসামঞ্জস্যপূর্ণ শব্দ হয়।
বাইক চালানোর সময় চেইন থেকে "চটচট", "খটখট" বা ঘর্ষণের শব্দ শোনা যায়।
অ্যাক্সেল রেস্পন্স কমে যায়।
থ্রটল দিলে বাইক ঠিকভাবে টান নিতে চায় না, যেন শক্তি চেইনে ট্রান্সফার হচ্ছে না।চেইন স্লিপ করে বা গিয়ার বদলানোর সময় ঝাঁকি দেয়।
চেইন ঠিকমতো স্প্রকেটের দাঁতের সঙ্গে বসে না থাকলে স্লিপ করে যায়।
🔍 সমস্যার কারণ কী হতে পারে?
- দীর্ঘদিন ধরে চেইন টাইট না করা।
- রেগুলার লুব্রিকেশন না করা বা ময়লা জমে যাওয়া।
- চেইন স্প্রকেটের দাঁত ক্ষয় হয়ে যাওয়া।
- অতিরিক্ত ওজন বা রাফ রাইডিং।
- নিম্নমানের চেইন সেট ব্যবহার করলে অল্পদিনেই সমস্যা দেখা দেয়।
🛠️ সমাধান কী?
চেইন টেনশন ঠিকমতো এডজাস্ট করুন।
সাধারণত ২৫-৩০ মিমি (১ ইঞ্চির মতো) ফ্রি প্লে থাকাই আদর্শ। বাইকের ম্যানুয়াল দেখে সঠিক টেনশন বুঝে নিতে পারেন।রেগুলার চেইন লুব্রিকেশন করুন।
৫০০-৭০০ কিমি পরপর চেইন ক্লিন করে ভালো মানের চেইন লুব ব্যবহার করুন। বাংলাদেশে Liqui Moly, Motul, বা Wurth এর চেইন লুব সহজেই পাওয়া যায়।চেইন স্প্রকেট চেক করুন।
দাঁত যদি শার্প হয়ে যায় বা বাঁকা হয়ে যায়, বুঝবেন এটি পরিবর্তনের সময় হয়েছে।প্রয়োজনে চেইন সেট বদলান।
যদি বারবার সমস্যা হয়, তাহলে নতুন চেইন-স্প্রকেট সেট লাগানোই উত্তম। ভালো ব্র্যান্ড যেমন DID, RK, বা স্টক কোম্পানির পার্টস ব্যবহার করুন।
🇧🇩 বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বাড়তি কিছু টিপস:
- বৃষ্টির দিনে চালালে চেইনে পানি ও মাটি লেগে যায়, সেজন্য রাইড শেষে চেইন পরিষ্কার করে রাখুন।
- গ্রামাঞ্চলের কাঁচা রাস্তা বা ধুলাবালি বেশি হলে নিয়মিত লুব্রিকেশন ও ক্লিনিং জরুরি।
- বাইক ওয়াশ করানোর সময় চেইনে সরাসরি হাই প্রেসার পানি না মারাই ভালো।
✅ উপসংহার:
চেইন স্লিপ বা লুজ হওয়া একটি ছোট সমস্যা মনে হলেও এর প্রভাব অনেক বড় – পারফরম্যান্স কমে যায়, ফুয়েল খরচ বাড়ে, আর অনেক সময় দুর্ঘটনারও কারণ হতে পারে। তাই সময়মতো নজর দিন, সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করুন।
আপনার বাইক ভালো রাখলে রাইডিং হবে আরো মসৃণ, নিরাপদ এবং আনন্দদায়ক।
আপনার মতামত বা প্রশ্ন থাকলে কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না!