জানেন কি? কোন বাইক টা কেন বানানো হয়?
মে 18, 2022
Views
Shares
পৃথিবীতে যেমন নানা ধরনের মানুষ আছে তেমনি আছে নানা ধরনের মোটরবাইক,
যেমন স্পোর্টস, ক্রুজার, এডভেঞ্চার, টুরিং, ক্যাফে রেসার, চপার, স্ট্রীট, ডুয়াল স্পোর্ট অথবা ডার্ট বাইক।
অনেকেই জানেন না স্পোর্টস এবং ক্রুজার, কমিউটার, মাউন্টেন বা ডার্ট বাইকের মধ্যে পার্থক্য কি কি??
মুলত প্রত্যেকটি ই আলাদা সেগমেন্টের বাইক ।
সবগুলো নিয়ে বিস্তারিত বলতে গেলে পোস্ট লম্বা হয়ে যাবে তাই খুব অল্প পরিসরে আজ স্পোর্টস ও ক্রুজার ও কমিউটার বাইক সম্পর্কে কিঞ্চিত ধারনা দেবো ।
ক্রুজার বাইক বানানো হয় হাইওয়েতে লং টুর করার উদ্দেশ্যে ৷।
এই বাইকের মুল ফোকাস পয়েন্ট থাকে রাইডারের সর্বোচ্চ কম্ফোর্ট ।
উচ্চ গতি এখানে মুখ্য নয়। কমপক্ষে ৬০ থেকে সর্বোচ্চ ৮০ মাইল ঘন্টা বেগে আরামদায়কভাবে ক্রুজিং করাই এই বাইকের মুখ্য উদ্দেশ্য।
সাথে সাথে লং টুরের জন্য রাইডারকে কিছু ব্যাগেজ বা প্রয়োজনীয় মালামাল ক্যারি করার জন্য বেশ খানিকটা স্টোরেজ ফ্যাসিলিটি দেয়া হয় ক্রুজার বাইকে।
পিলিয়নের জন্যেও আরামদায়ক ওয়েল কুশন্ড সীটের ব্যাবস্থা থাকে।
উন্নত বিশ্বে ক্রুজার বাইকের এক বিশাল ফ্যানবেজ রয়েছে যাদের বেশিরভাগই মধ্যবয়সী।
তবে ৬০ এর কোটা পেরিয়ে গেছে এমন অনেক প্যাশনেট বাইকারদেরও দেখা যায় যারা ক্রুজারবাইক নিয়ে লম্বা ভ্রমনে বেরিয়ে যান প্রায়শই।
স্পোর্টস বাইকের ডিজাইন করা হয় উচ্চ গতিবেগের কথা মাথায় রেখে ।
স্পোর্টস বাইকে সর্বোচ্চ ফোকাস করা হয় বাতাস কাটার ক্ষমতা অর্থাৎ এরোডায়ানামিক শেপ, ব্যালেন্স, হ্যান্ডেলিং, ব্রেকিং এবং হাই স্পিডে ম্যাক্সিমাম স্ট্যাবিলিটি বিষয়ে । এছাড়াও সর্বনিম্ন ল্যাপ টাইমের ব্যাপারেও স্পেশাল ফোকাস দেয়া হয়৷
মুলত এই বাইক গুলো হয় ট্র্যাক ওরিয়েন্ডেড কন্সেপ্টের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয় ।
রাইডারের কমফোর্ট এখানে মুখ্য নয়, গতি এবং সর্বনিম্ন ল্যাপ টাইমই সর্বোচ্চ প্রাধান্য পায় স্পোর্টস বাইকের ক্ষেত্রে৷
গতি বেশি পাবার জন্য স্পোর্টস বাইকগুলোকে লাইট ওয়েট করার জন্য প্রচুর এফোর্ড দেয়া হয় ।
সারা বিশ্বের তরুন বাইকারদের ড্রীম বাইকের কথা জানতে চাইলেই সবার আগে চলে আসে সুপার স্পোর্টস বাইকগুলোর নাম।
যেহেতু গতি ও তেজই তারুন্যের প্রতীক তাই পাওয়ারফুল স্পোর্টস বাইকগুলোই তাদের কাছে স্বপ্নের বাইক হবে এটাই স্বাভাবিক।
১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী যেকোনো বাইক লাভার তরুনকে জিজ্ঞেস করুন তার ড্রিম বাইক কোনোটা?
দেখবেন এক নিশ্বাসে বলে দিচ্ছে Yamaha R1M, Hayabusa 1300, Kawasaki H2R, Ducati Panigale, অথবা Honda CBR 1000RR এর নাম।
বাংলাদেশে স্পোর্টস বাইক লাভারদের ক্রেজ আরো বেশি, সিসি-লিমিটের কারনে হাইসিসি বাইক দেশে এভেইলেবল নয় বলে তাদের আফসোসের সীমা নেই।
কমিউটার বাইক মুলত তৈরি করা হয় শহরে বা গ্রামে অল্প দুরত্বে দৈনিক যাতায়াতের চাহিদা পুরনের জন্য।
অফিস যাওয়া আসা ২০-৫০ কিমির মধ্যে চলাচলের জন্য কমিউটার বাইকগুলোকে উপযোগী করে বানানো হয়।
কমিউটার বাইকের ইঞ্জিন সাধারণত খুব বেশি পাওয়ারফুল হয় না বরং ফুয়েল ইফিসিয়েন্সির দিকে বেশি নজর দেয়া হয়।
দেখা যায় বেশিরভাগ কমিউটার বাইকগুলো ১২৫ থেকে ২৫০ সিসির মধ্যেই হয়ে থাকে, তাই এই বাইকগুলোর প্রাইস ও হাতের নাগালেই থাকে।
দৈনন্দিন কাজে আরামে চলাচলের জন্য কমিউটার বাইকের সীটিং পজিশন বেশ আপরাইট হয়ে থাকে ফলে বাইকগুলো মোটামুটি আরামদায়ক হয়৷
কমিউটার বাইকের ব্যালেন্স, ব্রেকিং এবং কন্ট্রোলিং যেন সহজ হয় সেদিকেও লক্ষ্য রাখা হয়, আর তাই কমিউটার বাইকগুলোতে ডায়মন্ড, সিংগেল ক্রাডল, পেরিমিটার অথবা ডাবল ক্রাডল ফ্রেম সবচেয়ে বেশি ব্যাবহৃত হয়৷
উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কমিউটার বাইকের বহুল ব্যাবহার হতে দেখা যায়।
আমাদের দেশেও অন্যান্য সেগমেন্টের বাইকের চেয়ে কমিউটার বাইকগুলোর চাহিদা এবং ব্যাবহার সবচাইতে বেশি।
আমাদের দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় কিছু ১৫০ সিসি সেগমেন্টের কমিউটার বাইক হচ্ছে Yamaha Fzs, Honda Hornet, Bajaj Pulsar, Suzuki Gixxer ইত্যাদি।
অন্য ক্যাটাগরির বাইকগুলো নিয়ে আরেকদিন কথা বলবো। আপনারা কোন কোন ক্যাটাগরির বাইক সম্পর্কে জানতে চান বা অনেক বেশি আগ্রহী তা কমেন্টে লিখে আমাদেরকে জানাতে পারেন।
অবশ্যই হেলমেট পড়ে বাইক চালাবেন এবং ট্রাফিক রুলস মেনে চলবেন৷