দুর্ঘটনা থেকে বাচার গোপন মন্ত্র

আগস্ট 16, 2022

দুর্ঘটনা থেকে বাচার গোপন মন্ত্র
কালেকশনে কয়টা সার্টিফাইড এবং দামি দামি হেলমেট আছে অথবা কয়জোড়া রাইডিং বুট অথবা কয়টা বডি আর্মার আছে সেই শো অফের প্রতিযোগিতায় না নেমে রাইডিং স্কিল আপডেটের প্রতিযোগিতায় নামুন ।

DOT/ECE/SNELL যত সার্টিফিকেশনই থাকুক না কেন একটি পর্যাপ্ত আঘাত যেকোনো কিছুকেই ভেঙে দিতে সক্ষম…

যত ভারী আর মোটা রাইডিং জ্যাকেট পরুন না কেন বেকায়দায় পড়লে জ্যাকেট আপনার হাড়কে ভেংগে যাওয়া থেকে বাচাতে পারবে না…

কারন সব ধরনের সেফটি গিয়ারের সুরক্ষা দেয়ার একটা লিমিট আছে, যেটা অতিক্রম করলেই সেই গিয়ার আপনাকে সুরক্ষা দিতে ব্যার্থ হয়।

বলছি না সেফটি গিয়ারের কোনো প্রয়োজন নেই, কিন্ত সেফটি গিয়ার ব্যাবহারের পাশাপাশি এটাও মনে রাখতে হবে যে সেফটি গিয়ার আপনাকে অমরত্ব দান করেনা, শুধুমাত্র এক্সিডেন্ট ঘটলে ক্ষেত্রবিশেষে ভাগ্য ভালো হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান কিছুটা কমাতে পারে৷

আরো পড়ুন

তাই আপনার কালেকশনে কয়টা সার্টিফাইড এবং দামি দামি হেলমেট আছে অথবা কয়জোড়া রাইডিং বুট অথবা কয়টা বডি আর্মার আছে সেই শো অফের প্রতিযোগিতায় না নেমে রাইডিং স্কিল আপডেটের প্রতিযোগিতায় নামুন ।

আছাড় খেয়ে এসে হেলমেটের শেলের ছবি পোস্ট করে হেলমেটের ব্রান্ডের প্রশংসা করার চেয়ে অক্ষত অবস্থায় ঘরে ফেরা উত্তম । তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে হেলমেটের নেগেটিভ রিভিউ দেয়ার মত রাইডার বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বেচে থাকেন না। কারন মাথায় ইম্প্যাক্ট পড়লে মৃত্যু ঝুকি অনেক বেড়ে যায়৷

এমন প্রচুর বাইকার দেখেছি, যারা সাধারণ হেলমেট পরে বিগত ২৫/৩০ বছর ধরে বাইক চালাচ্ছেন কোন দুর্ঘটনার স্বীকার না হয়েই অথচ আজকালকার অনেক বড় বড় এচিভমেন্ট ওয়ালা বাইকাররা সার্টিফাইড হেলমেট আর বডি আর্মর পড়েও ঘন্টায় ঘন্টায় আছাড় খান আবার সেফ রাইড নিয়ে স্লোগানও দেন । তারা মনে করেন সেফটি গিয়ার পরলাম মানেই এক্সিডেন্ট প্রুফ হয়ে গেলাম।

সেফটি গিয়ার পড়ে রাইড করার সময় এই ওভার কনফিডেন্সের কারনে রেকলেস রাইডিং বা বেশি ঝুকি নেয়ার প্রবনতা লক্ষ্য করা যায় যা একেবারেই অনুচিত।

#

আরো পড়ুন

নিচে কয়েকটা গুরুত্বপূর্ণ টিপস দিচ্ছি যেগুলো জানলে এবং মানলে দুর্ঘটনার ঝুকি অনেকটাই কমে আসতে পারে৷

১। নিজের রাইডিং লিমিট জানুন। আয়ত্বের বাইরে বা নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায় এমনভাবে কখনো থ্রটল টানবেন না।

২। বাইকের ব্যালেন্স, কন্ট্রোলিং এর দিকে সর্বোচ্চ মনোযোগী হোন, কারন এক সেকেন্ডের ভুল বা অসাবধানতায় মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে।

তাই রাইড করার সময় সসম্পুর্ন মনোযোগ শুধু রাইডিং এ দিন।

৩। কত দ্রুত গতি ওঠে সেটা না ভেবে বাইক কেনার সময় খেয়াল রাখুন দ্রুত গতি কমানোর জন্য বাইকটি কতটা সাপোর্টিভ ।

৪। আপনার বাইকের ব্রেকিং সিস্টেম কতটা ভালো, বাইকের ওজন কতটা ব্যালেন্সড এবং হার্ড ব্রেক করতে কি পরিমান প্রেশার এবং কতটুকু জায়গা প্রয়োজন এই বিষয়ে যথেষ্ট ধারনা নিয়ে নিন।

নিয়মিত অনুশীলন করুন।

৫। রোড ল্যাংগুয়েজ বুঝে রাইড করুন । বাজার এলাকা, স্কুল কলেজ এবং জনাকীর্ণ রাস্তায় গতি যতটা সম্ভব কম রাখুন।

৬। মনে রাখবেন বেকায়দায় পড়লে আর্মর বা হেলমেট আপ্নাকে রক্ষা করার ক্ষমতা রাখে না তাই বেকায়দা সিচুয়েশনে যেন না পড়েন সেই অনুযায়ী রাইড করবেন । গতি অনুযায়ী দূরদৃষ্টি রাখুন এবং চারপাশের যানবাহনের গতি প্রকৃতি নজরে রাখুন।

৭। পাল্লাপাল্লি, চাপ দেয়া, লুকিং গ্লাস ফলো না করা, ওভারস্পিডিং করা নিজের জন্য ও অন্যের জন্য বিপদজনক, তাই এই কাজগুলো থেকে বিরত থাকুন।

এক কথায়, আপ্নার রাইডিং স্কিলই আপনাকে দুর্ঘটনার হাত থেকে বাচাতে পারে, আর ভালো হেলমেট এবং সেফটি গিয়ার দুর্ঘটনা ঘটার পর ক্ষতির পরিমান কিছুটা কমাতে পারে । তাই সেফটি গিয়ারের উপর নয়, ভরসা করুন নিজের রাইডিং স্কিলের উপর । এটাই দুর্ঘটনার হার কমিয়ে আনার অন্যতম উপায় । মাত্র ২০% অতিরিক্ত সচেতনতা আপনাকে ৮০% দুর্ঘটনার ঝুকি কমিয়ে দিতে পারে।

PREVENTION IS BETTER THAN CURE .

লেখাঃ ইকবাল আবদুল্লাহ রাজ

এডমিন - কিউরিয়াস বাইকার ডট কম।