বর্ষা ও শীতের সময় বাইকের মেইন্টেনেন্স

এপ্রিল 23, 2022

বর্ষা ও শীতের সময় বাইকের মেইন্টেনেন্স

বাংলাদেশে শীতকাল খুবই অল্প সময়ের জন্য আসে। আবার বর্ষাতেও বাইক ব্যাবহার করতে কিছু ডিফিকাল্টি ফেস করতে হয়।

শীতে এবং বর্ষায় যেমন আমাদের নিজেদের শরীরের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন পড়ে যেমন ভ্যাসলিন বা কোল্ডক্রীম ব্যবহার, গরম কাপড় ব্যবহার ইত্যাদি নাহলে ঠান্ডা জনিত রোগে পড়তে হয়, তেমনি শীত এবং বর্ষাকে কেন্দ্র করে বাইকের কিছু সমস্যা দেখা দেয় যা মাঝে মাঝে বাইকারকে বিপদে ফেলে দেয়। বাইকের সামান্য কিছু যত্ন আর সতর্কতা বাইকের বিভিন্ন সমস্যার হাত থেকে দূরে রাখে।

এক কিকেই স্টার্টঃ

শীতের সকালে বাইক স্টার্ট না নেয়া অনেক সময়ে বাইকারদের জন্য আতংকের কারন হয়ে দাড়ায়। সেল্ফতো নিতেই চায় না, কিকেও কাজ হয় না। শীতকালে সকল পদার্থেরই সংকোচন হয়। তাই পেট্রোলের ঘনত্ব স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেড়ে যায়। এছাড়াও ইনজিন ঠান্ডা থাকায় স্পার্ক থেকে সহজে আগুন ধরতে চায় না। এ ক্ষেত্রে চোক টেনে কিক দিয়ে স্টার্ট দিন। সেল্ফস্টার্ট থাকলেও শীতের দিনে অন্তত প্রথমবার চোক টেনে কিক স্টার্ট দিয়ে স্টার্ট দিন। পরের থেকে সেল্ফ ব্যবহার করতে পারেন।

তেলের মানঃ

অকটেনের সাথে সামান্য অকটেন বুস্টার মিশিয়ে নিন

শীতকালে ফুয়েল বুস্টার ব্যবহার করলে কোল্ড স্টার্ট সহজ হয়। তবে ভালো মানের অক্টেন পেলে বুস্টার ব্যাবহার করার প্রয়োজন নেই।

তবে বর্ষার সীজনে যেহেতু বাতাসে আদ্রতা বেশী থাকে এবং প্রচুর বৃষ্টি হয় তাই বাইক ভেজার সময় ফুয়েল ট্যাংকের মুখটা পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখার চেস্টা করুন যেন পানি ঢুকতে না পারে।

প্লাগ পরিস্কার রাখুনঃ

খুবই গুরুত্বপূর্ন বিষয়। শীতে এবং বর্ষায় বাইকের প্লাগটি পরিস্কার রাখুন। প্রয়োজনে শীতকালের জন্য একটি নতুন স্পার্ক প্লাগ ব্যবহার করতে পারেন। এতে শীতকালের অনাকাংখিত যন্ত্রনা থেকে বেচে যাবেন।

বাইক ঢেকে রাখুনঃ

বাইরে বাইক রাখলে ঢেকে রাখুন। এতে শীতের কুয়াশা এবং বর্ষার আদ্রতা বাইককে ভেজাতে পারবে না, বাইক ভালো থাকবে।

ব্যাটারীর চার্জ চেক করুনঃ

অনেক বাইকেই কিক স্টার্ট এর ব্যবস্থা নেই তাই চাইলেও কিক দিয়ে স্টার্ট সম্ভব নয়। ঠান্ডা আবহাওয়ায় যেহেতু স্টার্ট এর কিছু সমস্যা তৈরী হয় তাই ব্যাটারীতে সব সময় পর্যাপ্ত চার্জ থাকে সেদিকে দৃষ্টি রাখুন।

চেইনের যত্ন নিনঃ

শীতকালে চেইনে ব্যবহৃত অয়েল এবং ময়লার মিশ্রন জমে শক্ত হয়ে যেতে পারে। যা গরমের সময়ের থেকে বেশি দ্রুত হয়ে থাকে। তাই এ সময়ে চেইনের যত্ন একটু বেশি প্রয়োজন হতে পারে। আবার বর্ষায় কাদা পানি চেইনে লেগে গেলে রাইডের পর অবশ্যই ক্লিন করে লুব দিয়ে রাখবেন। মনে রাখবেন কাদাপানিতে ভেজা চেইনে সহজেই মরিচা ধরতে পারে৷

সঠিক গ্রেডের ইনজিনওয়েল ব্যবহারঃ

প্রতিটি বাইকের কোম্পানী কর্তৃক নির্ধারিত গ্রেডের ইনজিনওয়েল ব্যবহার করা ভালো। ঠান্ডা সীজনে সিনথেটিক ইনজিনওয়েল ব্যবহার করা ভালো৷

টায়ারে বাতাসঃ

অতি শীতে টায়ারে বাতাসের সংকোচন হয়ে আয়তন কমে যেতে পারে, সেক্ষেত্রে স্বাভাবিক মাপের চেয়ে সামান্য বেশি হাওয়া রাখতে পারেন টায়ারে।

অনেক দিন বাইক না চালানো হলেঃ

শীতে যদি আপনার বাইক নিয়মিত ব্যবহারের সুযোগ না হয় তাহলে অন্তত প্রতিদিন বাইকটি স্টার্ট দিয়ে কিছুক্ষন রেখে দিন। এতে যে কোনো সময় বাইকটি রাইডের জন্য প্রস্তুত থাকবে।

অন্যান্য সময়ের স্বাভাবিক যত্নের চেয়ে ২/১টি দিকে অতিরিক্ত খেয়াল রাখলেই আপনার বাইক ভালো থাকবে, বর্ষা ও শীতে। এছাড়াও শীতে বাইক চালাতে হলে নিজের পোশাকের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে যেনো সহজে ঠান্ডা লেগে না যায়।

জ্যাকেটের নিচে উইন্ডব্রেকার পড়লে উপকার পাবেন।

আর বর্ষায় বাইক নিয়ে বের হলে রেইনকোট ছাড়া বের হবার কথা ভুলেও চিন্তা করবেন না।

হ্যাপি বাইকিং।