বাইক চুরির আতংক? বাচবেন কিভাবে?

অক্টোবর 04, 2022

বাইক চুরির আতংক? বাচবেন কিভাবে?
মোটরসাইকেল কেনার পর প্রথমে যেই বিষয়ের উপর সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া উচিত তা হলো মোটরবাইকের নিরাপত্তা। কারন মোটরবাইক চুরির ঘটনা ঘটছে অহরহ, এবং চুরি যাওয়া বাইক ফেরত পাবার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। পত্র পত্রিকা এবং ফেসবুকে চুরি যাওয়া বাইকের সংবাদ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

বাইকারদের কাছে তার মোটরবাইক কতটা প্রিয় তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আর তরুন বাইকারদের হাতে হাতে এখন পৌছে গেছে অনেক দামী দামী স্পোর্টস এবং ন্যাকেড স্পোর্টস সেগমেন্টের বাইক যার বাজারমুল্য ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা।

তাছাড়া দৈনন্দিন প্রয়োজনে লাখ লাখ মানুষ এখন বিকল্প বাহন হিসেবে কমিউটার মোটরসাইকেল ব্যাবহার করে যার বাজারমুল্যও নেহাত কম নয়।

তাই মুল্যবান এসব মোটরসাইকেল কেনার পর প্রথমে যেই বিষয়ের উপর সবচেয়ে গুরুত্ব দেয়া উচিত তা হলো মোটরবাইকের নিরাপত্তা। কারন মোটরবাইক চুরির ঘটনা ঘটছে অহরহ, এবং চুরি যাওয়া বাইক ফেরত পাবার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। পত্র পত্রিকা এবং ফেসবুকে চুরি যাওয়া বাইকের সংবাদ দিন দিন বেড়েই চলেছে।

আরো পড়ুন:

অনেক বাইকারই আছেন যারা বিষয়টি নিয়ে বেশ উদাসীন, আবার অনেকেই আছেন সচেতন, সেই সাথে অনেকেই জানেন না কিভাবে তার প্রিয় মোটরবাইকটিকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দেয়া যায়।

তাই আজকে আমরা আলোচনা করবো মোটরবাইকের নিরাপত্তা নিয়ে।

ভেবে দেখুন, আপনি প্রতিদিন অফিস যাতায়াত এবং সময় বাচিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ সারার জন্য যে মোটরসাইকেলটি ব্যাবহার করেন তার দাম ৫ লাখ টাকা। যখন আপনি বাইকটা পার্ক করে কাজে যান তখন মাথায় এই ৫ লাখ টাকার সমান দুশ্চিন্তার বোঝা নিয়ে আপনি কাজে মনোযোগ দিতে পারেন না। দুর্ভাগ্যবশত যদি বাইক টা চুরি হয়ে যায় তাহলে আপনাকে আরেকটি বাইক কিনতে হবে কারন বাইক আপনার প্রয়োজন। তাই বিরাট অংকের আর্থিক ক্ষতি থেকে বাচতে বাইকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কোন বিকল্প নেই।

আসুন জেনে নেই কিভাবে আপনি বাইকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন?

সাধারণত আমরা হাইড্রলিক লক ব্যাবহার করে থাকি, কিন্ত বাজারে এভেইলেবল হাইড্রলিক লকগুলো তেমন মানসম্মত নয় এবং সহজেই এইসব লক কাটা বা ভাংগা যায়। তাই আমি সাজস্ট করবো সাধারণ হাইড্রলিক লকের পরিবর্তে মজবুত তালা ব্যাবহার করতে। উদাহরণস্বরপ ইন্ডিয়ান মোবাজ, সেভেন লিভার অথবা লিংক ব্রান্ডের তালা কিনতে পারেন। এই তালাগুলো বেশ মজবুত যার কারনে দেখবেন স্বর্ন বা জুয়েলারি দোকানে এইসব তালা বেশি ব্যাবহার করা হয়।

যদি বাজেট আরেকটু বাড়াতে পারেন তাহলে তালার পাশাপাশি সিকিউরিটি সিস্টেম এলার্ম জাতীয় লক ইন্সটল করে নিন। এখন প্রশ্ন হলো সিকিউরিটি সিস্টেম বাইকের ব্যাটারির ক্ষতি করে কিনা?

উত্তর হলো, বাজারের সাধারণ মানের সিকিউরিটি লকগুলো ব্যাটারির উপর চাপ ফেলতে পারে এবং অনেক সিকিউরিটি সিস্টেম আছে যেগুলা ইন্সটল করার জন্য বাইকের ওয়ারিং এর তার কাটাছেড়া করতে হয় তাই বাইকের ওয়ারেন্টি কভারেজ পেতে সমস্যা হতে পারে৷

সমাধান হিসেবে, TASSLOCK ব্রান্ডের মিলিটারি গ্রেড অটোমেটিক সেন্সর লক হতে পারে আপনার বাইকের নিরাপত্তা প্রহরী। এই ব্রান্ডের লকগুলো ইন্সটল করতে বাইকের কোনো তার কাটার প্রয়োজন পড়ে না এবং বাইকের ব্যাটারির উপর কোনো চাপ ফেলে না। সাইলেন্ট মুড, কি লেস স্টার্ট, রিমোট নোটিফিকেশন এলার্ট সহ দারুন সব সিকিউরিটি ফিচার আছে Tasslock এর ডিভাইসগুলোতে৷ বাইকে Tasslock ইন্সটল করা থাকলে বাইপাস করে, তার কেটে, ডিভাইস খুলেও বাইক স্টার্ট করা কঠিন।

অনেক বছর ধরে বাংলাদেশে ভালো সার্ভিস দিয়ে নির্ভরযোগ্য সিকিউরিটি সিস্টেম হিসেবে ট্যাসলক সুনাম অর্জন করেছে৷ তবে অবশ্যই সিকিউরিটি সিস্টেম ইন্সটল করাতে হবে অভিজ্ঞ হাতে তবেই ভালো সার্ভিস পাবেন।

সিকিউরিটি সিস্টেমের উপর সবচেয়ে বেশি জোর দেয়ার কারন হলো, পৃথিবীর যেকোনো চোর দুইটা জিনিসে ভয় পায়,

১। শব্দ এবং

২।আলো ।

শব্দ এবং আলো যেখানে উপস্থিত চোর সেখানে চুরি করার ঝুকি নেয় না।

বাইকে সিকিউরিটি সিস্টেম থাকলে সেই বাইক ধরলেই বিকট শব্দের এলার্ম বেজে উঠে যার ফলে চোর সেই বাইক চুরি করার বদলে সেখান থেকে পালানোর পথ খোজে।

এই শব্দই আপনার বাইকের নিরাপত্তা দেয়ার মুল কাজটি করে থাকে।

বাইক নিরাপদ আছে কিনা তা জানতে এবং যেকোনো দুরত্ব থেকে বাইকের উপর নজরদারি করতে GPS ট্র‍্যাকারও খুব কার্যকরী।

বর্তমানে জিপিএস ট্র‍্যাকার গুলোতে লক/আনলক, রিয়েল টাইম লাইভ ট্র‍্যাকিং, রুট হিস্টোরি, অন/অফ নোটিফিকেশন সহ অনেক সিকিউরিটি ফিচার থাকে যার ফলে বাইক নিয়ে বাড়তি টেনশন করার প্রয়োজন হয় না।

যারা ব্যাটারি বাচানোর চিন্তায় সিকিউরিটি লক ব্যাবহার করতে চান না তাদের ভাবা উচিত, একটা ব্যাটারির দাম সর্বোচ্চ ১২০০ থেকে ১৬০০ টাকা আর বাইকের দাম ২ থেকে ৫ লাখ। তাই সামান্য ব্যাটারি নিয়ে টেনশন না করে মোটরসাইকেলটি চোরের হাত থেকে বাচানো বুদ্ধিমানের কাজ।

সাধারণত একটা ব্যাটারির লাইফটাইম থাকে দেড় থেকে দুই বছর। সিকিউরিটি সিস্টেম বা জিপিএস ইউজ করলেও দুই বছরের আগে ব্যাটারি নস্ট হবার তেমন সুযোগ নেই যদি আপনার বাইকের ওয়ারিং এবং চার্জিং ইউনিটে কোন সমস্যা না থাকে।

যত নিরাপত্তামুলক ব্যাবস্থাই গ্রহন করুন না কেন তা কোনো কাজে আসবে না যদি আপনি সচেতন না থাকেন, তাই ৩ টি টিপস মনে রাখুন এবং মেনে চলুন,

১। নির্জন জায়গায় বাইক পার্ক করবেন না।

২। নিয়মিত যাতায়াত করেন এমন স্থানে গেলে প্রতিবার একই জায়গায় বাইক রাখবেন না৷

৩। রাতে হাইওয়েতে মহিলা বা বাচ্চা সিগনাল দিলে দাড়াবেন না, এগুলো ছিনতাইকারিদের পাতা ফাদ হতে পারে।

বাইকের নিরাপত্তা নিয়ে আপনার যেকোনো জিজ্ঞাসা এবং অভিজ্ঞতা কমেন্টে লিখে আমাদেরকে জানাতে পারেন৷ নিরাপদ থাকুক আপনার বাইক।