ভুল গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ইঞ্জিনের কতটা ক্ষতিকর

মার্চ 04, 2022

ভুল গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ইঞ্জিনের কতটা ক্ষতিকর

বাইক কোম্পানি থেকে ইঞ্জিন অয়েল গ্রেড ও ব্রান্ড রিকমেন্ড করে দেয় এবং দেখা যায় রিকমেন্ড করা ব্রান্ডের অয়েল তারাই ইমপোর্ট করে। বলে দেয়া হয় রিকমেন্ডেশন ফলো না করলে ইঞ্জিন ওয়ারেন্টি ভায়োড হবে, এতে আমরা অনেকেই কোম্পানি গুলোকে ভুল বুঝি, মনে করি কোম্পানি অয়েল বেচে লাভ করার জন্যই বুঝি নিয়ম বেধে তাদের অয়েল কিনতে বাধ্য করছে আমাদের, বিষয়টা কি আসলেই এমন???

কোম্পানি ব্রান্ড এবং গ্রেড রিকমেন্ড করে দেয় যেন বাইরে থেকে নকল বা নিম্ন মানের ওয়েল কিনে ইঞ্জিনের বারোটা যেন না বাজানো হয় সেই কারনে।

অনেকে বলেন “ভুল গ্রেড ইউজ করার পরেও বাইকে কোনো সমস্যা হয় নি।”

এটা সম্পুর্ন ভুল ধারনা, ভুল গ্রেড ইউজ করলে বাইক চলবে ঠিকই কিন্ত মাইলেজ ড্রপ করতে পারে এবং লংটার্ম ইউজে ইঞ্জিন পার্ফমেন্স এবং ডিউরেবিলিটি ড্রপ করবে, ক্লাচ সেকশনেও এফেক্ট পড়তে পারে।

ঘটনাটা খুবই স্লো প্রোসেসে ঘটে, তাই চট করেই বুঝা যায়না। আমি নিজেও না জানার কারনে এক সময় ভুল গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ইউজ করতাম। গাড়ির ইঞ্জিন অয়েল বাইকে ঢালতাম MA/MA2 , Jaso এইসবের ধার ধারিনি, কিন্ত যখন থেকে রিকমেন্ডেশন ফলো করা শুরু করলাম তখন বুঝতে পারলাম আগের চেয়ে বেটার পার্ফমেন্স পাচ্ছি, এক্সিলারেশন এবং মাইলেজও বেশি পাচ্ছি।

ভাইব্রেশন, মাইলেজ, হিটিং ইস্যু, ড্রেইন পিরিওড, সাউন্ড, এক্সিলারেশন এই ব্যাপারগুলো নিয়ে আগে মানুষ এখনকার মত এত সচেতন ছিলো না আর নকল অয়েলও বাজারে কম ছিলো।

তবে যেকোন ব্রান্ডের অয়েলই ভালো যদি সেটা ভেজাল বা নকল না হয়, এবং ম্যানুফ্যাকচারার কর্তৃক নির্ধারিত গ্রেডের হয়।

তবে বার বার ব্রান্ড না বদলানোই ভালো, কারন অয়েল ইঞ্জিনে স্যুট করতে বেশ সময় লাগে।

আমাদের দেশের ফুয়েল নিম্নমানের বিধায় অয়েল দ্রুত নস্ট হয়, আর কোম্পানি যেহেতু ইঞ্জিনের ওয়ারেন্টি দিচ্ছে তাই নকল অয়েল ভরে ইঞ্জিনের ১৩ টা বাজালে সেই দ্বায়ভার কোম্পানি বা ডিলার নেবে কেন???

ধরুন, আপনার হাতের ফোনটির চার্জিং সাপোর্ট ৫ ভোল্ট, ১০ ওয়াট। আপনি যদি দ্রুত চার্জ করার জন্য ৩০ ওয়াটের নট রিকমন্ডেড চার্জার ইউজ করেন এবং এতে যদি ফোনের সার্কিট বা ব্যাটারি নস্ট হয় এইক্ষেত্রে কি আপনি ওয়ারেন্টি দাবি করে কভারেজ পাবার এলিজিবিলিটি রাখেন???

এইসব কারনে কোম্পানি ব্রান্ড এবং গ্রেড রিকমেন্ড করে দেয়, এটা মানার পরেও যদি ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দেয় তবে তারা সেটার দ্বায়ভার নিবে, এবং এটা যৌক্তিক।

অয়েল কেনার সময় সবচেয়ে বেশি যেই বিষয়ের উপর গুরুত্ব দেবেন তা হচ্ছে যেই অয়েল টা কিনছেন সেটা জেনুইন কিনা, তবে যেহেতু বোতল দেখে নকল অয়েল আর আসল অয়েল চেনা অত্যন্ত কঠিন। কারণ নকল অয়েলের বোতলটা আসলই হয় তাই সর্বোচ্চ চেস্টা করবেন অথোরাইজড ডিলার পয়েন্ট থেকে অয়েল সংগ্রহ করতে, এবং অয়েল রিফিল করার পর অবশ্যই বোতল টা নস্ট করে ফেলবেন।

ভালো থাকুক আপনার বাইকের ইঞ্জিন।

লেখাঃ ইকবাল আব্দুল্লাহ (রাজ)

এডমিন #Curious Biker