মোটর বাইকের ব্যাটারি কতদিন টিকে?

মার্চ 07, 2022

মোটর বাইকের ব্যাটারি কতদিন টিকে?

মোটরবাইকের ব্যাটারি কতদিন বাচে আর কেনইবা দ্রুত মারা যায়?

আপনি কি জানেন?

আপনার মোটরসাইকেল ব্যাটারির স্থায়িত্ব কেন কমে যাচ্ছে? আপনার বাইকের ব্যাটারী দীর্ঘ স্থায়ী করতে প্রয়োজন যথাযথ যত্ন এবং রক্ষণাবেক্ষণের।

প্রথমে জানা দরকার বাইকের ব্যাটারি সাধারণত কত মাস স্থায়ী হওয়া উচিত?

ব্যাটারি নির্মাতারা বলেন, একটি মোটরসাইকেল ব্যাটারি ১৮ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৪৮ মাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবের কারণে ব্যাটারিটির অনধিক মৃত্যুর হয়।

এই আর্টিকেল টি পড়ে আপনি জানতে পারবেন কী কী কারনে আপনার বাইকের ব্যাটারি নষ্ট হয় ও এর প্রতিকার।

ব্যাটারি ওভারলোডিং

আপনি যদি আপনার বাইককে বিয়ে বাড়ির মত সাজাতে চান তবে মনে রাখবেন এটি আপনার বাইকের ব্যাটারি উপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করবে। হা আপনি কিছু উপকরন লাগাতেই পারেন, তবে তা স্থাপনের পর বাইকের ইঞ্জিন এবং সমস্ত আনুষাঙ্গিক এক সঙ্গে চালু করে ব্যাটারি এর ভোল্টেজ পরীক্ষা করবেন। যদি ভোল্টেজ ৯ ভোল্টের চেয়ে কম হয় তবে আপনার বাইকের ব্যাটারি মৃত্যু ঝুঁকিতে রয়েছে ।

ত্রুটিপূর্ণ ভোল্টেজ রেগুলেটরঃ

যারা অধিক সময় বা অনেক লম্বা সময় রাইড করেন তাদের বাইকে এই সমস্যা টি বেশি হয়ে থাকে। লম্বা সময় রাইড করলে ত্রুটিযুক্ত নিয়ন্ত্রক বা বিকল্পগুলি ব্যাটারির জীবনকে হ্রাস করে। এতে বাইকের ব্যাটারি খুব দ্রুত কার্যক্ষমতা হারায়। ত্রুটিপূর্ণ ভোল্টেজ রেগুলেটর চলন্ত অবস্থায় আপনার বাইককে বন্ধ করে দিতে পারে। এর জন্য প্রয়োজন একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর বাইকের রেগুলেটর ও এর সাথে সংযুক্ত সকল পার্টস সঠিক ভাবে আছে কিনা পরিক্ষা করা।

খারাপ সংযোগঃ

ভালো করে খেয়াল করুন ব্যাটারির সাথে সংযোগ স্থাপনকারি সকল পার্টস গুলি ঠিক মত লাগানো আছে কিনা। প্রতিবার চার্জ দেবার সময় সঠিক পরিমানে চার্জ দেওয়া হয়েছে কিনা লক্ষ করুন। সংযোগ গুলিতে জং ধরেছে কিনা পরিক্ষা করুন। যদি প্রয়োজন হয়, সংযোগগুলি পরিষ্কার করতে হালকা স্যান্ডপ্যাড বা স্কচ ব্রাইট ব্যবহার করুন।

তাপ এবং কম্পনঃ

কিছু কিছু বাইকের ব্যাটারি বাইকের ইঞ্জিন থেকে উৎপন্ন তাপ ও বাইকের অতিরিক্ত কম্পন সহ্য করতে পারে না। এতে ব্যাটারির স্বাভাবিক ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। এক্ষেত্রে এজিএম ব্যাটারী এবং জেল সেল ব্যাটারি বেশি পরিমাণে তাপ ও কম্পন নিতে পারে।

আপনি জনলেন কী কী কারনে আপনার বাইকের ব্যাটারি তে সমস্যা হতে পারে। এবার আসুন জেনে নেই বাইকের ব্যাটারী ভালো রাখার কিছু টিপস

০১ । প্রতি মাসে একবার আপনার মোটরসাইকেল ব্যাটারি কার্যক্ষমতা পরিক্ষা করুন।

০২ । লম্বা রাইড দেওয়ার পর ব্যাটারি টি পরিক্ষা করুন ,সকল সংযোগ সঠিক আছে কিনা।

০৩ । ব্যাটারি সাধারণত গরম হয় বা অপেক্ষাকৃত বেশি হয় কিনা পরিক্ষা করুন।

০৪ । ব্যাটারি তে কোন ফুটো বা ক্র্যাক আছে কিনা পরীক্ষা করুন।

০৫ । যতটা সম্ভব ব্যাটারি লোড হ্রাস করুন।

০৬ । সকালের প্রথম ষ্টার্ট এর সময় কিক ব্যাবহার করুন।

০৭ । হেডলাইট জ্বালানো অবস্থায় সেল্ফ দেবেন না, এতে ব্যাটারি তে প্রচন্ড চাপ পড়ে ।

০৮ । সস্তা দামের HID ব্যাবহার না করাই ভালো, কেননা সস্তা HID বালব গুলো সঠিক ওয়াটের হয়না, ফলে ব্যাটারী দ্রুত নষ্ট হয়, HID ব্যাবহার করতে হলে ভালোব্রান্ডের ও আপনার বাইকের হেডলাইটের ওয়াট এর সাথে ওয়াট মিলিয়ে কিনুন।

০৯ । অনেকে শখ করে LED ষ্ট্রিপ দিয়ে বাইককে বিয়ে বাড়ীর মত সাজান, এটাও আপনার বাইকের ব্যাটারি ও ওয়্যারিং এর জন্য ক্ষতিকর।

১০ । রাতে ট্রাফিক জ্যামে বা সিগনালে লম্বা সময় দাড়িয়ে থাকতে হলে হেডলাইট অফ করে রাখুন, ইচ্ছা করলে ইঞ্জিনও বন্ধ রাখতে পারেন এতে তেলের ও অপচয় রোধ হবে।

১১ । প্রতি মাসে অন্তত একবার আপনার বাইকের সাথে থাকা লিকুইড সেল ব্যাটারিটির ওয়াটার লেভেল চেক করুন, লেভেল লো হয়ে গেলে ডিস্টিলড ওয়াটার দিয়ে লেভেল পুর্ন করে দিন।

বাইকের সাথে আসা ষ্টক ব্যাটারী টি অনেক সময় ভাল কোয়ালিটির হয়না তাই ব্যাটারী পাল্টানোর সময় একটু বেশি টাকা লাগলেও ভালো ব্রান্ডের ব্যাটারি কেনার চেস্টা করুন, অবশ্যই আপনার বাইকের স্টক ব্যাটারি র সাথে এম্পিয়ার মিলিয়ে ব্যাটারি কিনবেন।

এখানে আমি আমাদের মোটরবাইক ব্যাটারি সম্পর্কিত প্রতিটি পয়েন্ট স্পর্শ করার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি মনে করে আরও কিছু বাকি আছে তবে কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেন না ।