যে কারণে বাইকের ডিস্কে (ব্রেকে) সমস্যা হতে পারে?

আগস্ট 08, 2019

যে কারণে বাইকের ডিস্কে (ব্রেকে) সমস্যা হতে পারে?
মোটর সাইকেলের ব্রেক সিস্টেম বা ব্রেক ব্যবস্থা হল বাইকেরই একটি সাধারণ অংশ । এটা বাইকের প্রধান নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা যা বাইকটিকে চালানোর উপযোগী করে তোলে । ব্রেক তৈরীর ইতিহাস বাইকের উন্নয়নের ইতিহাসের সাথে জড়িত । বাইকের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও এটা আসলে চালকের জীবনের রক্ষক । এই ছোট এবং প্রয়োজনীয় অংশটি বাইকের গতিশক্তিকে তাপে পরিণত করতে ব্যবহৃত হয় । এটাই বাইকের গতি থামায়।

মোটর সাইকেলের ব্রেক সিস্টেম বা ব্রেক ব্যবস্থা হল বাইকেরই একটি সাধারণ অংশ । এটা বাইকের প্রধান নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা যা বাইকটিকে চালানোর উপযোগী করে তোলে । ব্রেক তৈরীর ইতিহাস বাইকের উন্নয়নের ইতিহাসের সাথে জড়িত । বাইকের অবিচ্ছেদ্য অংশ হলেও এটা আসলে চালকের জীবনের রক্ষক । এই ছোট এবং প্রয়োজনীয় অংশটি বাইকের গতিশক্তিকে তাপে পরিণত করতে ব্যবহৃত হয় । এটাই বাইকের গতি থামায়।

আজ আমরা আলোচনা করবো বাইকের ডিস্ক বা ব্রেকের সমস্যা নিয়ে। কিন্তু তার আগে জেনে নেওয়া উচিত ব্রেক কি।

বাইকের ডিস্ক বা ব্রেক সিস্টেম :
তৃতীয় ধরনের ব্রেক সিস্টেম যা উচ্চ গতির বাইকেও অপ্রতুল । কিছু চাইনিজ বাইক যেমন জনসন ও কিনসন বা আকর্ষণীয় কিছু বাইক এ ধরনের উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্রেক ব্যবহার করে । হাইড্রলিক ব্রেক সিস্টেম ব্রেককে কার্যকর করতে ফ্লুইড বা বিশেষ ধরনের তরল ব্যবহার করে । মাস্টার সিলিন্ডার হতে ব্রেকের কাজ শুরু হয় । প্যাডেলটি মাস্টার সিলিন্ডারের সাথে যুক্ত থাকে । যখন চালক প্যাডেলে চাপ দেয় তখন হাড্রলিক ফ্লুইড নির্দিষ্ট জায়গায় চাপ বৃদ্ধি করে ,ফলে এটা ব্রেকের পিস্টনে চাপ দেয় যে কারণে ব্রেক প্যাড ও হুইলের মাঝে সংঘর্ষ ঘটে এবং ফলাফল স্বরূপ বাইককে সম্পূর্ণ রূপে থামিয়ে দেয়।

বাইকের ডিস্ক ব্রেকের সমস্যা জানার আগে আমরা জেনে নেবো ডিস্ক ব্রেকের যত্ন নিয়ে। কিছু বিশেষ নিয়ম মেনে ডিস্ক বা ব্রেকের যত্ন নিতে হয়। চলুন জানা যাক এই ডিস্ক ব্রেকের যত্ন নিয়ে।

ডিস্ক ব্রেকের যত্ন :

১) প্রথমেই মাস্টার সিলিন্ডারের জন্য সঠিক ব্রেক ফ্লুইড বেছে নিতে হবে। মোটরসাইকেলের ডান পাশের হ্যান্ডেল বারে রয়েছে মাস্টার সিলিন্ডারের রিজার্ভ।

২) ডট ৩ বা ডট ৪ ফ্লুইড ব্যবহর করাই ভালো বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। খেয়াল রাখতে হবে, ব্রেক ফ্লুইডের মাত্রা ‘মিনিমাম’ স্তরের নিচে যেন চলে না আসে। যদি ব্রেক ওয়েলের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে কমে আসে, তবে কোথায় ছিদ্র রয়েছে কিনা পরীক্ষা নিন। এ ছাড়া ব্রেক সিস্টেমও পরীক্ষা করে নিন। যদি তার পরও সমস্যা দেখা যায়, তো ওয়ার্কশপে নিয়ে যেতে হবে।

৩) ব্রেক প্যাড এবং ক্যালিপার এবং ডিস্কের মাঝে ময়লা ও ধূলা জমে। এগুলো পানি ও জেট দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। মাস্টার সিলিন্ডার রিফিলিংয়ের সময় অবশ্যই মোটরসাইকেল কম্পানির অনুমোদিত ডিলারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নিন।

৪) ব্রেক ফ্লুইডের জন্য ডট ৩ কিংবা ডট ৪ ব্রেক ফ্লুইডের মিশ্রণ ঘটাবেন না।

ডিস্ক টাইপ ব্রেকের প্রতিটি প্যাডের ওয়্যার ইন্ডিকেটর গ্রুভ পরীক্ষা করতে হবে। যদি প্যাডের ওয়্যার লিমিট গ্রুভ তার কার্নিশে পৌঁছে যার্য়, তবে ব্রেক প্যাড বদলাতে হবে। আসলে ব্রেক প্যাডের অবস্থা নির্ভর করে ব্যবহারের ওপর। কিভাবে মোটরসাইকেল চালান এবং রাস্তার অবস্থার ওপর নির্ভর করে। কিভাবে ব্রেক ধরছেন তার সঙ্গেও ব্রেক প্যাডের মেয়াদ নির্ভর করে। ব্রেক ধরার পর মোটরসাইকেল যেন পিছল না খায় তার জন্য পেছনের ও সামনের ব্রেক সমন্বয় করে চেপে ধরুন।

এবার ফেরা যাক মূল আলোচনায়। আমাদের আজকের আলোচনার আলোচ্য বিষয় হলো ঠিক কি কি কারণে বাইকের ব্রেক বা ডিস্কে সমস্যা হতে পারে। চলুন তবে জানা যাক বাইকের ব্রেক বা ডিস্কে সমস্যা কেন হতে পারে।

বাইকের ডিস্কে বা ব্রেকে সমস্যা হওয়ার কারণ :
ওভারহেটিং :
ওভারহেটিং বাইকের ডিস্ক বা ব্রেকের সমস্যা হওয়ার প্রধান কারণ। ওভারহেটিং বাইকের ডিস্ক ব্রেকে বাঁধার সৃষ্টি করে। অত্যাধিক গরমের কারণে বাইকের ডিস্কে বা ব্রেকে এমন সমস্যা হয়ে থাকে।

গ্র্যাবিং বা আটকে যাওয়া :
বাইকের ব্রেকের অন্যতম একটি সমস্যার নাম গ্র্যাবিং বা আটকে যাওয়া। বাইকের ডিস্ক ব্রেক কয়েকদিন পর পরই পরিষ্কার করতে হয়। পরিষ্কার না করলে বাইকের ডিস্ক বা ব্রেকে জ্যাম লেগে যায়। ফলে যেকোনো সময় বাইকের ডিস্ক ব্রেক আটকে যেতে পারে।

ব্রেকের তরল পদার্থ :
ব্রেকে আমরা এক ধরনের তরল ব্যবহার করে থাকি। এর কারণ হলো ব্রেক অপরিষ্কার হয়ে যেন জ্যাম হয়ে না যায়। কিন্তু এই তরলই ব্রেকের বিপদ ডেকে আনতে পারে। এজন্য নিয়মিত ব্রেকের তরলের মাত্রা পরীক্ষা করতে হয়। আর এই পরীক্ষা নিজে না পারলে সার্ভিস সেন্টারের নেওয়া যায়। অনেকেই ব্রেককে সহজ করার জন্য এমন তরল পদার্থ ব্যবহার করে থাকেন কিন্তু জানেন না এই তরল পদার্থের অতিরিক্ত ব্যবহারের জন্য বাইকের ডেস্ক বা ব্রেকের ক্ষতি হতে পারে।

ব্রেকের এয়ার সিস্টেম :
আমাদের মোটর সাইকেল বা বাইকের ব্রেকিং সিস্টেমে বায়ুর ব্যবহার হয়ে থাকে। কিন্তু অনেক সময় এই বায়ু কার্যকরী ভূমিকা পালন করে না। কারণ অনেক সময় অতিরিক্ত বায়ুর ফলে ব্রেকিং সিস্টেমের ভেতরে তা প্রবেশ করে। আর এজন্য দুর্ঘটনার সম্ভবনাও বেড়ে যেতে পারে। কাজেই ব্রেকের এয়ার সিস্টেমের ক্ষেত্রে সচেতন হওয়া প্রয়োজন। এই এয়ার সিস্টেম বা বায়ুর ফলে বাইকের ডিস্ক ব্রেকের সমস্যা হতে পারে।

মাস্টার সিলিন্ডার :
মাস্টার সিলিন্ডারে তেলের পরিমাণ ঠিক আছে কি না নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। মাস্টার সিলিন্ডারে তেলের পরিমাণ কম বা বেশি হলে তখন সেক্ষেত্রে বাইকের ডিস্ক বা ব্রেকে সমস্যা হতে পারে।

প্লেট আর ডিস্ক প্যাড :
মোটর সাইকেল বা বাইকের প্লেট আর ডিস্ক প্যাডের কারণে মোটর সাইকেল বা বাইকের ব্রেকে সমস্যা হতে পারে। এজন্য উচিত নিয়মিত প্লেট আর ডিস্ক প্যাড পরীক্ষা করা। এগুলোতে ক্রটি থাকার কারণে বাইকের ডিস্ক বা ব্রেক খারাপ হতে পারে।

ব্রেক লিভার :
ব্রেক লিভারের কারণে বাইকের ব্রেক বা ডিস্কে সমস্যা দেখা দেয়। নিয়মিত স্লাইডিং পিন চেক করার বিকল্প নেই। পিন খারাপ হলে ব্রেকে সমস্যা হয়ে থাকে।

টিউনিং :
বাইকের টিউনিংয়ে সমস্যা দেখা দিলে সেটা আস্তে আস্তে ব্রেক বা ডিস্কে জড়িয়ে যেতে পারে। কাজেই বাইকের টিউনিং ঠিক রাখা জরুরী। কেননা বাইকের টিউনিং ঠিক না থাকার কারণে ডিস্কে সমস্যা হতে পারে।

রোটর :
ব্রেক প্যাডসমূহ হুইলের পরিবর্তে রোটরকে চাপ দেয় এবং এই চাপ তারের পরিবর্তে হাইড্রলিকের মাধ্যমে বাহিত হয়। কিন্তু যদি এতে ব্যাঘাত ঘটে তাহলে বাইকের ডিস্কে সমস্যা দেখা দেয়।

পিস্টন :
ডিস্ক ব্রেকের ক্ষেত্রে পিস্টন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ এই সিস্টেমে ব্রেকের কাজ সম্পন্ন হতে পিস্টনের সাহায্যের প্রয়োজন পরে। তেমনি যদি বাইকের পিস্টনে সমস্যা দেখা দেয় তবে তার ফলে বাইকের ডিস্কে সমস্যা হয়ে থাকে।

উপরের আলোচনা থেকে আমরা জানলাম বাইকের ডিস্কে কি কি কারণে সমস্যা হতে পারে। কাজেই যদি আমরা এসব কারণ সম্পর্কে জানি এবং অবগত থাকি তবে খুব সহজেই বাইকের ডিস্ক (ব্রেক) সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারি বা বিরত থাকতে পারি।