রিচার্জেবল নাকি নন রিচার্জেবল ব্যাটারি ?

জানুয়ারি 25, 2023

রিচার্জেবল নাকি নন রিচার্জেবল ব্যাটারি ?
কিন্ত ব্যাটারি নিয়ে আমাদের মধ্যে কিছু মানুষ খুবই সিরিয়াস, কিছু মানুষ আবার অতিরিক্ত উদাসীন আর কিছু মানুষ অত্যন্ত কিউরিয়াস। অর্থাৎ ব্যাটারি সম্পর্কে জানতে চায়, করে থাকে নানা প্রশ্ন।

ঘড়ি থেকে স্মার্টফোন, টর্চ লাইট থেকে ক্যামেরা এবং নানান ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেটস চালাতে প্রানশক্তি হিসেবে বহুল ব্যাবহৃত পাওয়ার সোর্স হচ্ছে ব্যাটারি।

গাড়ি বা বাইকের ক্ষেত্রেও ব্যাটারি একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমরা হয়তো টের ও পাইনা ব্যাটারি আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।

মডার্ন মোটরবাইকের ক্ষেত্রে ব্যাটারি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে ব্যাটারি ছাড়া মোটরসাইকেল স্টার্ট করার কোনো সুযোগই আপনি পাবেন না৷

আরো পড়তে পারেন

কিন্ত ব্যাটারি নিয়ে আমাদের মধ্যে কিছু মানুষ খুবই সিরিয়াস, কিছু মানুষ আবার অতিরিক্ত উদাসীন আর কিছু মানুষ অত্যন্ত কিউরিয়াস। অর্থাৎ ব্যাটারি সম্পর্কে জানতে চায়, করে থাকে নানা প্রশ্ন।

কোন ব্যাটারি ভালো, ব্যাটারি ভালো রাখতে হলে কি কি করতে হবে? ব্যাটারি কখন চার্জ করতে হয়? ভালো ব্যাটারি চেনার উপায় কি ইত্যাদি ইত্যাদি।

তাই আজকের আলোচনার টপিক হচ্ছে মোটরবাইকের ব্যাটারি।

শুরুতেই ছোট করে জেনে নেই ব্যাটারি আসলে কি জিনিস?

ব্যাটারি হচ্ছে এমন একটি ডিভাইস যা একটি ইলেক্ট্রোকেমিক্যাল অক্সিডেশন-রিডাকশন প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে তার সক্রিয় পদার্থের মধ্যে থাকা রাসায়নিক শক্তিকে সরাসরি বৈদ্যুতিক শক্তিতে রূপান্তর করে। একজন ইতালীয় পদার্থবিদ আলেসান্দ্রো ভোল্টা ১৮০০ সালে প্রথম ব্যাটারি আবিস্কার করেন। তখন থেকে সারা বিশ্বে ব্যাটারি প্রযুক্তি ব্যবহার হয়ে আসছে।

মুলত ব্যাটারি দুই ধরনের হয়

১। নন রিচার্জেবল যাকে প্রাইমারি ব্যাটারি হিসেবে ধরা হয় এবং ২। রিচার্জেবল বা সেকেন্ডারি ব্যাটারি।

প্রাইমারি ব্যাটারিগুলো হয় ওজনে হালকা, সস্তা এবং মেইন্টেনেন্স ফ্রি। এই নন রিচার্জেবল ব্যাটারিগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঘড়ি, টর্চ, ক্যামেরা, খেলনা সহ বেশিরভাগ ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসে ইউজ হয়৷ এই ব্যাটারিগুলো আবার পার্ফমেন্স এবং ম্যাটেরিয়াল ওয়াইজ কয়েক ধরনের হয়।

যেমন, এলকালাইন, ম্যাগনেসিয়াম, মারকারি, লিথিয়াম ইত্যাদি।

সেকেন্ডারি ব্যাটারি বা রিচার্জেবল ব্যাটারিও বহুল ব্যাবহৃত ব্যাটারি। কারন এগুলোর লাইফস্প্যান বেশি, বারবার ইউজ করা যায়। তবে এগুলোর দামও তুলনামূলক বেশি। মোবাইল, ল্যাপটপ, ইলেক্ট্রিক ভেহিক্যালস এবং যেখানে আনইন্টারাপডেড পাওয়ার সাপ্লাই প্রয়োজন, সেখানে সেকেন্ডারি ব্যাটারি ব্যাবহার করার প্রয়োজন হয়।

আরো পড়তে পারেন

আমাদের মোটরবাইকে আমরা যে ব্যাটারি ব্যাবহার করি সেগুলো হচ্ছে সেকেন্ডারি ব্যাটারি অর্থাৎ রিচার্জেবল ব্যাটারি। সাধারণত ২ ধরনের রিচার্জেবল ব্যাটারি আমরা আমাদের বাইকে দেখতে পাই ১। লিকুইড সেল এবং ২। ড্রাই সেল

লিকুইড সেল ব্যাটারিতে তরল এসিড ব্যাবহার করা হয় আর ড্রাই সেলে এসিড থাকে সলিড ফর্মে।

ড্রাই হোক বা লিকুইড দুই ধরনের ব্যাটারির ই একটা নির্দিষ্ট লাইফস্প্যান আছে।

অনেকে জিজ্ঞেস করেন তাহলে কোনটা বেশি ভালো?

মুলত ২ টা ব্যাটারিই ভালো, তবে কিছু কিছু অসুবিধার জন্য বর্তমানে ড্রাই বা সীলড ব্যাটারি ইউজ করতে আমরা বেশি আগ্রহী।

বেশ কিছুদিন ইউজ করার পর লিকুইড এসিড ব্যাটারির কিছু মেইন্টেনেন্স প্রয়োজন হয়। যেমন এসিডের লেভেল চেক করা, লেভেল লো থাকলে টপ আপ করা, চার্জ লো থাকলে দোকানে নিয়ে রিচার্জ করানো ইত্যাদি। তাছাড়া এসিড লিকুইড ফর্মে থাকার কারনে ঝাকিতে আউটার ভেন্ট দিয়ে এসিড বাইরে বেরিয়ে আসে এবং আশেপাশে থাকা লোহার সাথে বিক্রিয়া করে মরিচা ফেলতে পারে।

অন্যদিকে ড্রাই সেল ব্যাটারিতে এসিড ভরার কোনো ঝামেলা নেই, এটা সম্পুর্ন মেইন্টেনেন্স ফ্রি ব্যাটারি। তবে লিকুইড সেলের চেয়ে সীলড ব্যাটারির দাম কিছুটা বেশি।

আরো পড়তে পারেন

যে ধরনের ব্যাটারিই হোক, এর নির্দিষ্ট লাইফস্প্যান থাকে। অনেকসময় মিস ইউজের কারনে ব্যাটারি দ্রুত নস্ট হয়। সাধারণ ব্যাবহারে বাইকের সাথে আসা একটা ব্যাটারি ২৪ মাস থেকে ৩৬ মাস ভালো সাপোর্ট দিতে পারে। এরপর সেটি দুর্বল হতে শুরু করে। কখনো দেখা যায় বছর না ঘুরতেই অনেকের ব্যাটারি বসে গেছে। কারন বাইক কিনেই অনেকে নানা রঙের বাতি লাগিয়ে বাইককে বিয়েবাড়ির মত সাজান যেটা ব্যাটারিতে বাড়তি চাপ ফেলে।

অনেকে হাই এম্পিয়ারের হর্ন ও ফগলাইট ইউজ করেন যা ব্যাটারিতে চাপ ফেলতে পারে।

তাছাড়া হেডলাইট জ্বালানো অবস্থায় সেল্ফ স্টার্ট করলেও ব্যাটারিতে প্রেশার পড়ে।

কিভাবে ব্যাটারি ভালো রাখবেন?

যখন দীর্ঘসময় জ্যামে দাড়িয়ে আছেন তখন হেডলাইট অফ করে রাখার অভ্যাস ব্যাটারি ভালো রাখতে সাহায্য করে।

বাইকে অতিরিক্ত লাইট, হর্ন, ডিভাইস ইত্যাদি ব্যাবহার না করাই ভালো।

দীর্ঘদিন বাইক না চালানো হলে বাইক থেকে ব্যাটারি খুলে রাখুন এবং সেটা পুনরায় ব্যাবহার করার আগে রিচার্জ করিয়ে নিন৷

বাইক সার্ভিসিং এর সময় বাইকের ইলেক্ট্রিক্যালস চেক করিয়ে নিন। কানেকশন লুজ থাকলে টাইট করাবেন। আর্মেচার, রেক্টিফায়ার ঠিকঠাক কাজ করছে কিনা দেখিয়ে নিন।

ব্যাটারি টার্মিনালে কার্বন জমলে ক্লিন করে ভ্যাসলিন লাগিয়ে দিন।

ব্যাটারি কেনার সময় অবশ্যই বাইকের স্টক ব্যাটারির সাথে ভোল্ট এবং এম্পিয়ার মিলিয়ে নিন।

ভালো ব্রান্ডের ব্যাটারি কেনার চেস্টা করুন। প্রস্ততকালের পর অনেকদিন দোকানে পড়ে ছিলো এমন ব্যাটারি কিনবেন না।

আজ এ পর্যন্তই। ব্যাটারি সম্পর্কে আরো কিছু জানার থাকলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন।

লেখাঃ ইকবাল আবদুল্লাহ রাজ

এডমিন #কিউরিয়াস বাইকার ডট কম

#

আরো পড়তে পারেন