সাজেকের বুকে আল্লাহর ঘর

অক্টোবর 13, 2021

সাজেকের বুকে আল্লাহর ঘর

বর্তমানে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় স্থান হলো সাজেক। সাজেক থানা হওয়ার আগে ছিলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন। পরবর্তীতে সাজেক,রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার অধীভুক্ত একটি থানা।

তবে সাজেক রাঙ্গামাটি জেলার অন্তর্ভুক্ত হলেও রাঙ্গামাটি থেকে সাজেক যাওয়ার সহজ কোন রাস্তা নেই।তাই সাজেক যাওয়ার একমাত্র সহজ রাস্তা হল খাগড়াছড়ি জেলা দিয়ে।

সাজেকে প্রতিদিন প্রায় গড়ে ২-৩ হাজার পর্যটক গমন করে।বাংলাদেশের ডেমোগ্রাফি অনুযায়ী এই জনসংখ্যার ৮৫% মুসলিম। কিন্তু সেখানে নামাজের জন্য নির্দিষ্ট কোন মসজিদ নেই।তাই ভ্রমণকারী দের একমাত্র প্রাণের দাবি হচ্ছে একটি মসজিদ। তাই ভ্রমণকারী দের দাবি রক্ষায় জন্য রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ একটি মসজিদ নির্মাণের উদ্দ্যোগ নেয়।
কিন্তু এই মসজিদ নির্মাণের প্রথম বাধা হয়ে দাঁড়ায় সেই এলাকার অধিবাসী।

কিন্তু কেন এই বাধা?

সেই মসজিদ নির্মাণ কতটা যৌক্তিক সে বিষয়ে একটু আলোকপাত করতে চাই।

১.সাজেকে ভ্রমণকারী দের মধ্যে প্রায় ৮৫% হলো মুসলমান। তাহলে সেই ভ্রমণকারী দের নামাজের জন্য একটি মসজিদের প্রয়োজন নেই?

২.এটা আমরা সবাই জানি যে ছুটির দিন শুক্রবারে সবচেয়ে বেশি পর্যটক হয়।সেই সময় জুম্মার নামাজ পড়ার জন্য কি একটি মসজিদের প্রয়োজন নেই?

৩.সাজেকের হোটেল, রেস্টুরেন্টে, দোকান মালিক,ড্রাইভার ও বিভিন্ন কর্মচারী দের একটি উল্লেখ যোগ্য সংখ্যা হল মুসলমান। তাহলে সেই মুসলমানদের নামাজ পড়ার জন্য কি একটি মসজিদের প্রয়োজন নেই?

৪.সাজেকের পর্যটক দের নিরাপত্তার জন্য যেসব নিরাপত্তা বাহিনী থাকে যেমনঃ সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ও অন্যান্য সরকারি কর্মচারী সেখানে সারাক্ষণ অবস্থান করে।তাদের নামাজ পড়ার জন্য কি একটি মসজিদের প্রয়োজন নেই?

৫.সাজেকে গির্জা আছে,কিয়াং আছে,মন্দির আছে।কিন্তু সেখানে কি নামাজ পড়ার জন্য কি একটি মসজিদের প্রয়োজন নেই?

৬.সাজেক যদি পর্যটক বান্ধব করতে হয়, তাহলে সেখানে পর্যটকদের সুবিধার জন্য যা যা করা প্রয়োজন তা করা জরুরি নয় কি?

তাই সাজেকে ভ্রমণকারী দের একমাত্র প্রাণের দাবি হল সেখানে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা।

আর এই সকল বিষয় গুরুত্বের সাথে নিয়ে রাঙামাটি জেলা পরিষদ সেখানে মসজিদ নির্মাণ করে।

জানা যায়, রাঙামাটি জেলা পরিষদ সরকারি জায়গায় মসজিদটি নির্মাণ করলেও সেনাবাহিনীকে জড়িয়ে কুৎস রটনা করছে পাহাড়ি সন্ত্রাসীরা। সেনাবাহিনী পাহাড়িদের উচ্ছেদ করে তাদের জায়গায় জোরপূর্বক মসজিদ নির্মাণ করছে এবং এতে কাজ করতে স্থানীয় উপজাতিদের বাধ্য করা হচ্ছে- এমন প্রপাগান্ডা চালানো হচ্ছে।

কিন্তু জেলা পরিষদ জানিয়েছে, তারা মসজিদটি সরকারি জায়গায় নির্মাণ করছে। এটি সেনাবাহিনীর কোনো প্রকল্প নয়। তবে সেনাবাহিনী যেহেতু সাজেক পর্যটন এলাকার নিরাপত্তায় নিয়োজিত তার অংশ হিসেবে তারা এই স্থানটির সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা উপজাতীয় জনগণের কল্যাণে কাজ করে। সুতরাং বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে যতই কুৎসা রটনা করার চেষ্টা করা হোক না কেন সাধারণ জনগণ তা কখনোই বিশ্বাস করবে না এবং বিভ্রান্ত হবে না। সন্ত্রাসীরা অপপ্রচার চালিয়ে পর্যটনকে বন্ধ করতে চায়, কারণ পর্যটক গেলে তাদের নিরাপত্তার জন্য সরকারকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। আর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম অবাধে পরিচালনায় বাঁধা সৃষ্টি করবে।

অনেক ধন্যবাদ রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ ও বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কে।