নাম :ফুয়াদ নাসের খান
বয়স:২১ বছর
ঠিকানা: কালীগঞ্জ ,ঝিনাইদহ
মোটর বাইক মডেল:Bajaj pulsar ug5 twin disc
মডেল ইয়ার:২০১৮/২০১৯
ওডোমিটার রানিং: ৫১০০ কিঃ মিঃ
#আমার জীবনের প্রথম বাইক:
প্রথমে আব্বুর bajaj boxxer at এই বাইকটা দিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল। বাইকটা বয়স ছিল প্রায় 18 বছর। এবং পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি নতুন বাইকের জন্য।
পরবর্তীতে বাজাজ পালসার ug5 কেনা হয় 2019 সালের মার্চ মাসের 16 তারিখে। বাইকিং কমিউনিটি এবং কিছু তথ্যের ভিত্তিতে আমার এই বাইকটা বেছে নিতে হয়।
#কেন বর্তমান এই বাইকটা আমি বেছে নিলাম:
বাংলাদেশ বাজাজ কোম্পানি অনেকদিন যাবত ব্যবসা করছে এবং যেহেতু আমার আগের মডেলটি ছিল বাজাজ কোম্পানির সেই কথার উপর ভিত্তি করে, নিজের পছন্দের প্রাধান্য দিয়ে এবং রিসেল ভ্যালু এর কথা চিন্তা করে বাইকটা কিনি। পছন্দ হওয়ার ভেতরে কিছু কারণ ছিল সেটা হল এর মাইলেজ এবং ডবল হাইড্রলিক ডিস্ক ব্রেক হওয়ার কারণে এই বাইকটা বেছে নিয়েছিলাম। পাশাপাশি এই বাইক এর সকল যন্ত্রাংশ বাজারে সহজেই পাওয়া যায় এবং দাম হাতের নাগালে এটাও ছিল একটা মুখ্য কারণ। বাইকটির দাম নিয়েছিল 186900 টাকা এবং ক্রয় করেছিলাম যশোর থেকে।
#বাইকটা প্রথমবার চালানোর অনুভূতি
যেহেতু জীবনের প্রথম বাইক সে ক্ষেত্রে অনেক বড় একটা অনুভূতি কাজ করবে নিজের ভেতরে এটা স্বাভাবিক এবং সেটা ভাষার মাধ্যমে প্রকাশ করার মতন নয়। তবে এটুকু অনুমান করেছিলাম এর মজা ভালো ভাবে পাওয়া যাবে ব্রেকিং পিরিয়ড শেষ করার পর।
#বাইকের সার্ভিসিং করানো সম্পর্কে তথ্য:
বাইকটা বর্তমানে তিনবার সার্ভিসিং করানো হয়েছে বাজাজ সার্ভিসিং সেন্টার থেকে। আমার এলাকায এক বড় ভাইয়ের গ্যারেজ আছে সুসম্পর্ক থাকার কারণেই তার কাছে বাইকের কাজ করানো হয়। এবং সত্যি কথা বলতে তার হাত দিয়ে কাজ না করানো হলে আমার মনঃপুত হয় না। তিনি হলেন বিশ্বজিৎ দাদা ।
বাইকটা বাজাজ এর নির্ধারিত সার্ভিসিং সেন্টার থেকে যখন সার্ভিসিং করানো হয় তখন সার্ভিসিং করানো হয় যশোরের মনিহার থেকে। এবং আমার প্রিয় টেকনিশিয়ান যিনি খুব পছন্দের তিনি হলেন রাসেল ভাই। তার কাজ আমার কাছে খুব পছন্দের সেই জন্যই তার কাছ থেকেই করানো হয় ।
#মাইলেজ:
প্রথম 2000 কিলোমিটারের মধ্যে মাইলেজ পেয়েছি 40 থেকে 42 কিলোমিটার পার লিটার।
ব্রেকিং পিরিয়ড শেষ করার পর ২০০০ কিলোমিটার পর থেকে সেটা 47 থেকে 48 কিলোমিটার এসে দাঁড়িয়েছিল
#বাইকের মেইনটেনেন্স:
সাধারনত আমি এই নীতিতে বিশ্বাস করি ছোট সমস্যা থেকেই বড় সমস্যায় রূপান্তরিত হয়। তাই যখন বাইকের খুটিনাটি কোন সমস্যা পাই সেটা ঠিক করার চেষ্টা করি তখনই।
দুই হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত ছিল ব্রেকিং পিরিয়ড এবং এই ব্রেকিং পিরিয়ড এ আমি প্রতি 400 কিলো থেকে 600 টির মধ্যে ইঞ্জিন অয়েল পরিবর্তন করে ফেলতাম এবং সেটা ছিল মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল
যেহেতু motul এর ২০w ৫০ মিনারেল ইঞ্জিন অয়েল টা না থাকায় আমি shell ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করতাম। তিন হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত আমি shell ইঞ্জিন অয়েল টা ব্যবহার করেছি। এবং তারপর থেকে motul ৩১০০ ২০w৫০ ব্যবহার করেছি। যেটা ছিল সেমি সিন্থেটিক। এবং 45 কিলোমিটার থেকে ব্যবহার করেছি motul ৭১০০ , যেটা ফুল সিন্থেটিক।
#যন্ত্রাংশের পরিবর্তন:
পেছনে সিট গ্রাব রেল এর ধরার জায়গা সমস্যা থাকার কারণে সেই টা একটু সুবিধা মাফিক পরিবর্তন করেছিলাম। বাইকের সিগন্যাল লাইট এবং লুকিং গ্লাস পরিবর্তন করেছিলাম। সেগুলার কোন সমস্যা নাই কিন্তু আমার ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ না হওয়ার কারণে পরিবর্তন করেছি।#টপ স্পিড
ব্রেকিং পিরিয়ড শেষ করার পর তিন হাজার কিলোমিটার যখন চলছিল তখন ঝিনাইদা মহাসড়কে 117 থেকে 118 কিলোমিটার টপ স্পিড পেয়েছিলাম। এবং এই ভার্সনের হ্যান্ডেল, সাসপেনশন, চেসিস, পালসার 180 সিসি বাইকের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ার কারণে খুব ভালো একটা ব্যালেন্স পেয়েছিলাম।
#ব্রেকিং:
পূর্বের পালসার এর তুলনায় এই নতুন ডাবল ডিস্ক এর ব্রেকিং এবং কন্ট্রোলিং অনেক উন্নত খুব ভালো বলবো না তবে আগের থেকে অন্তত ভালো।
#বাইক এর ভালো দিক:
এই বাইকের প্রথম ভালো দিক আমার কাছে মনে হয় সেটা হল
১-মাইলেজ।
২-এর যন্ত্রাংশ গুলো সহজে পাওয়া যাই।
3-রিসেল ভ্যালু ভালো পাওয়া যায়
এবার আসি খারাপ দিকের । ব্যাখ্যা দিতে গেলে শেষ হবেনা তারপরও কিছু জিনিস তুলে ধরলাম।
১-পেইন্ট কোয়ালিটি আগের মত নাই
2-145 কেজি ওজন যা অনেক বেশি পাশাপাশি ওয়েট ডিসট্রিবিউশন ভালো না যার কারনে ভারী মনে হয়
3-ইঞ্জিন অতিরিক্ত গরম হয়ে গেলে অথবা টানা 45 মিনিট থেকে 1 ঘন্টা বাইক চালালে ভিতরে একটা চিনচিন শব্দ করে যেটা পালসারের জন্মগত একটা সমস্যা সেটা সবাই জানে।
৪-লুকিং গ্লাস গুলো সেকেলে।যা প্লাটিনা সিটি হান্ড্রেড বাইক এ ব্যবহার করা হয়।এবং যেহেতু এটা একটা মোটামুটি ভালো একটা সেগমেন্টের বাইক অন্তত বাজাজ কোম্পানির নিজেদের মডেলের ভিত্তিতে সে ক্ষেত্রে এই বাইকটা তে কিছু ভিন্ন পার্টস ব্যবহার করা উচিত ছিল
5-সিগনাল লাইটগুলো ফ্লেক্সিবল কিন্তু সেই পুরাতন মডেল নতুন এর আবির্ভাব নাই
6-seat grab rail এর ডিজাইন সুন্দর কিন্তু কাজের না।বাইক যখন একই স্থান থেকে অপর স্থানে মুভমেন্ট করা প্রয়োজন । কিন্তু পেছনের সিট রড হাতে হাত রাখার মতো এবং ধরে ঘুরানোর মতো অতটাও জায়গা নাই
7-ইনিশিয়াল পিকআপ একেবারেই নাই
৮-ফুট পেগ অথবা ফুট্রেস্ট এর মান ভালো করা উচিত ছিল।
বাজাজ পালসার একটা মোটামুটি ভালো সেগমেন্টের বাইক। বাইকটা তে সম্পূর্ণ কস্ট কাটিং করে এই বাজাজ কোম্পানি। প্রতিটা বাইকেই টুকিটাকি সমস্যা থাকবে এবং সেগুলো সমাধান করাও যায়। যার যে বাইক আছে সেই বাইক কে ভালবেসে যত্ন করে রাখাটাই হলো স্মার্ট বাইক রাইডার এর বৈশিষ্ট্য। তবে আগের পালসার এর তুলনায় এই ডাবল ডিস্ক এর পালসার তুলনামূলক ভালো বলা যায় তার প্রথম কারণ হলো আগের থেকে এর কন্ট্রোলিং এবং ব্রেকিং ভালো।
হেলমেট পড়ে বাইক রাইড করুন। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস নিয়ে আইনি ভাবে চলাচল করুন। আসসালামু আলাইকুম।
