FI ইঞ্জিনের বাইক। বাংলাদেশে মোটরবাইক ইন্ড্রাস্ট্রিতে নতুন সংযোজন। এই তো বেশিদিন না, বছর তিনেক আগে ইয়ামাহা FI ইঞ্জিনের বাইক আনে ACI Motors। গ্রাহক চাহিদা বিবেচনায় আস্তে আস্তে অন্য মোটর বাইক পরিবেশক কম্পানি গুলো আনতে শুরু করে।
সব শেষে বাজাজ FI ইঞ্জিন সমৃদ্ধ বাইক বাংলাদেশে বাজারজাত শুরু করে যা পূর্বের কার্বুরেটর ভার্সন টি এখনো বাজারে রয়েছে।
ইনিঞ্জ ক্যাটাগরি এক হলেও কোম্পানি ভেদে কোয়ালিটি ও দামের তারতম্য রয়েছে। আর এই কারোনেই এফ আই বাইক লাভারেরা পড়েন দ্বিধা দ্বন্ধে। আমাদের কাছে এই সংক্রান্ত প্রচুর এসএমএস আসে কোন বাইক ভালো হবে।
যেহেতু FZS FI ও NS FI এই দুটি বাইকের দাম কাছাকাছি তাই FI প্রেমিরা এই দুটো নিয়েই দ্বিধা দ্বন্ধে পড়েন বেশি।
আর তাই আমরা সিধান্ত নিয়েছিলাম এই দুটো বাইক নিয়ে আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনার। তো চলুন কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক
# ডিজাইন
যদিও এই দুটি মডেলই নেকেট সেগমেন্ট এর বাইক এর পরেও দেখতে কিছু স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। এতে কোন সন্দেহ নেই যে বাইক দুটির ডিজাইন নজর কাড়া। কিন্তু এন এস বাইকের ডিজাইন একটু পুরনো সেইসাথে এন এস ২০০ এর সাদৃশ্য পাশাপাশি এর ডিজাইনে কোন পরিবর্তন না এনে এর কালার বা গ্রাফিক্স ও স্পেফিকেশনে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। অন্যদিকে ইয়ামাহা এফ জেট এস বাইক টি সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে নতুন ডিজাইনে তৈরি করা হয়েছে। বর্তমান ভার্শন টি পূর্বের ভার্শন থেকে অনেক বেশি নজর কাড়া। এই দিক বিবেচনা করলে ইয়ামাহা বাইক এগিয়ে আছে।
# চাকা
রাস্তার সাথে বাইকের যে অংশটি লেগে থেকে বাইক কে চলতে সাহায্য করে সেটি হল চাকা। এই চাকার উপর বাইকের পারফর্মেন্স অনেকাংশে নির্ভর করে। চাকার পুরুত্ত এর উপর নির্ভর করে বাইকের কন্ট্রলিং করনারিং ইত্যাদি।
এই ক্ষেত্রে বাইক দুটির হুইল ছাইজ সেইম হলেও এর টায়ারে রয়েছে পার্থক্য। যেখানে পালসার এন এস বাইকের টায়ার সাইজ সামনে ৯০/৯০ ও পিছনে ১২০/৮০ সেখানে ইয়ামাহা এফ জেট এস এর সামনে ১০০/৮০ ও পিছনে ১৪০/৬০। যা আপনাকে বাইক কন্ট্রলিং ও করনারিং এ আরো বেশি আত্মবিশ্বাস যোগাবে।
# ব্রান্ড অরিজিন
বাইক দুটির ব্রান্ড অরিজিন নিয়ে বলতে গেলে বাজাজ এন এস আর ব্রান্ড অরিজিন ইন্ডিয়া অন্যদিকে ইয়ামাহা বাইকের ব্রান্ড অরিজিন জাপান।
# সাসপেনশান
আমাদের দেশের রাস্তা কথা সবাই জানি। হয়ত অনেকে মজা করে বলবেন বাংলাদেশের রাস্তা কিছু কিছু অংশে ভালো, অথচ হওয়া উচিৎ ছিল কিছু কিছু অংশে খারাপ। যাইহোক এই খারাপ রাস্তায় আপনাকে আরাম দায়ক রাইড উপহার দিতে বাইকের যে অংশ টী সবচেয়ে বেশি গুরুত্ত পূর্ণ তা হল সাসপেনশান।
সকল বাইক নির্মাতা কোম্পানি এই দিকে গুরুত্ত দিয়েই বাইক বাজারে ছাড়ে। এই দুটি বাইকের বেলায়ও সর্বোচ্চ প্রযুক্তির সাসপেনশান বেবহার করা হয়েছে। এখানে পালসার এন এস বাইকে সামনে ও পেছনে যথাক্রমে ব্যাবহার করা হয়েছে Telescopic with Anti-friction Bush ও Nitrox mono shock absorber with Canister এবং ইয়ামাহা বাইকে Diamond ও Swingarm ।
# হেড লাইট
রাতে নিরাপদ ভাবে বাইক চালানোর জন্য ও বিপরিত দিক থেকে আসা যানবাহন কে সংকেত দিতে হেড লাইটের বিকল্প নেই। বেশির ভাগ বাইকের হেড লাইট নিয়ে বাইকার সন্তুষ্ট থাকেন না। অনেক বাইকে আবার থ্রটল এর সাথে হেড লাইটের কানেশান। মানে থ্রটল ঘুরালে হেড লাইটের আলো বাড়ে বা কমে, যা খুব বিরোক্তিকর কোন কোন ক্ষত্রে ঝুকির ও কারন। ধরেন, আপনি বিপদ দেখেই বাইকের গতি কমালেন সাথে আপনার সামনে অন্ধকার হয়ে গেল, এতে ঝুঁকি আরো বেড়ে গেল।
এন এস বাইকে এই সিস্টেম টি চালু আছে। এই দিক থেকে ইয়ামাহা বাইক আমার কাছে বেস্ট, পাশাপাশি ইয়ামাহা বাইকে ব্যাবহার করা হয়েছে Halogen Bulb ও এন এস বাইকে Conventional Bulb সাথে Reflector ।
আছাড়াও আরো কিছু পার্থক্য দেখে নেওয়া যাক
<table><tbody><tr><td width="174">Particular</td><td width="242">FZS FI V2</td><td width="208">NS FI</td></tr><tr><td width="174">Max Power</td><td width="242">15.5 PS @ 8500 rpm</td><td width="208">15.3 bhp @ 8,500 rpm</td></tr><tr><td width="174">Maximum Torque</td><td width="242">14.6 Nm @ 6500</td><td width="208">14.6 Nm @ 6,500 rpm</td></tr><tr><td width="174">Mileage (City)</td><td width="242">45 kmpl</td><td width="208">40 kmpl</td></tr><tr><td width="174">Tachometer</td><td width="242">Digital</td><td width="208">Analogue</td></tr><tr><td width="174">Ground Clearance</td><td width="242">160 mm</td><td width="208">176 mm</td></tr><tr><td width="174">Seat Height</td><td width="242">790 mm</td><td width="208">805 mm</td></tr><tr><td width="174">Front Tyre</td><td width="242">100/80-17M/C (52P) Tubeless</td><td width="208">90/90 -17</td></tr><tr><td width="174">Rear Tyre</td><td width="242">140/60-R17M/C (63P) Tubeless</td><td width="208">120/80 -17</td></tr></tbody></table>
এখন আসি আসল প্রশ্নে, এই দুটির মধ্যে কোন বাইক টি আপনার কেনা উচিৎ,
একেক জনের পছন্দ প্রয়োজন একেক রকম। তবে যদি উপরের আলোচনার সারমর্ম করি তাহলে যা দাঁড়াবে তা হল দাম, মাইলেজ, কম্ফর্ট, ডিউরেবিলিটি ইত্যাদি প্রাধান্য দিলে আপনার এফ জেড এস কেনা উচিৎ। আর যদি সি সি বা ব্রেকিং সিস্টেম এর কথা চিন্তা করেন তবে এন এস নিতে পারেন।
তবে প্রতিটা বাইকের ভালো বা খারাপ দিক থাকে। মূলত বাইক বাঁচে যত্নে। আপনি যদি দক্ষতার সাথে বাইক রাইড করতে পারেন পাশাপাশি ভালো ভাবে আপনার বাইক মেন্টেনেন্স করতে পারেন তবে বাইক যে কোম্পানির হোক না কেন তা থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে পারবেন।
এখানে আমরা এই দুটি বাইকের মৌলিক কিছু পার্থক্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, এখন সিধান্ত আপনার।
