বাইক নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি প্রাধান্য পায় তা হল বাইকের মাইলেজ। অনেকের উচ্চ সি সি আর স্টাইলিস লুকিং এর বাইক এর স্বপ্ন মাইলের এর কাছে হার মেনে যায়।
বাইকের ইঞ্জিন গঠন অনুসারে প্রতিটি বাইকের জন্য মাইলেজ সেট করা থাকে। তবে চালানোর ধরন অনুপাতে এর কম বেশি হয়। আপনারা দেখে থাকবেন একি কোম্পানির একি বাইক সেইম এলাকায় মাইলেজ দুই রকম।
আজ আমরা আলোচলা করবো কিভাবে বাইকের মাইলেজ বাড়ানো যায় সে সম্পর্কে
প্রথমেই আসি বাইকারের পার্টে
- বাইকটি স্টার্ট দেওয়ার পরে প্রথম ৪০০ মিটার যতটা সম্ভব আস্তে যাবেন।
- ক্লাচ এবং ব্রেক যতটা কম ব্যবহার করবেন ততই ভাল। এর ফলে অনেকটা জ্বালানি সাশ্রয় হয়।
- বাইকের ম্যানুয়ালে যে গিয়ার চেঞ্জ গতি নির্দিষ্ট করা আছে, সেই গতিই বজায় রাখলে ঠিকঠাক মাইলেজ পাওয়া যায়।
- সম্ভব হলে ট্রাফিক সিগন্যালের সময় আাপনার বাইকের ইন্জিন বন্ধ রাখুন ।
- কোথাও দাঁড়াতে হলে ছায়া আছে এমন স্থানে পার্ক করুন। সরাসরি সূর্যের আলোর নিচে বাইক পার্ক করবেন না।
- যথাসম্ভব ভাল ফুয়েল বেবহার করুন। ভাল পাম্প নির্বাচনের জন্য একই পাম্প থেকে না নিয়ে কয়েক পাম্প থেকে ফুয়েল নিন। এতে কোন পাম্পের ফুয়েল ভাল তা নির্ণয় করতে পারবেন।
- কোম্পানি নির্ধারিত গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করুন । সময়মত ইঞ্জিন অয়েল চেঞ্জ করুন ।
- টায়ার প্রেশার প্রতি ১৫ দিনে একবার চেক করুন
- উন্নতমানের স্পার্ক প্লাগ ব্যাবহার করুন।
- প্রতি সার্ভিসিং এ এয়ার ফিল্টার পরিস্কার করুন এবং নির্ধারিত সময় পর পর বদলে ফেলুন।
- কার্বুরেটর নিয়মিত পরিষ্কার রাখতে হবে। কার্বুরেটরে ধুলোবালি জমে জেট এবং ফ্লোট বোল নিডল জ্যাম হয়ে যায়। এর ফলে জ্বালানি বেশি খরচ বেশি হয়। যার ফলে মাইলেজ কমে যায়। তাই সব সময় কার্বুরেটর পরিষ্কার রাখতে হবে।
এবার আসা যাক বাইকের পার্টে
- নিয়মিত আপনার মোটর সাইকেলের চাকা পরীক্ষা করে দেখবেন যে চাকাগুলি সহজভাবে ঘুরছে কিনা। চাকা জ্যাম হয়ে যাওয়ার একটি সাধারণ কারণ হল ব্রেক খুব বেশি টাইট হয়ে যাওয়া । এছাড়া, চাকার বেয়ারিং ভেংগে বা নষ্ট হয়ে গেলেও আপনার মোটর সাইকেলের চাকা জ্যাম হতে পারে। চাকার জ্যামের কারনে চলন্ত অবস্থায় ইঞ্জিনে বেশী চাপ পরে যার ফলশ্রুতিতে আপনার বাইকের মাইলেজ কমে যেতে পারে। চাকার জ্যামকে কখনই অবহেলা করবেন না। সময়মতো ব্যবস্থা নিন । কারণ অতিরিক্ত টাইট থাকার জন্য যেকোন সময় নাটটি গোঁড়া থেকে ভেঙ্গে যেতে পারে আর যার ফলে আপনি ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হতে পারেন ।
- নাজুক পিস্টন-রিং আপনার মাইলেজ কমিয়ে দিতে পারে। পিস্টন-রিং দুর্বল হলে ওয়েল পিস্টন চেম্বারে প্রবেশ করে আর পেট্রলের দাহ্যতা কমিয়ে দিয়ে মাইলেজ কমিয়ে দেয় অনিবার্যভাবে।
- চাকার জ্যাম হওয়ার আরেক টি প্রধান কারণ হল চেইন অতিমাত্রায় টাইট থাকা । চেইনে যদি ধুলাবালুর কারনে ময়লা দেখা দেয় আর নিয়মিত লুব্রিকেন্ট করা না হয় তবে আপনার আখাংকিত মাইলেজ কমে যেতে পারে । ম্যানুয়াল দেখে যথাযথ ভাবে চেইনটিকে টাইট করুন।
- অতিরিক্ত টাইট ভালভ ইঞ্জিনের শব্দকে হ্রাস করে কিন্তু এর প্রভাব পড়ে টাইমিং চেইনের উপর । এর ফলে ইঞ্জিন ভালোভাবে ঘুরতে পারেনা। এটা, ইঞ্জিনের জ্বালানী খরচ বাড়িয়ে দেয় আর সাথে সাথে টাইমিং চেইনটাও আর টেকসই হয়না।
- সব গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করা যাবে না। শুধুমাত্র কোম্পানি নির্ধারিত গ্রেডের ইঞ্জিন অয়েল ব্যবহার করলে বাইকের ইঞ্জিনের লাইফের স্থায়ীত্বও বৃদ্ধি পায় ।
- প্রস্ততকারক যে মাপের চাকা নির্ধারণ করেছে, সেই মাপের চাকা ব্যবহার করলে মাইলেজ ঠিক থাকে অন্যথায় মাইলেজ হ্রাস পায়।
পাশাপাশি নিম্নমানের পেট্রল/অকটেন এর ব্যবহার, RPM বেশী করে রাখা, সিগনালে স্টার্ট বন্ধ না করা, বারবার ব্রেক করে আবার গতি বাড়িয়ে দেয়া, ইত্যাদি কারনে মাইলেজ কমে যেতে পারে। তাই, আপনার প্রিয় মোটর সাইকেলের খুব যত্ন নিন , তাকেও ভাল রাখুন, আপনিও ভাল থাকুন ।