গরমে যে রোগ গুলো হয় ও তার থেকে পরিত্রাণের উপায়
এপ্রিল 29, 2024
Views
Shares
বৈশাখ মাস এবং তার পরবর্তী মাস একটু গরম থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু শহর, রাস্তাঘাট উন্নয়ন সেই সাথে গাছপালা কমে যাবার কারণে বৈশ্বিক পরিস্থিতি বেশ ভালো পরিবর্তন হয়েছে। ফলশ্রুতিতে যে রকম গরম হওয়ার কথা ছিল ঠিক সেরকমটা না হয়ে তার থেকে বেশি হচ্ছে।
আবার আমরা যারা মোটরসাইকেল রাইডার রয়েছি আমরা মোটামুটি উভয় সংকটে রয়েছি। উপরে সূর্যের আলো থেকে উৎপাদিত তাপ এবং নিচ থেকে ইঞ্জিন থেকে উৎপাদিত তাপ দুটোকেই আমাদের সহ্য করতে হচ্ছে। পাশাপাশি জ্যামের মধ্যে দাঁড়ালে আশপাশে যানবাহন থেকে উৎপাদিত তাপ তো রয়েছেই।
জয়েন করুন ৬০ হাজারের বেশি বাইকারের গ্রুপ কিউরিয়াস বাইকার
এতসব সমস্যা থেকে যে সমস্ত রোগগুলো হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং সেগুলো থেকে রক্ষা পাওয়ার যে উপায়গুলো রয়েছে এগুলো নিয়ে আজকে আপনাদের সাথে আলোচনা করব।
হিট স্ট্রোক
বর্তমান সময়ে গরমে সবচেয়ে আলোচিত যে রোগ সেটা হচ্ছে হিট স্ট্রোক। এতটাই মারাত্মক যে আপনি বিকলাঙ্গ হওয়া থেকে শুরু করে আপনার মৃত্যুও ঘটতে পারে। হিট স্ট্রোক মূল কারণ কিন্তু অতিরিক্ত গরম। শরীরের তাপমাত্রা যখন স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায় তখনই মূলত সবচেয়ে বেশি হিট স্ট্রোক এর সম্ভাবনা থাকে। স্বাভাবিকভাবেই মানুষের শরীরের তাপমাত্রা থাকে ৯৮.৬ ফারেনহাইট। কিন্তু গরমে যদি সেই ফারেনহাইট ১০৪ ডিগ্রি বা তারও বেশি হয়ে যায় তখন শরীর স্বাভাবিকভাবে শরীর ঠান্ডা করতে পারে না। ঠিক এই সময়টাই হিটস্ট্রোকের সম্ভাবনা থাকে।
হিটস্ট্রোকের প্রাথমিক কিছু লক্ষণের মধ্যে এটা হচ্ছে যে আপনি তীব্র গরমের মধ্যেও ঘামবেন না আপনার ত্বক লালচে ধরণের হয়ে যাবে। আপনি অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করবেন সেইসাথে আপনার ঘুমের মতন ঝিমুনি আসবে। অচেতন হওয়া প্রলাপ বকা এবং শেষে মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরো পড়তে পারেন
এমন লক্ষণ আপনার শরীরে দেখা দিলে সঙ্গে সঙ্গে আপনাকে শরীরের তাপ কমানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এক্ষেত্রে কাছাকাছি এসি ঠান্ডা রয়েছে এরকম জায়গায় আপনি অবস্থান করতে পারেন পাশাপাশি ঘাড় এবং বগলের নিচে কাপড়ে মোড়ানো বরফ অথবা আইসক্রিম রেখেও শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। শরীরের উপরিভাগে ভারী কোন কাপড়-চোপড় থাকলে সেটা খুলে বাতাস করেও শরীর ঠান্ডা করতে পারেন।
সম্ভব হয় নরমাল পানি দিয়ে শরীরটাকে ধৌত করা এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা।
এ সমস্ত ব্যবস্থা নিলে দেখা যাবে ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যেই আপনি স্বাভাবিক হয়ে গেছেন যদি এর বাইরেও আপনি স্বাভাবিক না হন সেক্ষেত্রে আধাঘন্টা পরে আপনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন অবশ্যই।
ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগ
গরম যখন তীব্র আকার ধারণ করে তখন অনেক বেশি পরিমাণে আমরা পানি এবং পানি জাতীয় পণ্য গ্রহণ করতে শুরু করে দেই। ঠিক তখনি বিপত্তিটা ঘটে এই জায়গাটাতেই। অতিরিক্ত গরমে আবহাওয়া যে তারতম্য হয় সেই সাথে আমাদের খাবারের যে পরিবর্তন আসে সবকিছু মিলে আমাদের পাকস্থলী এই খাবারগুলো সংগ্রহ বা সহ্য করতে পারে না। ফলে ডায়রিয়ার মাধ্যমে সে খাবারগুলো আমাদের শরীর থেকে বের করে দেয়। এতে করে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং বাইরের পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে না থাকায় শরীর ধীরে ধীরে আরও খারাপের দিকে চলে যায়।
আরো পড়তে পারেন
এ সময় একমাত্র সমাধান খাবার স্যালাইন। খাবার স্যালাইন খাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা যে সমস্ত ভুলগুলো করি সেটা হচ্ছে পরিমাণ ঠিক না রাখা। জিব্বায় স্বাদ লাগার জন্য আমরা অল্প পানিতে অনেক বেশি পরিমাণে স্যালাইন দেওয়ার চেষ্টা করি। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে শরীরের লবণের পরিমাণ বেড়ে যেতে পারে। গায়ে সুনির্দিষ্ট মাত্রায় লেখা রয়েছে কি পরিমান পানিতে এই স্যালাইনটি গলাতে হবে।
গলা ব্যথা এবং জ্বর
গরম থেকে বাঁচতে আমরা অনেকেই ঘনঘন আইসক্রিম অথবা ঠান্ডা পানি খেয়ে থকি । আবার বাইরে থেকে এসেই একদম ভেজা অবস্থায় সরাসরি গোসলে ঢুকে যাই ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল করার চেষ্টা করি।
আমার এক বন্ধুকে বলতে শুনেছি সে নাকি বরফ পানিতে গোসল করে বাসায় পৌঁছে গিয়ে। আবার অনেকেই গরম থেকে বাঁচতে একটু পরপর ঘামে ভেজা শরীর নিয়ে সরাসরি এসির মধ্যে বসে পড়েন।
আমাদের শরীর এমন এক ধরনের যন্ত্র যে সময় সময় পরিবর্তনে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। কিন্তু আপনি যখন অতি দ্রুত আপনার অবস্থান পরিবর্তন করছেন তখন শরীর সেটা গ্রহণ করতে পারে না। ফলে গলা ব্যথা, জ্বর, সর্দি, কাশি এ ধরনের রোগে আমরা আক্রান্ত হই।
এক্ষেত্রে আমাদের করণীয় হচ্ছে সরাসরি গরম থেকে ঠান্ডা স্থানে চলে যাওয়া যাবে না। আবার এসি রুম থেকে বের হয়ে সরাসরি গরমের মধ্যে মোটরসাইকেল চালাতে শুরু করা যাবে না। এসি রুম থেকে বের হয়ে শোরুমের দরজার কাছে কিছুক্ষন অপেক্ষা করে শরীরটাকে সেই তাপমাত্রার শোষণ করার সক্ষমতা অর্জন করিয়ে পরে আপনি মোটরসাইকেল রাইড শুরু করতে পারেন।
আরো পড়তে পারেন
আবার অতিরিক্ত গরমে অনেক বেশি পরিমাণ ঠান্ডা পানীয় পান করা যাবে না। এক্ষেত্রে আপনি একটা ঠান্ডা পানির বোতল এবং একটা নরমাল পানির বোতল দুটো এক করে পানিটাকে কিছুটা নরমালের কাছাকাছি নিয়ে এসে তারপরে পান করতে পারেন। পাশাপাশি মোটরসাইকেল অনেক দ্রুত চালালে ইঞ্জিন অনেক দ্রুত গরম হয় সেক্ষেত্রে মোটরসাইকেল আসতে চালান এবং অধিক গিয়ারে চালানো অভ্যাস করতে পারেন।
আজকে পর্যন্ত, বাইক সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে জানতে ও জানাতে ভিজিট করতে পারেন curiousbiker.com এবং আপনার মনের কথা হাজারও বাইকারের সাথে আলোচনা করতে জয়েন করে ফেলতে পারেন curious biker ফেসবুক গ্রুপে।