বাইক চালানোর সময় সবচেয়ে বেশি যে সকল পার্টস ব্যাবহার হয়, টায়ার তার মধ্যে অন্যতম। আপনার বাইকের সি সি কম বা বেশি হোক, ব্রেকিং সিস্টেম যত আপডেট হোক সকল বাইকের টায়ার বিসয়ক ঝুঁকি আছে।
বাইক চালানোর সময় বৃষ্টি, কাঁদা, প্রখর রোদ বা খারাপ রাস্তা এই টায়ার সবচেয়ে বেশি অত্যাচারের শিকার হয়। আবার সচেতনতার অভাবে এই টায়ার সবচেয়ে বেশি অবহেলার শিকার।
অথচ এই টায়ায়ের সাথে বাইকের প্রায় সকল বিষয়ের স্থায়িত্তের সম্পর্ক। ইঞ্জিন সাউন্ড, মাইলেজ কমে যাওয়া সহ ইত্যাদি অনেক বিষয় এর সাথে জড়িত।
কয়েকটি বিষয়ের দিকে যদি আপনি নজর দেন তবে বাড়িয়ে ফেলতে পারেন টায়ারের স্থায়িত্ব সেই সাথে নিরাপদ রাইডিং। আসুন আলোচনা করা যাক…
# টায়ার প্রেশারঃ
সবসময় টায়ার প্রেশার একুরেট রাখার চেষ্টা করুন। এক্ষত্রে সামনে এবং পিছনে কত পিএস আই প্রেশার রাখতে হবে সেটি লেখা আছে আপনার বাইকের পিছনের চাকার আশে পাশেই । একটু চেস্টা করলেই খুজে পাবেন । সাধারনত সামনে ২৯ এবং পিছনে ৩৩ রাখাই উত্তম তবে যাদের ওজন একটু বেশি বা পিলিয়ন নিয়ে চলেন তারা সামনে সর্বোচ্চ ৩৫ এবং পিছনে ৪০ পিএস আই রাখতে পারেন ।।
# কখন চেক করবেনঃ
রাতে বা সকালে ঠাণ্ডা অবস্থায়। রাতে বা সকালে কেন? কারণ তাপ গ্যাসের চাপকে বাড়িয়ে তোলে তাই টায়ার গরম থাকার সময় সেগুলি পরীক্ষা করলে সঠিক প্রেশার সেট করা যায় না। সমস্ত টায়র নির্মাতারা ঠান্ডা টায়ারের জন্য প্রেশার সেট করে দেয়। গরম লাগছে কি না ঠান্ডা লাগছে বুঝতে টায়ারে হাত দিন।
# ভালো গেজঃ
টায়র প্রেশার এর যন্ত্রটির নাম হল Gauge। তাই একটি ভালো গেজ ব্যাবহার করুন টায়ার প্রেশার চেক করার জন্য। ও হা , সব সময় একটি গেজ দিয়েই চেক করবেন, অনেক সময় গেজের প্রেশারের তারতম্য থাকে।
আমার সাধারমত গাড়ির টায়ার সারে বা গাড়ি নিয়ে কাজ করে এই ধরনের দোকান থেকে টায়ার লিক সারি বা প্রেশার চেক করি। বাইক সার্ভিস করে সাথে টায়ার সারে এমন দোকান আমি খুব কম দেখেছি। এই সব দোকানের প্রেশার চেকার আর বাইকের জন্য নির্মিত চেকার এর মধ্যে তারতম্য পেয়েছি। তাই নিয়মিত টায়ার প্রেশার চেক করতে ভালো মানের বাইকের জন্য নির্মিত একটি গেজ কিনে নিতে পারেন।
# টায়ার নির্বাচনঃ আপনার চালানোর ধরনের উপর ভিত্তি করে টায়ার নির্বাচন করুন। বৃষ্টির বা ভেজা রাস্থায় চালানোর সময় টায়ার প্রেশার কিছুটা কম রাখতে পারেন। এতে ভালো গ্রিপ পাওয়া যায়।
# টায়ার জেলঃ টায়ার জেলের যেমন ভালো দিক আছে, তেমনি আছে খারাপ দিকও। সুতরাং সচেতনতার সাথে এটি ব্যাবহার করতে হবে। এবার আসুন জেনে নেই এর কিছু ভাল মন্দ দিক।
টায়ার জেল এর সুবিধা
- টিউবলেস টায়ার পাতলা হওয়াতে বাইকের পারফরমেন্স ভাল দেয়।
- টিউবলেস টায়ার মাইলেজ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে।
- টায়ার জেল অনেক দ্রুততম কার্যকরী ব্যবস্থা যা যে কোন পরিস্থিতিতে টায়ার পাংচার মেরামত করতে সক্ষম।
- টায়ারের ভেতরে প্রবেশ করানো অল্প সময়ের মধ্যে কাজ করতে শুরু করে এবং সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে দুই থেকে তিন মিনিট সময় লাগে।
টায়ার জেল এর অসুবিধা
- টায়ার জেল এর ব্যবহার স্থায়ী কোন সমাধান নয়, একটি নিরদিস্থ সময় পর টায়ার রিপ্লেসমেন্ট করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে।
- টায়ার জেলে ক্ষতিকারক রাসায়নিক ক্যেমিক্যাল থাকে যেটা টায়ার থেকে বের করা বরই দুরুহ কাজ।
- সঠিক ভাবে ব্যবহৃত না হলে এটি টায়ারের ক্ষতি করতে পারে।
- জেল ব্যাবহার করলে সঠিক টায়ার প্রেসার নির্ণয় করা যায় না।
একজন বাইকারের কাছে বাইক অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের এই ব্লগে আমরা নিয়মিত বাইকের প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে নিয়মিত বিস্তারিত আলোচনা করবো। কারণ আমরা চাই একজন বাইকার তার স্বপ্নের বাইকের সুবিধা অসুবিধে সম্পর্কে অবগত হোক আর প্রয়োজনীয় বা সময় উপযোগী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। মোটর বাইক বা মোটর সাইকেল সবার কাছেই একটি স্বপ্নের বহিঃপ্রকাশ নিঃসন্দেহে।