মটোজিপি ট্র্যাকের রেসারদের দেখি মোড় গুলো খুব দ্রুত গতিতে ঘুরতে গিয়ে বাইক নিয়ে প্রায় ৬০-৭০ ডিগ্রি কাত হয়ে যান। এই কর্নারিং দৃশ্য অত্যন্ত থ্রিলিং এবং আমরাও অনেকেই চাই রেসারদের মত করে কর্নারিং করতে।
রেসারদের কাছে থাকে উচ্চ গতিসম্পন্ন সুপারবাইক এবং তাদের বাইকের টায়ার গুলো বিশেষ ধরনের হয় যাতে কোনো প্যাটার্ন ব্লক থাকে না, টায়ারগুলো হয় অত্যন্ত সফট যার কারনে সর্বোচ্চ গ্রিপ পাওয়া যায়। ট্র্যাকটিও কিন্ত থাকে একদম ক্লিন।
তাছাড়া রেসারদের টার্গেট থাকে দ্রুততম সময়ে ল্যাপ কম্পলিট করার। তাই তারা এত হাই স্পিডে কর্নারিং করেন।
আরো পড়ুন
- মোডিফিকেশন উপকারী নাকি ঝুকিপূর্ণ?
- বাইকের ব্যাটারি অতি দ্রুত নষ্ট হবার কারণ ও প্রতিকার
- যে কারণে বাইকের ডিস্কে (ব্রেকে) সমস্যা হতে পারে?
কিন্ত আমরা যেহেতু ট্র্যাকে বাইক চালাই না, তাই আমাদেরকে কর্নারিং এর সময় অত্যন্ত সতর্ক থাকা উচিত নয়তো ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা।
আসুন জেনে নেই নিরাপদ কর্নারিং এর জন্য কোন কোন বিষয় জানা জরুরি এবং কি কি নিয়ম ফলো করলে আমাদের কর্নারিং হতে পারে আরো নিখুত, নিরাপদ।
- কার্যকরী কর্নারিং এর জন্য আপনাকে শিথিল ও বাঁকানো বাহু দিয়ে কিছুটা সামনের দিকে ঝুঁকতে হবে।
- কনুই হ্যান্ডেলবারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ অবস্থায় রাখার চেস্টা করবেন।
- হ্যান্ডেলবার হালকাভাবে আঁকড়ে ধরে রাখুন এবং আপনার ওজনকে সাপোর্ট করার জন্য সেগুলির উপর ঝুঁকে পড়বেন না - আপনাকে আপনার পা দিয়ে ট্যাঙ্কটিকে আলতোভাবে চেপে রাখবেন।
- সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে এমনভাবে যেন মোড়ের সবচেয়ে দুরবর্তি স্থানটি আপনি স্পষ্ট দেখতে পান।
- শার্প কর্নারগুলোতে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হবে।
আমাদের দেশের বেশির ভাগ রাস্তায় ওয়ান ওয়ে এবং সরু। অর্থাৎ একটা রাস্তা দিয়েই যানবাহন আসা যাওয়া দুটোই করে, রাস্তায় ডিভাইডার থাকে না তাই উচ্চ গতিতে কর্নারিং করা বেশ কঠিন।
এর সাথে প্রচুর ব্লাইন্ড কর্নার আছে যেগুলো মৃত্যুফাদের নামান্তর। ব্লাইন্ড কর্নার মানে হচ্ছে অন্ধবাক বা এমন মোড় যার একপাশ থেকে অন্যপাশে কিছুই দেখা যায় না।
এরকম জায়গায় মোড় ঘুরতে হলে অবশ্যই আগে থেকে গতি অনেক কমাতে হবে, কয়েকবার হর্ন দিতে হবে, রাতের বেলা হলে হেডলাইটের ডিপার দিতে হবে এবং ইন্ডিকেটর জ্বালিয়ে তারপর সঠিক সাইড দিয়ে বাক নিতে হবে।
আরো পড়ুন
- কিভাবে বুঝবেন বাইকের ক্লাচ প্লেট নষ্ট হয়েছে
- কিভাবে বাইকের টায়ারের স্থায়িত্ব বাড়াবেন?
- জেনে নিন গাড়ির নাম্বার প্লেট হারিয়ে গেলে কোথায় যাবেন আর কীভাবে পুনরায় তুলবেন
আরেকটা জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে কর্নারিং এর সময় ভুলেও থ্রটল মোচড়ানো যাবে না, সবচেয়ে ভালো হয় মোড় বুঝে উপযুক্ত গতিতে ইঞ্জিন ব্রেকের সাথে মোড় ঘুরে যেতে পারলে।
তবে গতি অল্প হলে ক্লাচ চেপেও মোড় ঘুরতে পারেন।
ডাউনহিলে নামার সময়ও কর্নারিং করতে হবে অত্যন্ত সাবধানে, অবশ্যই ইঞ্জিন ব্রেক এবং ম্যানুয়াল ব্রেকের সাথে।
সফট কম্পাউন্ডের টায়ার রাস্তায় বেশি গ্রিপ দেয়, তাই সফট টায়ারে কর্নারিং বেশি নিরাপদ।
সঠিক টায়ারপ্রেশার রাখতে হবে চাকায়।
প্রেশার কম-বেশি হলে কর্নারিং করতে গিয়ে বাইকের নিয়ন্ত্রন হারাতে পারেন।
তাছাড়া বাইকের সাসপেনশন, চাকার বিয়ারিং, চেইন এডজাস্টমেন্ট, বল রেসার, ব্যাক চেসিস বুশ, ড্রাম রাবার ইত্যাদি একদম পার্ফেক্ট কন্ডিশনে টিউন আপ করা থাকলেই আপনার কর্নারিং পার্ফমেন্স হবে আরো পার্ফেক্ট এবং কনফিডেন্ট।
ধন্যবাদ কিউরিয়াস বাইকারের সাথে থাকার জন্য।
আপনার প্রশ্ন ও জিজ্ঞাসা কমেন্টে লিখে জানান।
লেখাঃ ইকবাল আবদুল্লাহ রাজ
এডমিন # কিউরিয়াস বাইকার ডট কম।