ভালো অকটেন চেনার উপায়

মে 20, 2023

ভালো অকটেন চেনার উপায়
ভালো অকটেন অথবা যেকোনো বিশুদ্ধ ফুয়েল বাইকের ইঞ্জিনের জন্য খুবই জরুরি। বিশুদ্ধ ফুয়েল ইঞ্জিনের পারফর্মেন্স দীর্ঘস্থায়ী করে, তাছাড়াও বেশি মাইলেজ পেতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কোন ধরণের জ্বালানি মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের জন্য ভালো।

ভালো অকটেন অথবা যেকোনো বিশুদ্ধ ফুয়েল বাইকের ইঞ্জিনের জন্য খুবই জরুরি। বিশুদ্ধ ফুয়েল ইঞ্জিনের পারফর্মেন্স দীর্ঘস্থায়ী করে, তাছাড়াও বেশি মাইলেজ পেতে অনেক কার্যকরী ভূমিকা রাখে। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা কোন ধরণের জ্বালানি মোটরসাইকেলের ইঞ্জিনের জন্য ভালো। আমাদের দেশে প্রায় সব বাইকের জ্বালানি হিসেবে অকটেন ব্যবহার হয়। এবং আমরা অনেকেই জানিনা, জ্বালানি হিসেবে আমরা যে অকটেন ব্যবহার করি, তা আসলে কতটুকু পিওর। কারণ, অনেক অসৎ ব্যবসায়ী অকটেনের সাথে ভেজাল মিশিয়ে বিক্রি করেন। এই ব্লগে বিস্তারিত ভাবে অকটেন চেনার উপায় এবং বাইকের জ্বালানি হিসেবে অকটেন কেন উপযোগী এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

## অকটেন কি?

আমরা অনেকেই মনে করি অকটেন এবং পেট্রোল দুটি আলাদা ধরণের জ্বালানি। এটি ভুল ধারণা। এই দুটোই একই ধরণের জ্বালানি এবং এদের কেমিকাল কম্পোজিশনও একই (C8H18)। বিশ্বব্যাপী এই দুটো জ্বালানি গ্যাসোলিন নাম পরিচিত। ইন্টারন্যাশনালি এই জ্বালানি আলাদা কোয়ালিটি নাম্বার দিয়ে প্রকাশ করা হয়। রিসার্চ অকটেন নাম্বার (Research Octane Number) বা রন (RON) দিয়ে এদের কোয়ালিটি পরিমাপ করা হয়। যেমন, অকটেনের RON ৯১ এবং পেট্রোলের RON ৮৭।

## আরো পড়তে পারেন

রিসার্চ অকটেন নাম্বার ৮৬ এর বেশি হলে সেটি ইঞ্জিনের জ্বালানি হিসেবে উপযুক্ত বলে ধরে নেয়া হয়। ইঞ্জিনের বেশ কিছু বিষয় বিবেচনা করে রিসার্চ অকটেন নাম্বার নির্ধারন করা হয়। বেসিক বিষয় গুলো হল – ইঞ্জিনের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা, বুস্টিং, বুস্টিং ক্যাপাসিটি ইত্যাদি। উন্নত দেশের পাম্পগুলোতে পেট্রোল বা অকটেন এসব মেনশন করা থাকে না, রিসার্চ অক্টেন নাম্বার বা RON নাম্বার মেনশন করা থাকে। ব্যবহারকারীরা তাদের বাইকের ইঞ্জিনের ক্ষমতা অনুযায়ী RON নাম্বার ব্যবহার করতে পারেন। আমাদের দেশের পাম্প গুলোতে এই সিস্টেম না থাকার কারণে আমরা এই গ্যাসোলিন জ্বালানি আলাদা করতে পারিনা, এবং এগুলোকে পেট্রোল ও অকটেন হিসেবে চিনি। একারণেই আমরা ভেজাল অকটেন ধরতে পারি না। আমাদের দেশে যেসব গ্যাসোলিন বা অকটেনের রিসার্চ নাম্বার ৮৬, সেগুলো পেট্রোল নামে পরিচিত।

## আরো পড়তে পারেন

ভালো অকটেন চেনার উপায়**## ** ইন্টান্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ভালো মানের গ্যাসোলিন স্ট্যান্ডার্ড শুরু হয় অকটেন নাম্বার ৮৬ (রন ৮৬) দিয়ে, এই স্ট্যান্ডার্ড ১০০ পর্যন্তও হতে পারে। এখানে অকটেন নাম্বার বিভিন্ন হতে পারে, কিন্তু কেমিক্যালি একই পদার্থ – গ্যাসোলিন। এই অকটেন নাম্বার বাড়ে বা কমে কিভাবে, এবং এই বাড়া – কমার সাথে, স্ট্যান্ডার্ড কিভাবে নির্ধারণ হয়? এবং এটি ইঞ্জিনে কিভাবে উপকার করে বা ক্ষতির কারণ হতে পারে?

ভালো অকটেন চেনার উপায় আছে, কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট এবং কোয়ালিটি আছে যা দেখে অনেকটাই বোঝা যায় অকটেনের স্ট্যান্ডার্ড কেমন।

     (১) কালার বা রং যাচাই করুন –

ভালো অকটেন চিনতে পারবেন এর কালার দেখে। স্ট্যান্ডার্ড মানের অকটেনের রং হয় কিছুটা গোলাপি (লাইট পিঙ্ক)। পেট্রোল দেখতে হয় কমলা রঙের (অরেঞ্জ কালার)। অনেক অসাধু ব্যবসায়ী অকটেনে কেরোসিন মেশান, রং প্রায় একই রকম থাকে, তাই ভালো করে না দেখলে বুঝতে পারবেন না।

     (২) স্মেল বা ঘ্রাণ যাচাই করুন –

স্ট্যান্ডার্ড অকটেনে হালকা ঝাঁজয়ুক্ত ঘ্রাণ থাকে, অনেকটা স্প্রিটের মতো। তবে তীব্র ঝাঁজয়ুক্ত মনে হলে বুঝবেন এতে কিছু মেশানো হয়েছে।

     (৩) ভালো মানের অকটেন বাতাসে উড়ে যায় –

যদি স্ট্যান্ডার্ড মানের অকটেন হয়, তাহলে, খোলা অবস্থায় রাখলে, কিছুক্ষন পর বাতাসে মিশে যাবে। পরীক্ষা করার জন্য কয়েক মিলিঃ অকটেন হাতে ঘষুন, কিছুক্ষন পর দেখবেন, হাতের যাই জায়গায় অকটেন লাগিয়েছিলেন, সেই জায়গা শুকিয়ে গেছে। আর অকটেনে ভেজাল মিশ্রিত থাকলে, হাতের সেই জায়গা তেলতেলে হয়ে থাকবে।

এই পরীক্ষাটি আপনি আরো একভাবে করতে পারেন। কয়েক ফোঁটা অকটেন কিছুটা উপর থেকে নিচে ফেলুন। ভালো মানের অকটেন হলে মাটিতে পরার আগেই বাতাসে মিশে যাবে। ভেজাল বা কেরোসিন মিশ্রিত অকটেন হলে মাটিতে পরে যাবে।

**কেন বাইকের জ্বালানি হিসেবে অকটেন উপযোগী? **

সাধারণত ১১০ সিসির কম ইঞ্জিন পাওয়ারের মোটরসাইকেলে পেট্রোল ব্যবহার করা হয়। কিন্তু ১২৫ সিসি বা ১৫০ সিসির বাইকের ইঞ্জিন পাওয়ারফুল হওয়ায় এসব বাইক গুলোতে অকটেন ব্যবহারে উৎসাহিত করা হয়। হাইয়ার সিসির বাইকে ভালো কোয়ালিটির পাওয়ারফুল ৪-স্ট্রোক ইঞ্জিন থাকে, এবং এসব ইঞ্জিনের কম্প্রেশন রেশিও বেশি থাকে। তাই বাইকের ইঞ্জিন মসৃন ভাবে কাজ করার জন্য অকটেন দরকার হয়। ভালো অকটেন ফুয়েলের দহন ক্ষমতা বা কম্বুশন ক্যাপাসিটি বাড়ায়।

তথ্য সুত্রঃ বাইক গাইড